You are currently viewing দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স: উপন্যাসের আড়ালে মাস্কেটিয়ার্সদের বাস্তব জীবন

দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স: উপন্যাসের আড়ালে মাস্কেটিয়ার্সদের বাস্তব জীবন

বিখ্যাত ফরাসি ঔপন্যাসিক আলেকজান্ডার দ্যুমার বিখ্যাত এডভেঞ্চার উপন্যাস ‘দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’। ১৮৪৪ সালে আলেকজান্ডার দ্যুমা তার সহযোগী আরেক লেখক অগাস্ট ম্যাক কে নিয়ে ‘দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’ শিরোনামে  Le Siècle নামক একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত করতে থাকে। এই উপন্যাসের মাধ্যমে আলেকজান্ডার দুমা তার পাঠকদের ১৭ শতকের ফ্রান্সের কিছু মাস্কেটিয়ার্সদের এডভেঞ্চারময় জীবনে নিয়ে যান।  

গল্পটি পত্রিকায় প্রতি সপ্তাহে ১ টি অধ্যায় বা অনুচ্ছেদ আকারে প্রকাশিত হতো। যেহেতু সেসময় সাধারণ মানুষের পক্ষে একটা গোটা বইয়ের দাম বহন করার সক্ষমতা ছিলো কম, তাই তারা দৈনিক পত্রিকার প্রতি এতোটাই ঝুঁকে পড়ে যে  Le Siècle পত্রিকা কেনার জন্য সংবাদপত্রের দোকানগুলোতে দীর্ঘ লাইন লেগে থাকতো।

ফরাসি ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার আলেকজান্ডার দ্যুমা Image: wikipedia

দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স উপন্যাসটি ১৭ শতকের ফ্রান্সের প্রেক্ষাপটে রচিত। উপন্যাসের শুরু হয় ফ্রান্সের গ্যাসকনের ডার্টানিয়ান নামক এক যুবক ছেলেকে দিয়ে। ডার্টানিয়ান গ্যাসকন ছেড়ে প্যারিসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তার জীবনের উদ্দেশ্য সে রাজার রক্ষীবাহিনী মাস্কেটিয়ার্সের দলে যোগ দিয়ে নিজের জীবনের ক্যারিয়ার গড়বে। আর প্যারিসে এসেই বিভিন্ন ঘটনাবহুল দৃশ্যপটের মাধ্যমে তার বন্ধুত্ব হয় ফ্রান্সের রাজা লুই ত্রয়োদশ এর তিন অনুগত মাস্কেটিয়ার অ্যাথোস, পোর্থোস এবং আরামিসের সাথে।

এই চার মাস্কেটিয়ার্স একসাথে অনেক এডভেঞ্চারময় ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন। রাজা লুই ত্রয়োদশের রাণী অ্যান-অস্ট্রিয়ার সম্মান বাঁচাতে মন্ত্রী ও তার সহযোগীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বেঁচে গিয়েছেন। 

কিন্তু এই উপন্যাসের প্লট ও চরিত্রগুলো কিন্তু আলেকজান্ডার দ্যুমা ১৭ শতকের ফ্রান্সের বাস্তব জীবন থেকেই নিয়েছিলেন। আজ আপনার উপন্যাসের নায়কদের বাস্তব জীবন সম্পর্কে পরিচয় করিয়ে দেবো এই লেখার মাধ্যমে।

মাস্কেটিয়ার্সদের উৎপত্তি

থ্রি মাস্কেটিয়ার্সদের নায়কদের সম্পর্কে জানার আগে আমাদের মাস্কেটিয়ার্স সম্পর্কে জানা উচিত। মাস্কেটিয়ারদের উৎপত্তি হয় ১৬ শতকের গোঁড়ার দিকে, যখন রাজা ষষ্ঠ হেনরি একটি ছোট অশ্বারোহী বাহিনী তৈরি করেছিলেন। মাস্কেটিয়ার্স বাহিনী আর্কেবাস নাম এক ধরনের লম্বা বন্দুক দিয়ে সজ্জিত থাকতো। তারা তাদের সঠিন নিশানায় লক্ষভেদের জন্য পুরো রাজ্য জুড়ে বিখ্যাত ছিলেন।

