সমরেশ মজুমদার জন্মগ্রহণ করেন বাংলা ১০ই মার্চ ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দ। তার শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা চা বাগানে। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল থেকে। তিনি কলকাতায় আসেন ১৯৬০ সালে। বাংলায় স্নাতক সম্পন্ন করেন কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কর্মজীবনে তিনি আনন্দবাজার পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেডএর সাথে যুক্ত ছিলেন। গ্রুপ থিয়েটারএর প্রতি তার প্রচণ্ড আসক্তি ছিলো। তার প্রথম গল্প “অন্যমাত্রা” লেখাই হয়েছিলো মঞ্চনাটক হিসাবে, আর সেখান থেকেই তার লেখকজীবনের শুরু। তার লেখা অন্যমাত্রা ছাপা হয়েছিলো দেশ পত্রিকায় ১৯৬৭ সালে। সমরেশ মজুমদারের প্রথম উপন্যাস “দৌড়” ছাপা হয়েছিলো দেশেই ১৯৭৫ সালে। তিনি শুধু তাঁর লেখনী গল্প বা উপন্যাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি; ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি থেকে গোয়েন্দাকাহিনি, কিশোর উপন্যাস লেখনীতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। তাঁর প্রত্যেকটি উপন্যাসের বিষয় ভিন্ন, রচনার গতি এবং গল্প বলার ভঙ্গি পাঠকদের আন্দলিত করে।
এই ব্লগ পোস্টে সমরেশ মজুমদারের অসংখ্য উপন্যাসের মধ্যে বাছাই করা সেরা ১০০ টি উক্তি তুলে ধরেছি। আশা করি প্রিয় পাঠক সবগুলো উক্তিই আপনার ভালো লাগবে।
১
মন খুলে যদি ঘুমাতে পার তাহলে দেখবে তোমার কোনো কষ্ট নেই।
~সমরেশ মজুমদার (না আকাশ না পাতাল )
২
আমরা মনে করি প্রেমের পরিণতি বিয়ে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিয়েতে প্রেম শেষ হয়ে যায়। তাছাড়া প্রেমিক হিসেবে কেউ অসাধারণ হতে পারে কিন্তু স্বামী হিসাবে অযোগ্য হওয়া বিচিত্র নয়।
~সমরেশ মজুমদার (আকাশে হেলান দিয়ে)
৩
শুনেছি, বিখ্যাত, অতিবিখ্যাত মানুষেরা নাকি সমালোচনা মেনে নিতে সবসময় পারেন না ।ত্রুটির উল্লেখ করলে ভাবেন আক্রান্ত হচ্ছেন।
~সমরেশ মজুমদার (এক জীবনে অনেক জীবন)
৪
শাদা ছিট কালো পায়রার ওড়াওড়ি জ্যোৎস্না গায়ে মেখে মায়াবী আলোয় অস্পষ্ট হয়ে হারিয়ে যায়।
–সমরেশ মজুমদার (তবু জীবন অগাধ )
৫
আমি সবুজ ভালোবাসি ,নধর ঘাসেরা যখন সবুজ গালিচা হয়ে থাকে তখন মনে বড় মায়া আসে । প্রয়োজনে এগিয়ে যেতে হলে সেই ঘাসে পা ফেলে যেতে হয় । কিন্তু ফুলের ওপর পা ফেলে হাঁটা বড় কষ্টের।
~সমরেশ মজুমদার (চাঁদের মানুষ আসান)
৬
মানুষ অনেক সময় ভেবেচিন্তে কাজ করতে পারে না, করে ভাবে।
–সমরেশ মজুমদার ( দায়বন্ধন )
৭
মাথার ওপর আগুন , পায়ের তলা পুড়ছে । যেদিকে তাকাই খাঁ খাঁ শূন্যতা । সবুজের চিহ্ন নেই । প্রকৃতি যে কত রুক্ষ হতে পারে তার একটা ধারনা হয়েছিল তখন । তোমায় দেখে আজ সেই ছবিটা মনে এল । তুমি এত নিরাসক্ত হয়ে গেলে কি করে”?
