You are currently viewing জিপসি: পথে পথে ঘুরে বেড়ানো তাদের নেশা

জিপসি: পথে পথে ঘুরে বেড়ানো তাদের নেশা

জিপসি শব্দের মানে হলো নাম বা ঠিকানাহীন রহস্যময় লোক বা যাযাবর। জিপসিরা মূলত ইউরোপ ও আমেরিকার এক প্রকার যাযাবর জাতি। রোমানি বা রোমাদেরকে জিপসি বলা হয়। রোমানিরা মূলত ভারতীয়-আর্য বংশোদ্ভূত। জিপসিরা নিজেদেরকে বলে ‘রোম’ যার অর্থ মানুষ। কিংবা ‘রোমানিচল’ যার অর্থ মানুষের সন্তান।

মূলত খ্রিস্টাব্দ ৪৩০ এ পারস্যের রাজা পঞ্চম বারহামকে “জাট” গোত্র থেকে ১২ হাজার শিল্পীকে উপহার দেওয়া হয় তৎকালীন কোন এক ভারতীয় রাজা থেকে। পরে সিরিয়াতে বাইজেন্টাইন দের হাতে তারা সবাই ধরা পড়েন এবং তাদের সেখানে হত্যা-খুন লুট করা হয়। পরে তারা পালিয়ে যান ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। সেখান থেকেই মূলত তাদের ইতিহাস শুরু হয়।

জিপসিদের মাইগ্রেশন ম্যাপ Image credit: Pintarest

আনুমানিক ৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ভারতে আরব, ইউরোপীয়, মঙ্গোলীয়, তুর্কীস আক্রমণ শুরু হলে তখন থেকে রোমানিরা ভারত ছাড়তে থাকে। ইউরোপে গিয়ে ছোটখাট কাজ করা শুরু করেন। এবং সেখানে তাদের দাস হিসেবে ক্রয়-বিক্রয় করা হত। তারা সেখানে অবর্ণনীয় নির্যাতন নিপীড়ন এর শিকার হন। অনেকেই আবার চুরি ডাকাতি রাহাজানির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যান। তাদের গায়ের রং সাদা না হওয়ার কারণে তাদের নিচু শ্রেণীর লোক হিসেবে গণ্য করা হতো। তাদের যেখানে পাওয়া যেত হত্যা করা হতো কিংবা দাস হিসেবে আটক করা হতো। তাই তারা জীবন ও জীবিকার তাগিদে সর্বদায় এখান থেকে ওখানে ছুটে বেড়িয়েছেন।

জিপসি উপকথা

জিপসি উপকথায় প্রচলিত আছে রোমান সৈন্যরা যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করার জন্য এক মিস্ত্রি কে ৪ টি পেরেক তৈরির দায়িত্ব দেন। কিন্তু চতুর্থটি সম্পন্ন হওয়ার আগেই তারা তিনটি পেরেক নিয়ে চলে যায় আর বাকি একটি পেরেক সন্ধ্যায় নিয়ে যাবে এই কথা দেয়।

মিস্ত্রি পেরেক টি তৈরি শেষে গরম পেরেকে ঠান্ডা পানি ঢেলে দিলো। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার পেরেক ঠান্ডা হলো না বরং আরো টকটকে লাল হয়ে উঠলো। সাথে কি প্রচন্ড তাপ! মিস্ত্রি ভয়ে দৌড়ে পালাতে শুরু করলো, সে দৌড়ে একটি কুয়োর সামনে এসে দাড়ালো। দেখলো তার চারপাশ আলোয় আলোকিত! একি সেই পেরেক যে তার সামনে দাড়িয়ে আছে! আর সেই আলো সেই পেরেক থেকেই বের হচ্ছে।

মিস্ত্রি পাগলের মতো কুয়ো থেকে জল তুলে পেরেকে ঢালতে লাগলো কিন্তু পেরেক আর ঠান্ডা হচ্ছে না। পানি ঢালতে ঢালতে মিস্ত্রি পুরো কুয়োর পানি খালি করে ফেললো তবুও সেই পেরেক ঠান্ডা হলো না। পরে মিস্ত্রি সেই পেরেক কে মরুভূমিতে বালু চাপা দিয়ে পালালো।