একজন অশ্বারোহী মাস্কেটিয়ার Image : Wikipedia

১৬১৫ সালে ফ্রান্সের রাজা লুই ত্রয়োদশ মাস্কেটিয়ার্সদের কাজকর্ম ও সাজসজ্জায় বিশেষ পরিবর্তন আনেন। তিনি তার নিরাপত্তার জন্য এই বিশেষ বাহিনীর ব্যবহার শুরু করেন।

শুরু থেকেই, মাস্কেটিয়ার্সরা ছিলো একটি অভিজাত রেজিমেন্ট। মাস্কেটিয়ার্স দলে প্রায় সব নিয়োগকারীই ছিলো আভিজাত বংশের মানুষজন, যদিও সামরিক দক্ষতাই ছিল প্রধান। মূল মাস্কেটিয়ার্স দলে যোগ দেওয়ার আগে তাদের ট্রেনিং দেওয়ানো হতো। তবে সদ্য যোগ দেওয়া সকল মাস্কেটিয়ার্সরা ছিলো বয়সে তরুন। তাদের সকলের বয়সই ১৬ থেকে ১৮ বছরের মাঝামাঝি।

মাস্কেটিয়ার্সরা অশ্ব,তলোয়ার ও আগ্নেয়াস্ত্র চালানোতে বেশি দক্ষ ছিলো। ফ্রান্সে যখন যুদ্ধ চলতো না তারা রাজা সহচারী হিসেবে যুক্ত থাকতো। রাজার বিনোদন বা মনোরঞ্জনের দায়িত্ব ছিলো তাদেরই হাতে। আবার দেশে যুদ্ধ লাগলে রাজার সঙ্গে তারা রাজার সঙ্গে যুদ্ধে সম্মুখভাগে কাজ করতো। এছাড়াও তারা রাজার দরজায় সেন্ট্রি হিসেবেও কাজ করতো।

বাস্তবে উপন্যাসের চরিত্র ডার্টানিয়ান

বাস্তবে ডার্টানিয়ানের নাম চার্লস ডি ব্যাটজ দে ক্যাস্টেলমোর। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৬১৩-১৫ সালের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের লুপিয়াকের কাছের শ্যাটো কাস্টেলমোরে। তার পরিবার ছিলো দরিদ্র আর তিনি ছিলেন সেই পরিবারে ছোট ছেলে। তিনি খুবই কম বয়সে ফ্রান্সের একটি অভিজাত রেজিমেন্টে যোগ দেন। তিনি ১৬৩৫ সালে ফ্রাঙ্কোয়েস ডি গুইলনের অধীনে দায়িত্ব পালন করেন। তার মায়ের পারিবারিক পদবির নাম ছিলো ডার্টানিয়ান, উপন্যাসে আলেকজান্ডার দ্যুমা তাকে আমাদের সামনে এই নামেই পরিচয় করিয়েছেন। 

আরো পড়ুন:  দ্য আউটসাইডার : নির্লিপ্ততা, অর্থহীনতা ও বৈরাগ্যপূর্ণ অস্তিত্বের প্রতিচ্ছবি

ডার্টানিয়ান ১৬৪০ এর দশকে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। ১৬৪১ সালে তিনি ইংল্যান্ডে একটি মিশনে গিয়েছিলেন আর ফিরে আসেন যখন ফ্রান্সের রাজা লুই ত্রয়োদশ পরলোকগমন করেন। ডার্টানিয়ান ১৬৪৪ সালে মাস্কেটিয়ার্স দলে যোগ দেন। মাস্কেটিয়ার্সের রেজিমেন্ট ভেঙে গেলে তিনি মন্ত্রী কার্ডিনাল মাজারিনের সাথে কাজ শুরু করেন। এ সময় তিনি বেশ কয়েকটি গোপন মিশন পরিচালনা করেন। তবে ডার্টানিয়ান সবচেয়ে বেশি কুখ্যাত দূর্নীতিবাজ অর্থমন্ত্রী নিকোলা ফুকে কে গ্রেফতার করার জন্য। 

