সৈয়দ মুজতবা আলীর এক অনবদ্য সৃষ্টি শবনম। কিন্তু শবনম কি উপন্যাস, নাটক না সৃষ্টিমুখর প্রেমকাব্য? রাধা-কৃষ্ণ কিংবা শিরি-ফরহাদের প্রেমের চিরায়ত ধারা শবৃনমূ-মজনুনের মাঝেও চিরবহমান সে-প্রেম অনন্ত-অনাদি। তাই শবনমের মুখ থেকে উচ্চারিত হয়। চিরমানবের অন্তর্বেদনা, “আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না, আমার মিলনে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেয়ে না।” অনুভূত হয় “সর্ব চৈতন্যে, সর্ব কল্পনার যে মহান সত্তা তিনি তার বিশ্বরূপ ব্রহ্মাণ্ড স্বরূপের একটি মাত্র রূপ স্বপ্রকাশ করেছেন— মর্ত্যলোকে তাঁর প্রেমরূপ”। এভাবেই শবৃনম্ হয়ে ওঠে “শারদ-প্রাতে গন্ধবিধুর মাঠের শেফালি-বিছানো গালিচায় বিরহিনী নিশীথিনীর অশ্রুশিশির
এই ব্লগ পোস্টে সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রেমের উপন্যাস শবনের সেরা ৩০ টি উক্তি তুলে ধরেছি। আশা করছি সবকটা উক্তি আপনার ভালো লাগবে।
১#
ধারের বইয়ে নাকি বিদ্যার্জন হয় না।
২#
সরল হৃদয় মনে করে প্রেম লুকায়ে রাখিতে পারে
কাঁচের ফানুস মনে ভাবে লুকায়েছে শিখাটারে।
৩#
এক দোর বন্ধ হলে দশ দোর খুলে যায়, বোবার এক মুখ বন্ধ হলে দশ আঙুল তার ভাষায় তর্জমা করে দেয়।
৪#
দিনের আলোতে খেলাতো সহজ সরাই সবাইকে দেখতে পায়। তাতে আর রহস্য কোথায়? অন্ধকারের অজানাতে ঠিক জনকে চিনে নিতে পারাই তো সবচেয়ে বড়ো খেলা। শিশু যেমন গভীরতম অন্ধকারেও মাতৃস্তন খুঁজে পায়।
৫#
পলে পলে তুষানলে দগ্ধ হওয়ার বহ্নিকুন্ডে ঝম্প দেওয়া ভালো।
৬#
এতো বুদ্ধির কথা, যুক্তির কথা, সামান্য কাণ্ডজ্ঞানের কথা, কিন্তু হায়, হৃদয়ের তো আপন নিজস্ব যুক্তিরাজ্য আছে, সে তো বুদ্ধির কাছে ভিখিরির মতো তার যুক্তি ভিক্ষা চায় না, আকাশের জল আর চোখের জল তো একই যুক্তি কারণে ঝরে না।
৭#
শত্রুর মিলনে মনে অতি কষ্ট হয়
বন্ধুর বিচ্ছেদে কষ্ট হয় সাতিশয়।
উভয়েই বহু কষ্ট দেয় যদি মনে
শত্রু মিত্রে কিবা ভেদ তবে এ ভুবনে?
৮#
এতো বুদ্ধির কথা, যুক্তির কথা, সামান্য কাণ্ডজ্ঞানের কথা, কিন্তু হায়, হৃদয়ের তো আপন নিজস্ব যুক্তিরাজ্য আছে, সে তো বুদ্ধির কাছে ভিখিরির মতো তার যুক্তি ভিক্ষা চায় না, আকাশের জল আর চোখের জল তো একই যুক্তি কারণে ঝরে না।
৯#
রাজসভাতে এসেছিলাম বসতে দিলে পিছে, সাগর জলে ময়লা ভাসে, মুক্তো থাকে নিচে।
১০#
কে বল সহজ, ফাঁকা যাহা তারে, কাঁধেতে বহিতে যাওয়া। জীবন যতই ফাঁকা হয়ে যায়, ততই কঠিন বওয়া।
১১#
ঘুম ভাঙা ঘুম লাগা কল্পনা স্বপ্নে জড়ানো রাতের শেষ হলো সূর্যোদয়ের অনেক পর। কাল রাত্রে তো পারিই নি, আজ সকালেও বুঝতে পারলুম না, কাল রাত্রে কি হয়ে গেল। এ কি আরম্ভ না এ কি শেষ। এ কি অন্ধকার রাত্রে চন্দ্রোদয়ের মতো আমার ভুবন প্রসারিত করে দেবে, না এ হঠাৎ চমক মারা বিদ্দ্যুল্লেখা শুধু ক্ষনেকের তরে সুদূর আকাশপটে আমার ভাগ্যের ব্যঙ্গচিত্র এঁকে লোপ পাবে।
