উসমান ইবনে আফ্ফান (আনু. ৫৭৯ – ১৭ জুন, ৬৫৬) ছিলেন ইসলামের তৃতীয় খলিফা এবং মুহাম্মদ সা. এর একজন প্রসিদ্ধ সাহাবি। হযরত উসমান রাঃ ৬৪৪ থেকে ৬৫৬ সাল পর্যন্ত খিলাফতে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং খলিফা হিসেবে তিনি চারজন খুলাফায়ে রাশিদুনের একজন। উসমান ছিলেন আস-সাবিকুনাল আওয়ালুনের (প্রথমেই ইসলাম গ্রহণকারী) অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও তিনি আশারায়ে মুবাশ্শারার একজন এবং সেই ৬ জন সাহাবীর মধ্যে, অন্যতম যাদের উপর নবি মুহাম্মাদ অধিক সন্তুষ্ট ছিলেন। হযরত উসমান রাঃ কুরাইশ গোত্রের বিশিষ্ট বংশ বনু উমাইয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রথম দিকের ইসলামি ইতিহাসে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালনকারী।তিনি কুরআন সংকলনের আদেশ দেওয়ার জন্য পরিচিত ছিলেন। উসমানের নেতৃত্বে ৬৫০ সালে ইসলামী সাম্রাজ্য ফার্স (বর্তমান ইরান) এবং ৬৫১ সালে খোরাসান (বর্তমান আফগানিস্তান) অঞ্চলে প্রসারিত হয়েছিল। ৬৪০ এর দশকে তার আমলে আর্মেনিয়া বিজয় শুরু হয়েছিল।
হযরত উসমান রাঃ যেদিন খলিফা নির্বাচিত হন, সেদিন তিনি সর্বোত্তম ব্যক্তি ছিলেন। আর যখন তাকে হত্যা করা হয়, সেদিনও তিনি উত্তম ছিলেন। মুহাম্মদ সা. বলেছেন, “আল্লাহর হিকমত অনুসারে জিননুরাইনের ওপর মতানৈক্য দেখা দেবে এবং লোকেরা তাকে শহীদ করবে। অথচ তিনি তখন হকের ওপরই থাকবেন এবং তার বিরোধীরা থাকবে বাতিলের ওপর। শেষ পর্যন্ত মিসর, বসরা ও কুফার বিদ্রোহী গোষ্ঠী একাট্টা হয়ে ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে মদিনায় সমবেত হয়ে খলিফার পদত্যাগ দাবি করে। হজ উপলক্ষে অধিকাংশ মদিনাবাসী মক্কা গমন করায় তারা এ সময়কেই মোক্ষম সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে। খলিফা পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানালে তারা হত্যার হুমকি দিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। হযরত ওসমান রক্তপাতের সম্পূর্ণ বিরোধী ছিলেন। বিশাল মুসলিম জাহানের খলিফা হিসেবে মুষ্টিমেয় বিদ্রোহীর কঠোর শাস্তিদানের পরিবর্তে তিনি তাদের দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে থাকলেন। আলী, তালহা ও জুবাইরের ছেলেদের দ্বারা গঠিত ১৮ নিরাপত্তারক্ষী বিপথগামী বিদ্রোহীদের মোকাবিলায় ব্যর্থ হন। অবশেষে তারা ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জুন হিজরি ৩৫ সনের ১৮ জিলহজ শুক্রবার আসরের নামাজের পর ৮২ বছর বয়স্ক বৃদ্ধ খলিফাকে অত্যন্ত বর্বরভাবে পবিত্র কোরআন পাঠরত অবস্থায় হত্যা করা হয়।
১
জান্নাত যথার্থ জানার পরও দুনিয়াতে আরাম আয়েশ তালাশ করে। শয়তান কে শত্রু জানার পরও তার অনুসরন করে।
২
মানুষের হক সম্পর্কে যে ব্যক্তি সচেতন নয়, সে আল্লাহর হক সম্পর্কে সচেতন হতে পারে না।
৩
ডাকাত যেমন গরীবের বাড়িতে ডাকাতি করতে যায়না তেমনি শয়তানও ভালো মানুষ ছারা খারাপ মানুষকে ধোঁকা দেয় না।