ক্রুশবিদ্ধ যীশু Image credit: church

জিপসিরা বলে তারা সেই পালানো মিস্ত্রির বংশধর। সেই একটি পেরেকের ভয়েই তারা ছুটে চলেছে দেশ থেকে দেশান্তরে।

যীশুকে ৩ পেরেকে ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা প্রথম দেখা যায় বাইজানন্টাইন শিল্পে সেটাি দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতাব্দীতে সেই হিসেবে এই উপকথা কে বানোয়াট ই বলা চলে।

জিপসিদের আদিনিবাস কোথায় তা নিয়ে বিভিন্ন গুঞ্জন থাকলেও তারা যে মূলত ভারতীয় যাযাবর তা অনেকাংশেই প্রমানিত সত্য।

ইউরোপে জিপসি

জিপসিরা ইউরোপে আসে চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতাব্দীতে। ইউরোপীয়রা তাদের মনে করতো ইজিপশিয়ান অর্থাৎ মিশরীয় যাযাবর। যেহেতু তাদের পোশাকআশাক ও চালচলনে মিশরীয়দের সাথে মিল রয়েছে তাই এমনটা ভেবে নিয়েছে, আর জিপসিরাও তাদের সাথে সম্মতিসূচক মাথা নারিয়েছে।

ইউরোপে জিপসি নারীরা হাত দেখা, জরিবটি দিয়ে ঔষধ পথ্য বানিয়ে বাজারে বিক্রি করা, গান করা কিংবা সার্কাস দেখিয়ে নিজেদের রোজগার করতো। আর পুরুষরা সাধারণত বিভিন্ন কাজের কারিগর হতেন।

জিপসি নারী ও পুরুষ Image Courtesy : Quora

তবে কালো চামড়া হবার কারণে ইউরোপে রোমানিদের (জিপসিদের) সবসময় হেয় করা হয়। ধারণা করা হয় তারা খুবই চতুর, চোর এবং রহস্যময় প্রকৃতির। জিপসিরা ভবিষ্যৎ বলতে পারে আর নতুন কোন জায়গায় চলে যাবার আগে তারা অনেক কিছু চুরি করে নিয়ে যায় বলেও মনে করা হয়।

আরো পড়ুন:  হ্যাট ট্যাক্স: ১৮শ শতকের ইংল্যান্ডে টুপির জন্য কর ও মৃত্যুদণ্ড

জিপসিরা সবসময় ভ্রমণের উপরে থাকে। এরা কখনো এক জায়গায় থিতু হয় না। এদের কিছু ক্যারাভ্যান, ওয়াগন এবং আরভি (রিক্রিয়েশনাল ভিহিকল) রয়েছে যেগুলোতে তারা বসবাস করে এবং এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যায়। এগুলোই জিপসিদের ঘরবাড়ি এবং যানবাহন। এগুলোকেই তারা ভেতরে পরিবর্তন করে বসবাসের উপযোগী করে নিয়েছে। তাদের এরকম স্থানান্তরিত হবার কারণে এরা স্কুলে যেতে পারে না এবং একারণে এদের শিক্ষার হারও কম।

নৃত্যরত জিপসি নারী ও তার সাথে ২ জিপসি শিশু Image Credit: Quora

মধ্যযুগের ইউরোপে জিপসিরা ইউরোপীয়দের দ্বারা প্রচুর নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। মধ্যযুগের প্লেগ মহামারীর কারন হিসেবে ইউরোপীয়রা ইহুদি ও জিপসীদের কে দায়ি করতো। এজন্য তারা হাজার হাজার জিপসি নিধন করেছে। এছাড়াও জিপসীদের অদ্ভুত জীবনযাপনের জন্য জিপসি নারীদের ডাঈনী অভিযোগে পুড়িয়ে ও হত্যা করেছে। এছাড়াও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের নাৎসি বাহিনীর চক্ষুশূল ছিল ইহুদিদের পরেই জিপসিরা, আনুমানিক ৪-৫ লক্ষ জিপসি হলোকাস্টের শিকার হয়েছিল।