— সমরেশ মজুমদার ( কুসুম আমি জানি তুমি ভালো নেই)
৮
তুমি যা শিখবে তা কখনই বসন্তের কোকিল যারা , তাদের শেখাবে না।
~সমরেশ মজুমদার (মোহিনী)
৯
বাউল, বৈরাগী, দরবেশফকির যাঁদের আমারা অশিক্ষিত বলি তাঁরা জীবনের কঠিন সত্যগুলো কি সহজে বলে দেন।
~সমরেশ মজুমদার (স্বনাম ধন্য)
১০
চাঁদ আকাশে ছাড়া থাকলে মেঘ তাকে ঢাকবেই।
~সমরেশ মজুমদার (বাসভূমি)
১১
অনেক সময় আমি নিজেকেও বিশ্বাস করি না।
~সমরেশ মজুমদার (মেঘ ছিল, বৃষ্টিও)
১২
প্রকৃত পুরুষ তিনিই, যিনি নারীর অভিমান দূর করে থাকেন।
~সমরেশ মজুমদার (নবীন সন্ন্যাসী)
১৩
আত্মবিশ্বাস থাকা ভালো তবে বাড়াবাড়িটা ভালো নয়।
~সমরেশ মজুমদার (কাঠ কয়লার আগুন)
১৪
মদ খাওয়া , জুয়া খেলা , ড্রাগ নেওয়া ইত্যাদির থেকে হাজার গুণ জোরালো এবং ক্ষতিকর নেশা হল প্রেমে পড়া।
~সমরেশ মজুমদার (কষ্ট কষ্ট সুখ)
১৫
অপমান সহ্য করতে করতে একসময় মনটা পাথর হয়ে যায়।
~সমরেশ মজুমদার (হিরে বসানো সোনার ফুল)
১৬
যতটা সামর্থ্য তারই মধ্যে তো চলতে হবে আমাকে । সবকিছুই মানিয়ে নিতে হয় । ক্ষমতার বাইরে কিছু করলে সামাল দিতে পারবো না যে।
~সমরেশ মজুমদার (সত্যমেব জয়তে)
১৭
আজকাল মৃত্যু সংবাদ শুনলে অস্বস্তি হয় , মন খারাপ হয় না।
~সমরেশ মজুমদার (ছায়ার পাখি)
১৮
জীবনে শান্তির চেয়ে মূল্যবান আর কিছু নেই।
~সমরেশ মজুমদার (রংমহল )
১৯
শরীরের কোন অংশে পচন এলে তা সঙ্গে সঙ্গে বাদ দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
~সমরেশ মজুমদার (জন-যাজক)
২০
ভালবাসার মূলমন্ত্র যদি আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয় তবে যে কোনও ব্যাপারেই মানিয়ে নেওয়া চলে।
~সমরেশ মজুমদার (আমি রেণু )
২১
অক্ষমেরা চিরকালই চিৎকার করে থাকে।
~সমরেশ মজুমদার (জীবনটাকে চেখে দেখুন)
২২
এক ফোঁটা চোখের জল একশ ফোঁটা রক্তের চেয়ে দামী।
-সমরেশ মজুমদার (সাতকাহন)
২৩
নাটকের সংলাপ তো মিথ্যে কথা নয় । জীবনের কথা । হয়তো সেই জীবনটা তোমার নয় । কিন্তু কারও-না-কারও জীবনে ওইরকম ঘটনা ঘটেছে। তুমি সেই জীবনটাকে যদি ঠিকঠাক ফুটিয়ে তুলতে পারো তাহলে দেখবে আনন্দে মন ভরে যাবে।
~সমরেশ মজুমদার (কলিকাতায় নবকুমার )
২৪
কেউ কি বলতে পারে কার মনে কী আছে”!