চার্লস ডি ব্যাটজ দে ক্যাস্টেলমোর স্ট্যাচু যিনি পাঠকদের কাছে ডার্টানিয়ান নামে পরিচিত Image: Dreamstime

ডার্টানিয়ান একসময় রাজ পরিবারের বিশেষ অংশ হয়ে উঠেন। তিনি রাজার হরিণ শিকারী দলের অধিনায়কের দায়িত্ব নেন। রাজা লুই ত্রয়োদশের পুত্র রাজা লুই চতুর্দশের ভ্রমণের সময় সবসময় রাজার সঙ্গেই থাকতেন।

১৬৫৯ সালে ডার্টানিয়ান শার্লট অ্যান ডি চ্যানেলেসি নামের এক বিধবা নারীকে বিয়ে করেন, যার সাথে আগের স্বামীর ২ জন পুত্র সন্তানও ছিলো। কিন্তু ১৬৬৫ সালেই তাদের এই বিবাহ ভেঙে যায়।

সাংসারিক হতে না পারলেও তিনি ছিলেন একজন সফল সৈনিক। ১৬৫৬ সালে তিনি গার্ডস দলের ক্যাপ্টেন হন। এর দুই বছর পর ১৬৫৮ সালে আবারো পুনরায় গঠিত হওয়া মাস্কেটিয়ার্স দলের সাব-লেফটেন্যান্ট হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৬৬৭ সালে তিনি সেই মাস্কেটিয়ার্স ব্রিগেডিয়ার হন। এছাড়াও তিনি সাময়িক সময়ের জন্য ফ্রান্সের লীলের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ডার্টানিয়ান ১৬৭৩ সালের ২৫ জুন যুদ্ধচলাকলীন শত্রুর আঘাতে নিহত হন।

বাস্তব জীবনে অ্যাথোস

অ্যাথোসের আসল নাম আরমান্ড ডি সিলেগু ডি’অথস ডি’আউটভিল। আলেকজান্ডার দ্যুমার মাস্কেটিয়ার্স সদস্যদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে আভিজাত্যপূর্ণ সেই সাথে ছিলেন জ্ঞানী মানুষ। তিনি সবসময় মদ্যপান করতেন। উপন্যাসে তার এই প্রচুর মদ পানের পেছনে ছিলো এক করুন প্রেমে আঘাত পাওয়ার ঘটনা। যা সবসময় তিনি তার বন্ধুদের কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন।

উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র অ্যাথোস জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৬১৫ সালে। অ্যাথোসরা ছিলেন ২ ভাই, আর তিনিই ছিলেন কনিষ্ঠ। বাস্তব জীবনের অ্যাথোসের সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানা যায় না। তিনি ১৬৪০ বা ৪১ সালে মাস্কেটিয়ার্সদের দলে যোগ দিয়েছিলেন। আর যোগ দেওয়ার মাত্র ২ বছর পর ১৬৪৩ সালের ২১ ডিসেম্বর প্যারিসে মারা যান।

 ইতিহাসবিদদের মতে অ্যাথোসের এই অল্প বয়সে মৃত্যু কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তার সাথে কারো দ্বন্দ্ব ছিলো আর সেই দ্বন্দ্ব ভায়োলেন্সে রূপ নেয়, আর তাতেই অ্যাথোসের মৃত্যু হয়।

বাস্তব জীবনের পর্থোস

পর্থোসের আসল নাম আইজ্যাক ডি পুর্তো। দ্যুমা তার উপন্যাসে পর্থোসকে দেখিয়েছিলেন অনুগত, সাহসী এবং একজন প্রেমিক পুরুষ রূপে। পর্থোস ১৬১৭ সালে ফ্রান্সের একটি প্রোটেস্টেন্ট খ্রিস্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৬৪০ এর দশকের গোড়ার দিকে তিনি একটি সামরিক দলে যোগ দেন। 