জার্মানিদের হলোকাস্টে জিপসি Image credit: Eternal Ecoes

জিপসিদের একেক দেশে এক নাম। বেলুচিস্তান, ইরাকে ওদের নাম ‘লুরি’। পারস্যে ‘কাকরি’ ও ‘জাঙ্গি’, আফগানিস্তানে ‘কাউলি’, তুরস্কে ও সিরিয়ায় ‘চিনঘানিজ’ কিংবা ‘চিনগানেস’ গ্রীসে তার পরিচিত ‘কাটসিভেলই’, সিগানোস কিংবা অ্যাটসিনকানোই।
ষোড়শ শতকে ফ্রান্সে তাদের নাম ছিল ‘রাবোঁয়া’ যার অর্থ ‘শয়তান স্বয়ং’। ফ্রান্সে জিপসি বলতে আরো অনেক নামে বোঝানো হতো যেমন বিউরদিনদি, কাম্প-ভোলান্ত, বোহেমিয়ান ইত্যাদি।

ইংরেজিতে সাহিত্যে শেক্সপীয়ার ও স্পেনসার দুজনই জিপসীদেরকে নিজেদের রচনায় ব্যবহার করেছেন। ফরাসী লেখক ভিক্তর হুগোর লেখাতেও রোমানিদের কথা আছে। হুগো ওদের বলেছেন ঈজিপ্টাইন বা মিশরী।

লোক ঠকানোতে জিপসীদের অনেক কুখ্যাতি আছে। একবার একজন লেখক লিখেছেনঃ- কয়েকটি মেয়ে দোকানে গিয়ে মাসে কিনল। বেশ পছন্দসই মাসে। অনেক দাম। দেখে আমি ভাবছি, এত পয়সা আছে ওদের? মাংস একটা পাত্রে রাখা হল। দোকানির বউ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মেয়েদের দিকে। বোধহয় সে হাত সাফাইয়ে জিপসীদের দক্ষতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। পয়সা দিতে গিয়ে একটি মেয়ে বলল — এই যা, টাকার খলিটা তো আনতে ভুলে গেছি। আচ্ছা, এই রইল তোমার মাংস, আমি এক ছুটে পয়সা নিয়ে আসছি। অন্যরাও তার পিছু পিছু ছুটল। কিন্তু তারা আর ফেরে না। দোকানির বউ বিরক্ত হয়ে বলল – নাও, এবার মাংসটা তুলে রাখ। দোকানি পাত্রের ঢাকনা খুলে দেখে তার তলা নেই । সে একদিকে যখন মাংস ওজন করে। দিয়েছে, অন্যদিকে মাংস চালান হয়ে গেছে ঠিক অন্য কোনও গলিতে।

হাঙ্গেরিতেও জিপসীর বিরুদ্ধে নানা চাঞ্চল্যকর অভিযোগ শোনা গেল। ওরা জবরদস্তি করে ভদ্রমেয়েদের ইজ্জত নাশ করছে , ওরা শিশু চুরি করছে, ওরা— নরখাদক। বোহেমিয়ার চুরি বা প্রতারণার অভিযোগ প্রথমে জিপসীর বাঁ কান কাটা যেত, দ্বিতীয়বার নালিশ উঠলে – ডান কান, তৃতীয় বারে কাটা পড়ত মাথা।

১৭৮২ সনে হাঙ্গেরিতে একচল্লিশজন মেয়ে এবং পুরুষকে ফাঁসি দেওয়া হয় নরমাংস খাওয়ার অপরাধে। ওরা নাকি পঁয়তাল্লিশ জন মানুষকে খেয়ে ফেলেছে। বলা নিষ্প্রয়োজন তখন এসব অভিযোগে তখন প্রমাণের প্রশ্ন উঠত না। পরবর্তীতে দেখা গেছে তারা সকলেই ছিল নির্দোষ।