~সমরেশ মজুমদার (কোথায় যাবে সে)
২৫
একটাই শরীর, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কেমন বদলে যায়।
–সমরেশ মজুমদার (কুলকুন্ডলিনী)
২৬
ভয় করলেই ভয় , নইলে কিছু নয়।
~সমরেশ মজুমদার (নিজের সঙ্গে খেলা)
২৭
জিতলেই পায়ের তলার মাটি শক্ত হয়।
~সমরেশ মজুমদার (সমরেশের সেরা ১০১)
২৮
উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে সাময়িক আনন্দ হয়তো আছে কিন্তু কোনও ভবিষ্যৎ নেই । সময় থাকতে এটাই বুঝতে পারে না মানুষ।
~সমরেশ মজুমদার (সিংহবাহিনী)
২৯
যারা মানাতে মানাতেও মেনে নিতে পারে না , সবসময় আত্মমর্যাদার পোকা কুরে কুরে খায় তারাই দিশেহারা হয় ! মানিয়ে নেওয়া কারো কাছে অনন্ত কারো কাছে রবারের মত টানতে টানতে ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় এলেই যত গোলমাল।
~সমরেশ মজুমদার (সাতকাহন)
৩০
সন্দেহ এবং অস্বীকার করতে অভ্যস্ত এই আমরা ভাবতেই রাজি নই । আমরা যে জীবন যাপন করি তার বাইরেও জীবন আছে । সেই জীবন যাপন যারা করেন তাদের নিজস্ব মূল্যবোধ আছে যার সঙ্গে আমাদের নাও মিলতে পারে।
~সমরেশ মজুমদার (মনে পাপ নেই)
৩১
বিখ্যাত লেখকরা বোধহয় এভাবেই উপন্যাসে লিখে থাকেন যা পাঠক আগে আন্দাজ করতে পারে না।
–সমরেশ মজুমদার(মৌষলকাল)
৩২
অভাব থেকেই তো অক্ষমতা, ঈর্ষা আসে । আর সেটাকে ঢাকতে বেশীর ভাগ মানুষই গলা চড়িয়ে মেজাজ দেখানো ছাড়া অন্য কোন পথ পায় না।
~সমরেশ মজুমদার (গর্ভধারিণী)
৩৩
আমাদের মধ্যে অনেকগুলো ‘একা’ আছে ! প্রিয়জন চলে যাওয়ার সময় এক–একটি জানান দেয় ! এই করতে করতে যখন সব একা ভেঙ্গে পড়বে তখন চুপচাপ শেষ অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।
-সমরেশ মজুমদার (গীতবিতান ছুঁয়ে বলছি)
৩৪
আমাদের এখানে মেয়েরা বিয়ে করে না, তাদের বিয়ে দেওয়া হয়।
~ সমরেশ মজুমদার (সাতকাহন)
৩৫
বেঁচে থেকে বোধহয় সুখ পাওয়া যায় না।
~সমরেশ মজুমদার (উত্তরাধিকার)
৩৬
কোনও কাজই ছোট নয়। বিদেশে গেলে ব্যাপারটা স্পষ্ট দেখতে পাবে। এই আমরা, বাঙালিরাই শুধু মিথ্যে অহংকার আর ঠুঁটো দম্ভ নিয়ে নিজের চারপাশে একটার পর একটা দেওয়াল তুলে গিয়েছি। আমাদের তুলনায় এরা অনেক এগিয়ে।
~সমরেশ মজুমদার (অগ্নিরথ)
৩৭
তোমার মুখে ফুল চন্দন পড়ুক “ – আচ্ছা , কাউকে ধন্যবাদ জানাতে একথা বলা হয় কেন বলতো ? ফুল বা চন্দন খাওয়ার জিনিস নয় । মানুষ মারা গেলে মুখে চন্দন এবং ফুল তুলসীর পাতা দেওয়া হয় । ধন্যবাদ জানানোর জন্য এই মেরে ফেলার ব্যবস্থা কেন ? অদ্ভুত সব ব্যাপার।
–সমরেশ মজুমদার ( মেঘে মাটিতে মাখামাখি )
৩৮
পশ্চিমের আকাশে তখন শেষ আলোর খেলা যা গিলে ফেলল রাক্ষুসে মেঘেরা । অদ্ভুত বিষণ্ণ ছায়া ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীতে । ঝুপ করে নামবে অন্ধকার।
~সমরেশ মজুমদার (জন্মদাগ)
৩৯
নির্বোধদের বেঁচে থাকার অধিকার থাকে না।
-সমরেশ মজুমদার (বুনো হাঁসের পালক)
৪০
চাওয়া ব্যাপারটা অনেক রকম এবং তার বয়সও পৃথিবীরই মতো।
–সমরেশ মজুমদার (বাঙালির নষ্টামি)
৪১
স্মৃতি যখন সুধা হারায়, যখন তা গরলে ভরে যায়, তখন প্রেম পূজার অনেক নীচে নেমে যায় মানুষ ?