অনেক ইতিহাসবিদ ধারণা করেন যে তিনি পরবর্তীতে মাস্কেটিয়ার্সদের দলে যোগ দিয়েছিলেন। পর্থোস ১৬৫০ সাল নাগাদ তার জন্মভূমি বার্নে ফিরে আসেন। আর সেখানেই তাকে নাভারেক্সের যুদ্ধাস্ত্র গার্ডের সাবঅল্টার্ন হিসাবে কাজ করতে দেখা যায়। এছাড়াও তাকে তার ভাই জিনের সাথে কাজ করতে দেখা যায়, যিনি সেই শহরের একটি সামরিক পোস্টও অধিষ্ঠিত ছিলেন।

পর্থোসের বাকি জীবনটা রহস্যময়। তবে স্থানীয় তথ্য মতে তিনি ১৬৭০ সালে মারা যান। দ্যুমার মাস্কেটিয়ার্স চরিত্রগুলোর মধ্যে দ্যুমার সবচেয়ে প্রিয় মাস্কেটিয়ার্স ছিলো পর্থোস। দ্যুমার বাবাও ছিলেন একজন সফল সৈনিক। নিজের বাবার রূপটাই তিনি পোর্থোসের মাধ্যমে উপন্যাসে উপস্থাপন করেছেন।

আরো পড়ুন:  টেস অব দ্য ডারবারভিলস: এক নিষ্পাপ নারীর করুণ পরিণতি

বাস্তব জীবনের অ্যারামিস

অ্যারামিসের আসল নাম হেনরি ডি অ্যারামিস। আলেকজান্ডার দ্যুমা তার উপন্যাসে অ্যারামিস কে দেখিয়েছেন, একজন যুবক যিনি মাস্কেটিয়ার্স দলে যোগ দেওয়ার আগে পুরোহিত হওয়ার জন্য ধর্মের উপর অধ্যায়ন করেছেন। থ্রি মাস্কেটিয়ার্স সিরিজের পরের বই গুলোতে তাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। আর সিরিজের শেষ পর্যন্ত ৪ জন মাস্কেটিয়ার্সদের মধ্যে বেঁচে যাওয়া শেষ মাস্কেটিয়ার্স ও তিনিই।

দ্যুমার থ্রি মাস্কেটিয়ার্স উপন্যাসের মধ্যে সবচেয়ে জটিল চরিত্রটির নাম অ্যারামিস। অ্যারামিস ফ্রান্সের একটি অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। অ্যারামেস খ্রিস্টান সন্ন্যাসীদের মঠে তার জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন। উপন্যাসের শুরুতে দ্যুমা অ্যারামেসের ধর্মের ব্যাপার সম্পর্কে খুব বেশি জানতেন না।

আলেকজান্ডার দ্যুমার সেই ৪ মাস্কেটিয়ার্সদের স্ট্যাচু ফ্রান্সের কোনো এক শহরে Image: Dreamstime

অ্যারামিজ ১৬৪০ সালের গ্রীস্মে মঁসিয়ে ট্রেভিয়েলের অধিনস্থ মাস্কেটিয়ার্সের দলে যোগদান করেন। তিনি বেশ কয়েক বছর মাস্কেটিয়ার্স দলে কাজ করেছিলেন। মাস্কেটিয়ার্স দলে তার পদবি কি ছিলো বা কি পদমর্যাদা অর্জন করেছিলেন সে-সব বিষয়ে তথ্য জানা যায় না। ১৬৫০ সালে তিনি বার্নে ফিরে আসেন; আর সেখানেই তিনি  জিন ডি বার্ন-বোনাসেকে বিয়ে করেন। 

এই দম্পতির ২ ছেলেও ২ মেয়ে হয়েছিল। অ্যারামিস কে প্যারিসে শেষবার ১৬৫৭ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে দেখা যা, যখন তিনি এবং তার স্ত্রী তার শ্যালকের বিবাহের সাক্ষী হতে উপস্থিত হয়েছিলেন। ১৬৮১ সালে অ্যারামিস কোনো প্রকার দূর্ঘটনা ছাড়াই স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যুবরণ করেন।

