You are currently viewing শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উক্তি | শরৎচন্দ্রের ৪০ টি বিখ্যাত উক্তি

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উক্তি | শরৎচন্দ্রের ৪০ টি বিখ্যাত উক্তি

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ – ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮) ছিলেন একজন বাঙালি লেখক, ঔপন্যাসিক, ও গল্পকার। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় এবং বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক। তার অনেক উপন্যাস ভারতবর্ষের প্রধান ভাষাগুলোতে অনূদিত হয়েছে। বড়দিদি (১৯১৩), পরিণীতা (১৯১৪), পল্লীসমাজ (১৯১৬), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), শ্রীকান্ত (চারখণ্ডে ১৯১৭-১৯৩৩), দত্তা (১৯১৮), গৃহদাহ (১৯২০), পথের দাবী (১৯২৬), শেষ প্রশ্ন (১৯৩১) ইত্যাদি শরৎচন্দ্র রচিত বিখ্যাত উপন্যাস।

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয়তার দরুন তিনি ‘অপরাজেয় কথাশিল্পী’ নামে খ্যাত। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে জগত্তারিণী স্বর্ণপদক পান৷ এছাড়াও, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ‘ডিলিট’ উপাধি পান ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে।



কপালের যেখানটায় বসন্তের দাগ ছিল; সবাই চোখ ফিরিয়ে নিত ঘেন্নায়! সেখানটায় চুমো খেয়ে বুঝিয়ে দিতে হয় ভালোবাসা জিনিসটা সবার জন্য আসেনি।



যাহাকে ভালোবাসি সে যদি ভালো না বাসে,
এমনকি ঘৃণাও করে তাও বোধ করি সহ্য হয়!
কিন্তু যাহার ভালবাসা পাইয়াছি
বলিয়া বিশ্বাস করেছি, সেইখানে ভুল
ভাঙ্গিয়া যাওয়াটাই সবচেয়ে নিদারুন।
পূর্বের টা ব্যাথা দেয়।
কিন্তু শেষের টা ব্যাথাও দেয়, অপমান ও করে।

____ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (চরিত্রহীন)



“বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না—ইহা দূরেও ঠেলিয়া ফেলে।




মরনে ক্ষতি নাই, কিন্তু সে সময়ে যেন একটি স্নেহ-করস্পর্শ তাহার ললাটে পৌঁছে—যেন একটিও করুণার্দ্র স্নেহময় মুখ দেখিতে দেখিতে এ জীবনের অন্ত হয়।



ভালোবাসার ক্ষেত্রে
সে’ই বুদ্ধিমান,
যে ভালোবাসে বেশি
কিন্তু প্রকাশ করে কম!

(শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়)



জন্মিলে মরিতে হয়,
আকাশে প্রস্তর নিক্ষেপ করিলে,
তাহাকে ভূমিতে পড়িতে হয়,
খুন করিলে ফাঁসিতে যাইতে হয়,
চুরি করিলে কারাগারে যাইতে হয়,
তেমন ভালোবাসিলে কাঁদিতে হয়—-
অপরাপরের মতো ইহাও একটি জগতের নিয়ম।

(শুভদা)
শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়।




প্রায় কোন দেশেই পুরুষ
নারীকে যথার্থ মূল্য দেয় নাই “

(শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়)




নিজের অট্টালিকায়, তাহার শয়নকক্ষে, বড়দিদির কোলে মাথা রাখিয়া সুরেন্দ্রনাথ শুইয়া আছে, পা – দুটি শান্তি কোলে করিয়া অশ্রুজলে ধুইয়া দিতেছে।
পাবনায় যতগুলি ডাক্তার -কবিরাজ সমবেত চেষ্টা ও পরিশ্রমেও রক্ত বন্ধ করিতে পারিতেছে না। পাঁচ বছরের পূর্বেকার সেই আঘাত রক্ত বমন করিতেছে।
~শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (বড়দিদি)




পৃথিবীতে কোন সংস্কারই কখনও দল বেঁধে হয় না! একাকীই দাঁড়াতে হয়। এর দুঃখ আছে। কিন্তু এই স্বেচ্ছাকৃত একাকীত্বের দুঃখ, একদিন সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে বহুর কল্যাণকর হয়। মেয়েকে যে মানুষ বলে নেয়, কেবল মেয়ে বলে, দায় বলে, ভার বলে নেয় না, সে-ই কেবল এর দুঃখ বইতে পারে, অপরে পারে না। আর কেবল নেওয়াই নয়, মেয়েমানুষকে মানুষ করার ভারও তারই উপরে এবং এইখানেই পিতৃত্বের সত্যকার গৌরব।