পরানের পদ্মবনে তখন পদ্ম কোথায় ? শুধুই কাঁটা।
~সমরেশ মজুমদার (পরানের পদ্মবনে)
৪২
প্রত্যেকটা জিনিসের একটা নির্দিষ্ট সময় আছে। একটা গাছ মাটিতে পুঁতলেই তাতে ফুল ফোটেনা। আর কুঁড়ি ধরা মানেই সেটাকে টেনে ফুল করা যায়না
– – সমরেশ মজুমদার
৪৩
কোনো কিছুকে ঠেলে সরাতে গেলে নিজেকেও সেই সঙ্গে সরাতে হয় । ফলে স্বপ্ন থেকে যায় পাঁচিলের ওপারেই।
~সমরেশ মজুমদার (না আকাশ না পাতাল )
৪৪
দুটো চোখ আজ একদম খটখটে শুকনো । নিঃশ্বাসের কষ্ট ছাড়া অন্য কোন অনুভূতি নেই । একটা দিন না একটা জীবন।
~সমরেশ মজুমদার (দিন যায় রাত যায়)
৪৫
মনে অসন্তোষ রাখার কোনও মানে হয় না।
~সমরেশ মজুমদার (কাঠ কয়লার আগুন)
৪৬
রাতের তারাগুলো ভয়ঙ্কর উজ্জ্বল।
~সমরেশ মজুমদার (অনুপ্রবেশ)
৪৭
ভালোবাসা একটি আবেগ থেকে জন্মায় যা শরীরকে কেন্দ্র করে যত্নে বেঁচে থাকে।
~সমরেশ মজুমদার (ভালো থেকো, ভালোবাসা)
৪৮
বর্ষার মেঘে তা থইথই আকাশে যৌবনের যে আনন্দ তা কি হারিয়ে যায় চৈত্রের শুষ্কতায়?
–সমরেশ মজুমদার ( কুসুম আমি জানি তুমি ভালো নেই )
৪৯
বাঙালির স্বভাব হল যা পছন্দ হবে না তা এড়িয়ে যাওয়া। আমাদের বাবা-ঠাকুরদা যদি কোনও ভুল করে থাকেন তাহলে কেন তার সমালোচনা করতে পারব না। সমালোচনা মানে তো অশ্রদ্ধা নয়।
~সমরেশ মজুমদার (আকাশে হেলান দিয়ে)
৫০
এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ছাত্রদের ভবিষ্যৎ ভেবে তৈরি হয়নি। কিছু বেকার ছেলেকে যেন-তেন উপায়ে আটকে রাখলে অঙ্ক ঝামেলা থেকে বাঁচা যায় বলেই বাংলা, ইতিহাস, দর্শনের অনার্স বা এম এ কোর্সগুলো চালু রাখা হয়েছে।
~সমরেশ মজুমদার (এক জীবনে অনেক জীবন)
৫১
যার গন্ধ তুমি একটি বার পেয়েছ সে অন্য সময় নিশ্চয়ই গন্ধহীন হয়ে থাকবে না। গন্ধটা আছে কিন্তু তুমি সেটা পেতে অভ্যস্ত নও । এই অনভ্যাসটা আকাশের গন্ধের ক্ষেত্রেও কাজ করছে । মাটির গন্ধ থাকবে ,আকাশের গন্ধ থাকবে না ,তা কি হয়“?
~সমরেশ মজুমদার (চাঁদের মানুষ আসান)
৫২
মানুষ যেমন শত্রুতা করে তেমনি বন্ধুও হয়”
— সমরেশ মজুমদার ( দায়বন্ধন )
৫৩
বর্ষার মেঘে তা থইথই আকাশে যৌবনের যে আনন্দ তা কি হারিয়ে যায় চৈত্রের শুষ্কতায় “?