জিপসিদের সামাজ

জিপসি সমাজে বয়স্করা সবচেয়ে সম্মানিত। জিপসিদের দলের দলপতি সেখানকার প্রধান তিনিই সকল সমস্যা মোকাবেলা করার মূল সিদ্ধান্ত নেন। জিপসিদের নিজেদের মধ্যে কোনো ঝামেলা কিংবা অপরাধ সংঘটিত হলে তার বিচার দলপতিই করেন, বাহিরের পুলিশ আইনসের সাহায্য জিপসি রা নেয় না।

জিপসিদের মধ্যে বাল্য বিবাহের মাত্রা প্রচুর। সাধারণত ছেলেমেয়েদের ১৩ বছর এর মধ্যেই বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের ক্ষেত্রে জিপসিরা ভারতীয় সমাজের মতোই গোঁড়া। তারা নিজেদের গোষ্ঠীর মধ্যেই ছেলে মেয়েদের বিবাহ দেয়।

বিবাহের পর কোনো জিপসি মেয়ে মা হতে না পারলে তাকে জিপসি সমাজের মানুষের দ্বারা প্রচুর ভোগান্তির শিকার হতে হয়। মেয়ে অলক্ষুণে তাই সন্তান হচ্ছে না, এমন কুসংস্কার রয়েছে জিপসিদের মধ্যে। আর তাই সন্তান লাভের আশায় জিপসি নারীরা বিভিন্ন ব্রত পালন করে। বিচিত্র সে সব আচার অনুষ্ঠান। আর একবার যদি মাতৃত্বের লক্ষণ প্রকাশ পায়, তখনও আবার হরেক অনুষ্ঠান। স্বামী থেকে শুরু করে দলের সবাই তার জন্য রীতিমতো ব্যস্ত সমস্ত। অনেক সময় তার চোখের সামনে দেখতে সুন্দর এমন কারও ছবি ঝুলিয়ে রাখা হয়। ওদের ধারণা, এ সময়ে মনের মধ্যে সে যেমন মূর্তি ধ্যান করবে , সেরকম সন্তানই ভূমিষ্ঠ হবে।

আরো পড়ুন:  রাজা অষ্টম হেনরি: প্রেম, রাজনীতি ও ষড়যন্ত্রের এক বিচিত্র জীবন

জিপসীরা সুযোগ পেলেই গৃহস্থের ছেলেময়ে চুরি করে, এটা অপবাদ মাত্র। জিপসীর আস্তানায় শিশুর মেলা। সবই নিজেদেরই সন্তান। ঘরে যাদের এত ছেলেপুলে তারা অন্যের ছেলে চুরি করতে যাবে কোন দুঃখে। জিপসীদের এ দায় থেকে মুক্তি দেওয়াই ভালো।

স্বামী – স্ত্রীর সম্পর্কে জিপসী কোনও ফাঁকি সহ্য করতে রাজি নয়। একে অন্যের প্রতি জীবনভর অনুরক্ত এবং অনুগত থাকবে, এটা ধরে নেওয়াই নিয়ম। যদি তার ব্যতিক্রম ঘটে, জিপসী পুরুষ যদি অন্য কোনও নারীর প্রতি কোনও দুর্বলতা প্রকাশ করে, কিংবা স্ত্রীকে যদৃচ্ছভাবে ব্যবহার করতে চায়, তবে ই অনায়াসে তাকে পরিত্যাগ করতে পারে।

অন্যদিকে স্ত্রী যদি বিশ্বাসের মর্যাদা না রাখে , যদি সে ভিন্ন পুরুষের সঙ্গে গোপনে ভালোবাসা লেনদেন করে, তবে তার জন্য প্রাপ্য কঠোর সাজা। তার দাঁত ভেঙে দেওয়া হতে পারে, নাক কিংবা কান কেটে দেওয়া যেতে পারে, অথবা অন্য কোনও শাস্তি ধার্য হতে পারে। এমনকি মাথা মুড়িয়ে দেওয়ার মতো শাস্তি ও রয়েছে। জিপসী মেয়ের কাছে সেটা প্রায় মৃত্যুদণ্ডের শামিল। যে মেয়ের মাথায় চুল নেই, তার জীবনই তো বৃথা।

