সাদাত হোসাইন (জন্ম ২১ মে ১৯৮৪) একজন বাংলাদেশী কবি ও ঔপন্যাসিক। তিনি নিজেকে গল্পকার হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন সারাবিশ্বের বাঙালি পাঠকদের মাঝে তিনি অন্যতম জনপ্রিয় একজন লেখক।
১#
“সবটুকু কেড়ে নিতে ছেড়ে দেই ,
পেয়ে যাওয়া তোমার আধেক,
অথচ আকাশ ভেবে ,
একটা জীবন শুধু ছুঁয়ে গেছি মেঘ !”
২#
“আমাকে হারাতে দিলে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তিতে ছেয়ে যাবে তোমার শহর…”
৩#
“এমন বিষণ্ণ দিন শেষে
যদি খানিক আঁধার এসে,
ভীষণ আপন হয়ে বসে
তোমার আঙুলগুলোর ফাঁকে?
তখন আমার আঙুল ছাড়া
তুমি খুঁজবে কোথায় কাকে?”
৪#
“কিছুটা মেঘের মতো ছায়া যদি নামে,
কিছুটা বিষাদ আসে সন্ধ্যার খামে,
সকালের মিহি রোদ, রাত হয়ে যায়,
জেনে নিও, খুঁজে আর পাবেনা আমায়।”
৫#
“জানি যাচ্ছি, ফেলে সন্ধ্যা,
সাথে তোমাকেও, স্মৃতিগন্ধা!”
৬#
“এই যে লোকে লোকারণ্য শহর, সকাল-সন্ধ্যা ভিড় ভাট্টা জাগে,
তবুও এমন একলা লাগার মানে, ‘নিজের একটা মানুষ’ সবার লাগে। “
৭#
“আলগোছে হেঁটে যাই আলপথ ধরে,
পড়ে থাকে স্মৃতি কিছু কাঁদতে অঝোরে।”
৮#
“আম্মা বলতেন, তোমার পা নরম বলে তোমার জন্য কেউ পুরো পৃথিবীতে নরম মখমলের গালিচা বিছিয়ে দিবে না, কঠিন এই পৃথিবীতে হেঁটে যাওয়ার জন্য তোমাকে তোমার পা-ই শক্ত করতে হবে…”
৯#
“মানুষ তাই পাখি হতে চায়,
পাখি নাকি মৃত্যুর আগে, হয়ে যায় একা!
মানুষও পাখির মতই- শেষটা অদেখা।”
১০#
“যদিও মানুষ ভাবে কফিনের লাশে-
মানুষের মৃত্যু আসে।
অথচ মানুষ মরে রোজ,
যেখানে সে থেকেও নিখোঁজ।
যখন তারার মতো খসে যেতে যেতে
তাকিয়ে সে দেখে, ছিলোনা কোথাও আকাশে!”
১১#
“মানুষ মূলত বাঁচে মরে যেতে যেতে,
মানুষ মূলত বাঁচে ঝরে যেতে যেতে।”
১২#
“কেন ভাবে যেতে হবে দূর কোনো দেশে,
যেখানে চেনেনা কেউ তারে,
জানেনা কী ফেলে সে এসেছে!”
১৩#
“তবু তার দুঃখভার বুক,
পুষে রাখে না বলা অসুখ,
তবু তার মিছে হাসি মুখ,
লুকায় জলোচ্ছ্বাস, আসলে কুহক।”
১৪#
“মানুষ কেন পাখি হতে চায়,
কেন ভাবে, আছে সে ভুল ঠিকানায়?
এ বড় সহজ প্রশ্ন, উত্তর নয়।
মানুষতো আজন্ম পাখি,
উড়ে উড়ে ঠিকানা বদলায়!”
১৫#
“মেঘের মতো ভার হয়ে রয় বুক,
মেঘের মতো থমথমে কী ব্যথা!
মেঘতো তবু বৃষ্টি হয়ে ঝরে,
আমার কেবল জমছে ব্যাকুলতা।”
১৬#
“গাঁয়ে ছুটছে মানুষ, সন্ধ্যে হলে পাখি যেমন ঘরের খোঁজে ছোটে,
ক্ষিধে বাড়ছে পেটে, তবুও দ্বিধা আটকে রাখছে মধ্যবিত্ত ঠোঁটে!”
১৭#
“পৃথিবীতে যে পরিমাণ শ্রেষ্ঠ বাবা ও মা রয়েছেন, তার অর্ধেকও যদি শ্রেষ্ঠ মানুষ থাকতো, তাহলে পৃথিবীটা ক্রমশই নরক হওয়ার বদলে স্বর্গে পরিণত হতো!”
১৮#
“আমাদের কিছুই নেই,
অথচ সবটা সময় জুড়ে ভাবি-
এই বুঝি নিঃস্ব হলাম!”
১৯#
“তোমার জন্য অপেক্ষাতে দাঁড়িয়ে ছিলাম বলে,
মেঘ বলেছে খানিক আঁধার ঢেলেও,
বৃষ্টি আসুক আর কিছুক্ষণ পরে।”
২০#
“তোমার জন্য অঝর অশ্রু জলে, একটা জনম কাটিয়ে দিলাম বলে,
এই পৃথিবী হাজার বছর ধরে ,
নদীর নামে নারীর কথা বলে।”
২১#
“অভিমানে চলে যেতে যেতেও, ফিরে আসতেই-
দেখি, তোমার দরোজা জুড়ে খিল।
কোথাও চিহ্ন নেই আমি যে ছিলাম,
কোথাও গন্ধ নেই, যা কিছু দিলাম,
অন্য হাসি-কলোরোলে, গৃহ ঝিলমিল।”
২২#
“নতুন আলোয় ভাসে দখিনা দুয়ার,
নতুন জলের ভাষা অচেনা কুয়ার,
আমি তাই-
অচেনা আগন্তুক, উঠোনে দাঁড়াই।”
২৩#
“জানি, নির্বাক ঠোঁট তবু চোখ ছলছল,
সময়ের স্বরে বুঝি আমিই অচল।
আমি সে-ই,
বিভ্রম কেটে গেলে দেখি, আমি নেই।”
২৪#
“তোমার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম বলে,
একটা দোয়েল একটা চড়ুই পাখি,
খানিকটা পথ উড়েই এলো, কুড়িয়ে নিল খানিক বিষাদ জমা।”
২৫#
“তোমার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম বলে,
শিমুল ফুলের একটা নবীন কুড়ি,
পড়ল ঝরে অকাতরে, উতল হাওয়ার বুকের ভেতর কে সে প্রিয়তমা!”
২৬#
“তুমি কি মেঘ?
কী গাঢ়, গভীর, অথচ ছুঁতে গেলে নেই,
তুমি কি জল?
কী স্বচ্ছ, সহজ, অথচ প্রলয় নিমিষেই!”
২৭#
“যে তারাটি নেই আর যে তারাটি আছে,
যায়নিতো কখনোই কেউ কারো কাছে!”
২৮#
“যতদূর চোখ যায়, যতদূর যায় না,
সবখানে অদ্ভুত, তুমিময় আয়না।”
২৯#
“এই যে আকাশ ছেড়ে গেলে, এতোটা ছিলো না পৃথিবীও,
যে জানেনা আকাশের মানে, তার কাছে দ্বিধাতো আমিও!”