–সমরেশ মজুমদার ( কুসুম আমি জানি তুমি ভালো নেই )
৫৪
একজন শিল্পী কখনও চোখের জল ফেলে না। সে রক্ত দিয়ে জল পড়ার কারণটাকে জয় করে।
~সমরেশ মজুমদার (মোহিনী)
৫৫
পেটে খাবার দিনের পর দিন না পড়লে অশক্ত বাবা হয় আত্মহত্যা করে নয় মেয়ের অসৎপথের রোজগার করা টাকায় খেতে আপত্তি করে না।
~সমরেশ মজুমদার (স্বনাম ধন্য)
৫৬
চোখের দৃষ্টি ক্ষয়ে যাওয়া ভোরের চাঁদের মত।
~সমরেশ মজুমদার (বাসভূমি)
৫৭
পুলিশ যদি দাপট না দেখিয়ে কথা বলে তা হলেই অস্বস্তি হয়।
~সমরেশ মজুমদার (মেঘ ছিল, বৃষ্টিও)
৫৮
সূর্যের আলোয় তারা তো দূরের কথা চাঁদকেও হৃতসর্বস্ব মনে হয়।
~সমরেশ মজুমদার (নবীন সন্ন্যাসী)
৫৯
কেউ যদি ভুলটা বুঝতে পেরে সঠিক পথটাকে খুঁজে পায় তাহলে কিন্তু ভুলটা মুল্যবান হয়ে যাবে।
–সমরেশ মজুমদার
৬০
রাতের তারাগুলো ভয়ঙ্কর উজ্জ্বল”
~সমরেশ মজুমদার (অনুপ্রবেশ)
৬১
মনে অসন্তোষ রাখার কোনও মানে হয় না।
~সমরেশ মজুমদার (কাঠ কয়লার আগুন)
৬২
ঘোড়ায় উঠেই যদি তীরের মতো ছুটতে চাও তা হলে ঘোড়া তোমাকে ফেলে দেবেই ! ধীরে ধীরে পোষ মানাতে হয় , লাগাম ধরে রাখতে হয়।
~সমরেশ মজুমদার (কষ্ট কষ্ট সুখ)
৬৩
তুমি এত বেঁকিয়ে কথা বলতে ভালবাস যে আমি তল পাই না।
~সমরেশ মজুমদার (হিরে বসানো সোনার ফুল)
৬৪
ভালোবাসা হল বেনারসী শাড়ির মত, ন্যাপথালিন দিয়ে যত্ন করে আলমারিতে তুলে রাখতে হয়, তাকে আটপৌরে ব্যবহার করলেই সব শেষ।
– সমরেশ মজুমদার (সাতকাহন)
৬৫
ঈশ্বর যদি মানুষ কে অন্তত একদিনের জন্যে অন্যের মনের কথা পড়ার ক্ষমতা দিতেন, তাহলে নব্বই ভাগ মানুষ কেউ কারো সঙ্গে থাকতে পারত না।
—সমরেশ মজুমদার (সাতকাহন)
৬৬
কেউ দেখিয়ে দিয়ে শেখার চেয়ে নিজে ঠেকে শিখলে লাভ হয় বেশি।
—সমরেশ মজুমদার (উত্তরাধিকার)
৬৭
কত মানুষ তো এই পৃথিবীতে এখনও রয়েছে যারা আমার জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছে, যাদের জীবনের কোথাও আমি নেই।
~সমরেশ মজুমদার (পরানের পদ্মবনে)
৬৮
আমি বিশ্বাস করি, ঠিকঠাক চাইতে পারলে জীবন দু-হাত ভরে দিয়ে যায়।
~সমরেশ মজুমদার (জীবনটাকে চেখে দেখুন)
৬৯
যে কাজ করে পরে কোন অনুশোচনা হয় না সেই কাজ কখনই পাপ নয়।