স্বরাজ সাধনায় নারী / শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়


১০

অতীত মুছে ফেলার শ্রেষ্ঠ উপায় হচ্ছে স্থান পালটানো

১১

যাহার প্রাসাদতুল্য অট্টালিকা নদীগর্ভে ভাঙ্গিয়া পড়িতেছে,সে আর খান কতক ইট বাঁচাইবার জন্য নদীর সহিত কলহ করিতে চাহে না৷


১২

আমি যে মেয়েমানুষ!
মেয়েমানুষের কি কখনো অসুখ হয়, না সে মরে?
কোথায় শুনেচ, অযত্নে অত্যাচারে মেয়েমানুষ মরে গেছে?


১৩

মহত্ত জিনিসটা কোথাও ঝাঁকে ঝাঁকে থাকে না। তাকে সন্ধান করে খুঁজে নিতে হয়।


১৪

রাজার আইন, আদালত, জজ, ম্যাজিস্ট্রেট সমস্ত মাথার উপরে থাকিলেও দরিদ্র প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিঃশব্দে মরিতে হইবে।


১৫

কত হারাইয়া গিয়াছে টের পাই,
কিন্তু তবু তো শিকল ছিড়িয়া যায়।

১৬

হয়তো প্রশ্ন করবে, তবে কি এমন নিঃসঙ্গ জীবনই চিরদিন কাটাব?
কিন্তু প্রশ্ন যাই হোক, এর জবাব দেওয়ার দায় আমার নয়, তোমার।


১৭

মেয়েরা পুরুষের হৃদয় এক নিমিষেই
চিনে নিতে পারে, এটি বিধাতার দেয়া শক্তি। অথচ
আশ্চর্যের ব্যাপার ওরা নিজেদের হৃদয়
নিজেরা চিনতে পারে না”।


১৮

রাগ করে শোয়া যেতে পারে কিন্তু রাগ করে ঘুমনো যায় না| বিছানায় পড়ে ছটফট করার মত শাস্তি আর নেই|


১৯

যদির উত্তর যদি দিয়েই হয়। অনিশ্চিত প্রস্তাবের নিশ্চিত মিমাংসা আশা করতে নেই।


২০

অনুকরণে মুক্তি আসে না, মুক্তি আসে জ্ঞানে।

২১

এতকাল জীবনটা কাটিল উপগ্রহের মত। যাহাকে কেন্দ্র করিয়া ঘুরি, না পাইলাম তাহার কাছে আসিবার অধিকার, না পাইলাম দুরে যাইবার অনুমতি।


২২

বড় প্রেম সব সময় কাছে টানে না। দুরেও ঠেলে দেয়!

২৩

ভালবাসাটার মতো এতবড় শক্তি , এতবড় শিক্ষক সংসারে বুঝি আর নাই। ইহা পারে না এতবড় কাজও বুঝি কিছু নাই।

২৪

কাল যে ছিল,আজ সে নাই;
আজও যে ছিল,তাহারো ঐ নশ্বর দেহ টা ধীরে ধীরে ভস্মসাৎ হইতেছে, আর তাহাকে চেনাই যায় না; অথচ, এই দেহ টাকে আশ্রয় করিয়া কত আশা,কত আকাঙ্ক্ষা,কত ভয়,কত ভাবনাই না ছিল। কোথায় গেল? এক নিমিষে কোথায় অন্তর্হিত হইল?তবে কি তার দাম?মরিতেই বা কতক্ষন লাগে?

২৫

সত্যের স্থান বুকের মধ্যে, মুখের মধ্যে নয়। কেবল মুখ দিয়ে বার হয়েছে বলেই কোনো জিনিস কখনো সত্য হয়ে উঠে না। তবু যারা তাকে সকলের অগ্রে, সকলের ঊর্ধে স্থাপন করিতে চায়, তারা সত্য কে ভালোবাসে বলেই করে না, সত্যভাষণের দম্ভকেই ভালোবাসে বলে করে।

২৬

কিছু একটা কেবল দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসছে বলেই তা ভালো হয়ে যায় না ।মাঝে মাঝে তাকে যাচাই করে বিচার করে নিতে হয়।যে মমতায় চোখ বুঝে থাকতে চায় সে ই মরে।

২৭

মনে করি চাঁদ ধরি হাতে দেই পেড়ে বাবলা গাছে হাত লেগে আঙুল গেল ছিড়ে!