৪
হে মানব সকল আল্লাহপাক তোমাদিগকে তার আনুগত্যের জন্যই সৃষ্টি করেছেন, তোমরা কিনা অন্যের আনুগত্য করতে উৎসাহ বোধ কর।
৫
রাতে ঘুমিয়ে সকালে লজ্জিত হয়ে উঠার চেয়ে পূর্ণ রাত জাগ্রত থেকে সকালে আনন্দিত হয়ে উঠা অধিকতর শ্রেয়।
৬
দুনিয়াকে যে যত বেশী চিনেছে, সে এর দিক থেকে ততবেশী নিস্পৃহ হয়েছে।
৭
দান-দাক্ষিণ্য সম্পদের ফসল, আমল হলো ইলম বা জ্ঞানের ফসল ও এখলাছ বা একনিষ্ঠতা হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির ফসল।
৮
অতিরিক্ত বিনয় মোনাফেকির আলামত।
৯
উত্তম ইমান হলো আল্লাহকে সব সময় নিজের সঙ্গী মনে করা।
১০
মুখ বন্ধ করে ফেলাই ক্রোধের সর্বোত্তম চিকিৎসা।
১১
ওই মসজিদ বৃথা, যেখানে নামাজ পড়া হয় না আর ওই নামাজ বৃথা যা মসজিদে পড়া হয় না।
১২
পার্থিব জীবনের ভোগ বিলাশ অনন্ত জীবনের প্রাপ্য হ্রাস করে দেয়।
১৩
কুপথে কিংবা ভুল পথে সম্পদ ব্যয় করাটা সম্পদের প্রতি অকৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন মাত্র।
১৪
আল্লাহ পাক থেকে যা কিছু আসে তা হৃষ্টচিত্তে মেনে নিতে পারলে দুনিয়াই তার জন্য জান্নাত হয়ে যায়।
১৫
লোকদের পরীক্ষা করতে গেলে তুমি তাদের বিষাক্ত অনুভব করবে।
১৬
শান্তির সাথে জীবন যাপন করার পরও যে ব্যক্তির আকাঙ্খা মিটে না, তার পক্ষে তৃপ্ত হওয়া সম্ভব না।
১৭
যে ব্যক্তি মানুষের অধিকার সম্পর্কে অবহিত নয়, সে আল্লাহর অধিকার সম্বন্ধেও অবগত নয়।
১৮
জান্নাতে যাওয়ার পর ক্রন্দন করা যেমন অকল্পনীয় ব্যাপার হবে, তেমনি দুনিয়ার জীবনে হাসিউল্লাসও যে কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তির পক্ষে অচিন্তনীয় ব্যাপার।
১৯
আমল বিহীন এলেম অনেক সময় উপকারী হতে পারে, কিন্তু এলেম বিহীন আমল কখনো উপকারী হয় বলে আমার জানা নেই।
২০
যে ব্যক্তি ভালো ভালো খানাপিনায় আগ্রহী, তার এ কথা স্মরণ রাখা উচিত যে, অবশেষে সে পোকামাকড়ের আহার হবে।
২১
আখেরাতের চিন্তা বাদ দিয়ে যত কিছুই করা হোক তার সবটুকুই দুনিয়াদারী।
২২
গুনাহ ছোট হলেও তার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
২৩
নিজের বোঝা যত কমই হোক তা অন্যের উপর চাপাতে চেষ্টা করো না।
২৪
আল্লাহ ছাড়া কারও কাছে কোনো কিছু আশা করো না, নিজের গুনাহ ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে শঙ্কা করো না।
২৫
কটুভাষী ব্যক্তি তিন প্রকার লোক কে আহত করে। প্রথমত নিজ আত্বা কে, দ্বিতীয়ত যার প্রতি মন্দ কথা বর্ষীত হয় তাকে, এবং তৃতীয়ত যে তা শুনে তাকে।
২৬
সত্যপথে পথিক কম হয়, কিন্তু সম্মান ও মর্যাদায় তারা সর্বাধিক হয়।
২৭
যত দুরবস্থায় পতিত হও না কেনো, আদর্শের ক্ষেত্রে পরাজয় বরণ করো না।
২৮
মানুষের হক সম্পর্কে যে ব্যক্তি সচেতন নয়, সে আল্লাহর হক সম্পর্কে সচেতন হতে পারে না।
২৯
পোষ্যদের জন্য যে ব্যক্তি মেহনত করে সে মেহনত জেহাদেরত ব্যক্তির পুন্যের সমান।
৩০
জিহ্বার স্খলন পদস্খলনের চেয়েও বেশী বিপদজনক।