~সমরেশ মজুমদার (জন-যাজক)
৭০
হৃৎপিণ্ডটা মুঠোয় ধরে পৃথিবীটাকে লণ্ডভণ্ড করে দিতে ইচ্ছে করে।
–সমরেশ মজুমদার (বাঙালির নষ্টামি)
৭১
রুচি যাদের সর্বদাই নিম্নগামী আমি তাদের দলে নই।
-সমরেশ মজুমদার (বুনো হাঁসের পালক)
৭২
ক্ষমতা মানুষকে সাহসী করে তোলে।
~সমরেশ মজুমদার ( মেঘে মাটিতে মাখামাখি)
৭৩
যুক্তি প্রবল হলে আবেগ সংকুচিত হয়।
~সমরেশ মজুমদার (অগ্নিরথ)
৭৪
একসঙ্গে দীর্ঘকাল বাস করেও মানুষের সঙ্গে মানুষের চেনাশোনা হয় না।
~সমরেশ মজুমদার (উত্তরাধিকার)
৭৫
বাঙালির উপর রাজনৈতিক অত্যাচার হলে তাঁরা মুখ বুজে থাকবেন, অর্থনৈতিক চাপ প্রবল হলে হাহাকার করবেন কিন্তু রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবেন না । সমর্থন বাড়াতে দলীয় পতাকা নিয়ে যারা প্রতিবাদের মিছিল করেন তাদের সংখ্যা মোট বাঙালির কত সংখ্যক? শতকরা পয়েন্ট জিরো জিরো এক কি দুই । বৃহৎ সংখ্যায় বাঙালি মাছের চোখ নিয়ে সেই মিছিল দূর থেকে দেখেন। তারা জেনে গিয়েছেন এসব প্রতিবাদে কোনও কাজ হয় না।
-সমরেশ মজুমদার (গীতবিতান ছুঁয়ে বলছি)
৭৬
প্রত্যেক জায়গার নিজস্ব একটা চরিত্র আছে। সেই জায়গার মানুষের ব্যবহারও সেই চরিত্রের মধ্যেই পড়ে। আমি সেটা অস্বীকার করলে সাহায্য পাব না কিন্তু সেটাকে মানিয়ে নিলে অসুবিধে হবে না।
~সমরেশ মজুমদার (গর্ভধারিণী)
৭৭
পৃথিবীতে অনেক কিছুই হয় যা মানুষ বুঝতে পারে না।
-সমরেশ মজুমদার(মৌষলকাল)
৭৮
রসিকতার পেছনে সামান্য সত্যি না থাকলে তার আয়ু বেশিদিন থাকে না”
~সমরেশ মজুমদার (মনে পাপ নেই)
৭৯
সুযোগ কেউ দেয় না, করে নিতে হয়।
~সমরেশ মজুমদার (সাতকাহন)
৮০
মনটাই যার ভেঙে যায় তার কিছু করার ক্ষমতা থাকে না।
~সমরেশ মজুমদার (সিংহবাহিনী)
৮১
সন্ধানী মন কখনও বিফল হয় না।
~সমরেশ মজুমদার (সমরেশের সেরা ১০১)
৮২
মিথ্যেবাদীরা কোনোদিন শান্তি পায় না।
~সমরেশ মজুমদার (জীবন)
৮৩
যে অতীতের স্মৃতি রক্তাক্ত তাকে আঁকড়ে ধরে থেকে কি লাভ?”
~সমরেশ মজুমদার (কুলকুন্ডলিনী)
৮৪
নীরবে চেয়ে থাকা কি অপরাধ?
~সমরেশ মজুমদার (কোথায় যাবে সে)
৮৫
ভালোবাসলে অমৃত বিষ হয়ে যায় ? কেন ? ভালোবাসলে বিষ কি কখনও অমৃত হয়ে উঠে না” ?