১২#
প্রেম গোপন রাখাতে যে গভীর আনন্দ আছে তার থেকে আমি তাকে বঞ্চিত করতে যাব কেন? শুনেছি প্রথম গর্ভধারণ করে বহু মাতা সেটা যত দিন পারে গোপন রাখে। নিভৃতে আপন মনে সেই ক্ষুদ্র শিশুটির কথা ধ্যান করতে করতে সে চলে যায় স্বর্গলোকপানে, যেখান থেকে মুখে হাসি নিয়ে নেমে আসবে এই শিশুটি।
১৩#
রাজারও একটা গর্দান আমারও একটা। অথচ আশ্চর্য বাজার গর্দান গেলে বিশ্বজোড়া হইহই পড়ে যায়, আমার বেলা হবে না।
১৪#
আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেওনা।
আমার ওটুকুতেই চলবে।
১৫#
একটি কথা, দুটি চাউনি, তাতেই দেহের ক্ষুধা, হৃদয়ের তৃষ্ণা, মনের আকাঙ্খা সব ঘুচে যায়, সব পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
১৬#
হাজার যোজন নিচে নামিয়া আকাশের ঐ তারা
গোস্পদে হ’ল প্রতিবিম্বিত ; তাই হল মানহারা?
১৭#
মানুষ কত সহজে ভুল মীমাংসায় পৌঁছায়।
১৮#
আকাশের জল আর চোখের জল একই কারণে ঝরে না।
১৯#
প্রেমের সঙ্গে সূর্যেরই কেবল তুলনা হয়। আকাশ আর মুখ এক। তড়ি ঘড়ি রঙ বদলায়। সূর্য চিরন্তন। প্রেম সূর্য একবার দেখা দিলে আর কোনো ভাবনা নেই।
২০#
কাফেলা যখন পৌছালো গৃহে মরভু্ূমি হয়ে পার
সবাই নীরব।উটের গলায়ও ঘন্টা বাজে না আর।
২১#
মুর্খই হও আর সক্রেটিস ই হও; প্রেম কেউ লুকিয়ে রাখতে পারে না।
২২#
প্রেমের সঙ্গে সূর্যেরই শুধু তুলনা হয়। আকাশ আর মুখ এক। ঘড়ি ঘড়ি রঙ বদলায়। সূর্য চিরন্তন। প্রেম-সূর্য একবার দেখা দিলে আর কোনো ভাবনা নেই।
২৩#
পলে পলে তুষানলে দগ্ধ হওয়ার বহ্নিকুন্ডে ঝম্প দেওয়া।
২৪#
এই এতদিনে বুঝতে পারলুম কালিদাস কোন দুঃখে বলেছিলেন, ‘হে সৌভাগ্যবান মুক্তা, তুমি একবার মাত্র লৌহশলাকায় বিদ্ধ হয়ে তারপর থেকেই প্রিয়ার বক্ষ-দেশে বিরাজ করছ; আমি মন্দভাগ্য শতবার বিরহশলাকায় সছিদ্র হয়েও সেখানে স্থান পাই নে।
২৫#
আনন্দের সময় মানুষ দুঃখের দিনের সম্বল সঞ্চয় করতে ভুলে যায়।
২৬#
চোখের রোশনাই নেই বলে তিনি হৃদয় দেখতে পান।
২৭#
বল দেখি, মেয়েরা অনেকক্ষণ ধরে চুমো খেতে পারে না কেন?
কি করে বলবো বল?
দু মিনিট মুখ বন্ধ করে থাকতে পারে না বলে। কথা কইতে ইচ্ছে যায়।
২৮#
ওরে মূর্খ! দিলি একটা নেবু!
তাও শুনতে হল ভিতরটা টক!
না, সে মীন করে নি।
আলবাৎ করেছে।
না।
২৯#
লোকে বলে বোরখা নারীদের বন্দি করে রেখেছে, আমি তো দেখি বোরখা নারীর সুবিধের জন্যই, ইচ্ছে করলেই নিজেকে লুকিয়ে ফেলা যায় বোরখার আড়ালে।
৩০#
রুটি খায় নি, দাল খায় নি, খায়নি কভু দই,
হাড়-হাভাতে ওই এল রে- খাবে তোরে সই!
মরি, হায় রে হায় !
৩১#
বাড়িতে থেকো। আমি ফিরব।
৩২#
আমার বিরহে তুমি অভ্যস্ত হয়ে যেয়ো না।