বাস্তব জীবনের মঁসিয়ে ডি ট্র্যাভিল

মঁসিয়ে ট্র্যাভিলের নাম ছিল জিন-আর্নড ডু পেয়ার ডি ট্রয়েসভাইলস। মঁসিয়ে ট্র্যাভিল ১৫৯৮ সালে বার্নের ওলোরন-সাইন্ট-মেরিতে জন্মগ্রহণ করেন। মঁসিৈ ট্র্যাভিল ১৬১৬ সালে গার্ডসের একটি রেজিমেন্টে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। আর মাস্কেটিয়ার্স দলে যোগ দেন ১৬২৫ সালে।১৬৩৪ সালে তিনি মাস্কেটিয়ার্স দলের ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হন। মাস্কেটিয়ার্স দল ভেঙে যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় ১২ বছর তিনি সেই পদেই ছিলেন।

মঁসিয়ে ট্র্যাভিল রাজার প্রিয় ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ছিলেন। রাজার শুভাকাঙ্ক্ষী হওয়ায় মন্ত্রী কার্ডিনাল রুশেলৌর শত্রুতে পরিণত হন। কার্ডিনাল রুশলৌর ষড়যন্ত্রের ফলে তাকে মাস্কেটিয়ার্স দল থেকে সাময়িকভাবে নির্বাসিত করা হয়।

মাস্কেটিয়ার্স দল পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলেও মঁসিয়ে ট্র্যাভিলি আর ফিরে আসেন নি। তিনি তার জন্মস্থান বার্নে নিজের সম্পত্তি দেখাশোনা করেই বাকি জীবন কাটিয়ে দেন। মঁসিয়ে ট্র্যাভিলি ১৬৭২ সালে মারা যান।

থ্রি মাস্কেটিয়ার্স একে-অপরের সাথে অবিচ্ছেদ্য নয়, কিন্তু সম্পর্কিত

আলেকজান্ডার দ্যুমা তার থ্রি মাস্কেটিয়ার্স ট্রিওলজিতে যেমটা ৪ মাস্কেটিয়ার্স ডার্টানিয়ান,অ্যাথেস,পর্থোস ও অ্যারামিস কে দেখিয়েছিলেন বাস্তবে সেই বর্ণার সাথে তাদের জীবনে তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। তারা একে অপরকে আদৌও চিনতেন কিনা সে ব্যাপারে ইতিহাসবিদদের অনেক সন্দেহ আছে। তবে এদের সকলের একটা বিষয়ে খুব কমন জিনিস হচ্ছে মঁসিয়ে ট্র্যাভিল। এদের সকলে একজন আরেকজনের সাথে সম্পর্কিত না হলেও মাস্কেটিয়ার্স থাকাকালীন সময়টায় তারা সকলেই মঁসিয়ে ট্র্যাভিলের সাথে যুক্ত ছিলেন।

ডার্টানিয়ানের সাথে অন্য তিন মাস্কেটিয়ার্সের যোগসূত্র নিয়ে সন্দেহ থাকলেও ঐতিহাসিক নথিপত্র মতে অ্যাথোস,পরর্থোস, অ্যারামেসের সাথে মঁসিয়ে ট্র্যাভিলির আত্মীয়ের সম্পর্ক ছিলো। এরা প্রত্যেকেই একে অপরের কোনো না কোনোভাবে কাজিন ছিলেন। এদের সকলের মাস্কেটিয়ার্স দলে আসার পেছনে কারণ হিসেবে মনে করা হয় মঁসিয়ে ট্র্যাভিলি কারণ সে সময় তিনি ছিলেন মাস্কেটিয়ার্স দলের প্রধান আর সে সময়টায় নিজেদের আত্মীয়দের সরকারি দল বা চাকরিতে নেওয়ার ব্যাপার খুবই স্বাভাবিক ঘটনা ছিল।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া,হিস্ট্রি.কম, থ্রি মাস্কেটিয়ার্স,ব্রিটনিকা এনসাক্লোপিডিয়া

Mehadi Bhuiyan

Mehadi Bhuiyan holds a B.A. in English Literature. He has a long-standing interest in writing, with a focus on historical and mythological themes. His work often explores the cultural and literary connections between past and present. Outside of writing, he enjoys reading across genres and is passionate about music and singing.

Leave a Reply