~সমরেশ মজুমদার (কলিকাতায় নবকুমার )
৮৬
একটি একা মেয়ে ইচ্ছে করলেই বাজার যেতে পারে, ডাক্তার এর সঙ্গে দেখা করে ওষুধ আনতে পারে। কিন্তু এসব করণীয় কাজ কেউ আন্তরিকতার সাথে করে দিলে একধরনের আরাম হয়। মনের আরাম।
-সমরেশ মজুমদার।
৮৭
এই যে আমি, কলকাতার কাগজগুলোতে লিখি আর আপনারা, বাংলাদেশের মানুষেরা, সেগুলো বই হয়ে বেরুবার পর পড়েন, এতে আমার তৃপ্তি হয় না । ইচ্ছে হত, সরাসরি আপনাদের কাছে পৌঁছাতে । কালি ও কলমের স্তম্ভ, আমার প্রিয় আনিসদা, সেই সুযোগ করে দিলেন । এখন আমার মাথায় যা আসে, বুকে যে-ইচ্ছে ফোটে, তাই সরাসরি আপনাদের নিবেদন করতে পারছি। হয়তো সব লেখাই উতরোচ্ছে না, কিন্তু ঘরের ছেলের ত্রুটিবিচ্যুতি তো ঘরের মানুষেরা ক্ষমার চোখে দ্যাখেন, সেই ভরসায় লিখে যাচ্ছি।
~সমরেশ মজুমদার (জীবনটাকে চেখে দেখুন)
৮৮
যিনি ক্ষমা করতে না চেয়ে নীরবে থাকেন তাঁকে বোঝা যায় কিন্তু নীরবতা সম্পর্কে যখন সন্দেহ থাকে তখনই গোলমাল হয়।
~সমরেশ মজুমদার (জন-যাজক)
৮৯
আপনি ব্যর্থ হলে চেষ্টা করে যাবেন বারংবার কিন্তু সাকসেসের চূড়ায় উঠে গেলে আপনার ব্যালান্স হারিয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক।
~সমরেশ মজুমদার (রংমহল)
৯০
আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি , জানি না কি আশায় তবু অপেক্ষা করে আছি।
~সমরেশ মজুমদার (আমি রেণু )
৯১
মন বলল , আজ কিছু হবে , নতুন কিছু ঘটবে।
~সমরেশ মজুমদার (জলের নীচে প্রথম প্রেম)
৯২
পৃথিবীটা ভীষণ রঙিন, কিন্তু এখানে এসে সাদা-কালোর দ্বন্দ্বে যারা পড়েছে, তারাই মরেছে।
~সমরেশ মজুমদার (সত্যমেব জয়তে)
৯৩
এতদিন যা ছিল আড়ালে রাখা আজ তার পরদা সরে গেল।
~সমরেশ মজুমদার (হিরে বসানো সোনার ফুল)
৯৪
প্রকৃতির শক্তির কাছে মানুষ কিছু নয় , না ? মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করেও পুরোটা জিততে পারেনি ।নদীতে বাঁধ দিয়ে বন্যা বন্ধ করেছে তবু নদী মাঝে মাঝেই সেই বাঁধ ভাঙে । যখন খরা হয় ,ফসল জ্বলে যায় অথবা হয় না তখন মানুষ চেষ্টা করলেও বৃষ্টি নামবে না । ভুমিকম্প হওয়ার আগে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন না ওটা হবে ।আগ্নেয়গিরির মুখ থেকে যখন লাভার স্রোত নেমে আসে তখন মানুষকে পালিয়ে যেতে হয় , সেটা আটকাতে পারে না।
~সমরেশ মজুমদার (কাঠ কয়লার আগুন)
৯৫
মাতালদের মস্তিস্ক খারাপ হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
~সমরেশ মজুমদার (অনুপ্রবেশ)
৯৬
আমি নদীর মত । প্রতিটি ঘাটের মানুষ মনে করে আমি তার । শুধু আমিই জানি না।
~সমরেশ মজুমদার (নবীন সন্ন্যাসী)
৯৭
কেউ কারোও জায়গা নিতে পারে না।
~সমরেশ মজুমদার (মেঘ ছিল, বৃষ্টিও)
৯৮
একটি প্রবীণ অর্থবান পুরুষ এবং একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী তরুণীর মধ্যে পর্দার আড়ালে কি চুক্তি হয়েছে তা নিয়ে মাথা ঘামাতে চায় না কেউ”
~সমরেশ মজুমদার (কষ্ট কষ্ট সুখ)
৯৯
এই নির্জন সন্ধ্যে হওয়া সময়টা দুটো শরীর সেই গোলকধাঁধার পথে ছুটতে ছুটতে ক্রমশ কাছাকাছি হয়ে এল । মাথার ওপর ঘরে ফেরা পাখির অজস্র চিৎকার, শরীরের ওপর দিয়ে ফিনফিনে কুয়াশারা গড়িয়ে যাচ্ছে।
~সমরেশ মজুমদার (বাসভূমি)
১০০
মনের সুস্থতার তো একটা মাপ আছে । যার একটা দিকের বেশি হলে মন অসুস্থ হয় আবার অন্যদিকটা বেশি হলে সুস্থ থাকে না । যা আছে তাই নিয়ে থাকাই তো ভালো।
~সমরেশ মজুমদার (চাঁদের মানুষ আসান)