২৮

তারাই মহৎপ্রাণ, যারা অন্যদেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিজের বিপদের কথা মনে রাখে না।


২৯

শিক্ষা, বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞান, উন্নতি — যা কিছু সব সুখের জন্য। যেমন করেই দেখ না কেন, নিজের সুখ বাড়ানো ছাড়া এ সকল আর কিছুই নয়।


৩০

যে বস্তুরই হোক, শেষ পর্যন্ত ভেবে দেখা মানুষের সাধ্য নয়। যিনি যতবড় বিচক্ষণ পন্ডিতই হোন না কেন,
শেষ ফলটুকু ভগবানের হাত থেকেই নিতে হয়।

৩১

বাধাঁ গরু অনাহারে দাড়িয়ে মরতে দেখেছ?
সে দাড়িয়ে মরে তবু সে জীর্ণদড়িটা ছিড়ে ফেলে মনিবের শান্তি নষ্ট করেনা।


৩২

যাহাকে ভালোবাসি সে যদি ভালো না বাসে,
এমনকি ঘৃণাও করে তাও বোধ করি সহ্য হয়!
কিন্তু যাহার ভালবাসা পাইয়াছি
বলিয়া বিশ্বাস করেছি, সেইখানে ভুল
ভাঙ্গিয়া যাওয়াটাই সবচেয়ে নিদারুন।
পূর্বের টা ব্যাথা দেয়।
কিন্তু শেষের টা ব্যাথাও দেয়, অপমান ও করে।


৩৩

ভেবেচো, বুঝি হঠাৎ করে করে
তোমাকে কুড়িয়ে পেয়েছিলুম?
কুড়িয়ে তোমাকে পাইনি,
পেয়েছিলুম অনেক তপস্যায়, অনেক আরাধনায়।
তাই, বিদায় দেবার কর্তা তুমি নও,
আমাকে ত্যাগ করার মালিকানা
স্বত্বাধিকার তোমার হাতে নেই।

৩৪

যাহা জটিল ও দুর্বোধ্য, তাহা বিশদভাবে পরিষ্কার করিয়া বুঝাইয়া বলিবার সময় ও সুবিধা না হওয়া পর্যন্ত একেবারে না বলাই ভাল। ইহাতে অধিকাংশ সময়ে সুফলের পরিবর্তে কুফলই ফলে।

৩৫

জগতের সমস্ত বস্তুই সাফাই সাক্ষীর হাত ধরে হাজির হতে পারে না বলেই
মিথ্যা বলে ত্যাগ করতে হলে অনেক ভালো জিনিস হতে বঞ্চিত হয়ে থাকতে হয়।

৩৬

কোনো বড় ফলই বড় রকমের দুঃখভোগ ছাড়া পাওয়া যায় না।

৩৭

মন্দ তো ভালোর শত্রু নয়, ভালোর শত্রু তার চেয়েও যে আরও ভালো সে।

৩৮

এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবটাই পরিপূর্ণ সত্য। মিথ্যার অস্তিত্ব যদি কোথাও থাকে, তবে সে মনুষ্যের মন ছাড়া আর কোথাও না।

৩৯

মানুষের মরণ আমাকে বড় আঘাত করে না, করে মনুষ্যত্বের মরণ দেখিলে।

৪০
মহত্ত্ব জিনিসটা কোথাও ঝাঁকে ঝাঁকে থাকে না। তাকে সন্ধান করে খুঁজে নিতে হয়।

৪১#

আমাদের দেশের লোক বই পড়েন বটে, কিন্তু পয়সা খরচ করে কিনে পড়েন না।

৪২#

যে লোক দাবী করতে ভয় পায়, পরের দাবী মেটাতেই তার জীবন কাটে।

Mehadi Bhuiyan

Mehadi Bhuiyan holds a BA in English Literature from the National University of Bangladesh. His academic interests include literature, history, and cultural studies, with a particular focus on modern and contemporary writing. He works as a freelance writer, researcher, and editor, specializing in literary analysis, historical narratives, and cultural topics.

Leave a Reply