ফলে কোনও কোনও মেয়ে ছুটে যায় পুলিশের কাছে। গিয়ে ইনিয়ে – বিনিয়ে বলে আমি চুরি করেছি , অমাকে সাজা দাও। আমাকে জেলে দাও। পরে মেয়েটি আসলে সমাজের ব্যঙ্গ – বিদ্রূপ আর ঘৃণা থেকে পালাতে চেয়েছিল। দেওয়ালের আড়ালে আত্মগোপন করে মাথায় আবার চুল ফিরিয়ে আনাই ছিল জানা যায়, তার বাসনা!

জিপসিদের ধর্ম

জিপসিদের নির্দিষ্ট কোনো ধর্ম নেই, তারা যে অঞ্চলে যায় সেই অঞ্চলের ধর্মই চর্চা করে। ইউরোপে যেসব জিপসি রয়েছে তাদের প্রায় সকলেই খ্রিস্টান কিন্তু সেই সাথে তারা অনেক দেব-দেবীর আরাধনা ও করে, যা খ্রীস্টধর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট না। বলা চলে জিপসিদের কোনো ধর্ম নেই, বরং ঘুরেবেড়ানোই তাদের ধর্ম এটা বলাই অধিক শ্রেয়।


জিপসিদের সংস্কৃতি

জিপসিদের সংস্কৃতি বা কালচার অনেক বেশি বর্ভাঢ্য। তাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, গান, কবিতা রয়েছে। তারা অত্যন্ত বিনোদন প্রিয় মানুষ। তারা সর্বদায় সঙ্গীতসন্ধ্যা আয়োজন করে সেখানে তাদের ঐতিহ্যবাহী ক্লাসিকাল গান ও অন্যান্য গান পরিবেশন করা হয়। তাদের স্বভাবজাত গুণ ও রয়েছে, তারা কথায় কথায় গানের পদ তৈরি করে তাতে সুর দিয়ে আপনাকে গেয়ে শুনিয়ে ও দিতে পারবে।

বর্তমানে পুরো পৃথিবীতে প্রায় ১.৫ কোটি জিপসি বিভিন্ন দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তবে জিপসিদের বেশিরভাগই ইউরোপ ও আমেরিকায় বাস। ইউরোপে জিপসি আছে প্রায় ১০ মিলিয়ন, তাদের বেশিরভাগই আছে ফ্রান্স, স্পেন ও ইংল্যান্ডে। আর ধারনা করা হয় আমেরিকায় জিপসি আছে প্রায় ২ মিলিয়ন।

জিপসিরা সবসময় ভ্রমণ করায় তাদের সন্তানরা লেখাপড়ার সুযোগ খুব একটা পায় না। বিভিন্ন দেশের সরকার তাদের চেষ্টা করছেন কোনো স্থায়ী করে জায়গায় স্থিতিশীল করার। তবে এখন বহু জিপসী এই ভবঘুরে জীবন থেকে সরে দাড়িয়ে সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপনের চেষ্টা করছে। যেহেতু ভ্রমণ তাদের মজ্জায় তাই মাঝেমধ্যেই ভদ্রসমাজের জিপসীরা ভ্রমণ করতে বিভিন্ন দেশে চলে যান কিছুদিনের জন্য।

জিপসিরা এখনো বিভিন্ন রকমের হয়রানির শিকার। তবে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জিপসিরা সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে তাদের অবস্থা সবচেয়ে ভালো।

Mehadi Bhuiyan

Mehadi Bhuiyan holds a B.A. in English Literature. He has a long-standing interest in writing, with a focus on historical and mythological themes. His work often explores the cultural and literary connections between past and present. Outside of writing, he enjoys reading across genres and is passionate about music and singing.

Leave a Reply