You are currently viewing মনিশংকর মুখোপাধ্যায় এর উক্তি : চৌরঙ্গী উপন্যাসের লেখক শংকরের ১২ টি বিখ্যাত উক্তি

মনিশংকর মুখোপাধ্যায় এর উক্তি : চৌরঙ্গী উপন্যাসের লেখক শংকরের ১২ টি বিখ্যাত উক্তি

শংকর ( জন্ম: ৭ ডিসেম্বর ১৯৩৩) একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক। তার আসল নাম মণিশংকর মুখোপাধ্যায়। তার প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৯৫৫ সালে। তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল চৌরঙ্গী, সীমাবদ্ধ এবং জন অরণ্য। এই তিনটি বই নিয়ে চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে। ২০১৬ সালে তিনি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট সম্মানে ভূষিত হন।

পৃথিবীর এই সরাইখানায় আমরা সবাই কিছুক্ষণের জন্য আশ্রয় নিয়েছি। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ ব্রেকফাস্ট খেয়েই বিদায় নেবে, কয়েকজন লাঞ্চ শেষ হওয়া মাত্রই বেরিয়ে পড়বে। প্রদোষের অন্ধকার পেরিয়ে, রাত্রে যখন আমরা ডিনার টেবিলে এসে জড়ো হবো তখন অনেক পরিচিতজনকেই আর খুঁজে পাওয়া যাবে না; আমাদের মধ্যে অতি সামান্য কয়েকজনই সেখানে হাজির থাকবে। কিন্তু দু:খ কোরো না, যে যত আগে যাবে তাকে তত কম বিল দিতে হবে।

পৃথিবীর পথে ঘুরে-ঘুরে আমার ভিতরটা মরুভূমি হয়ে গিয়েছে। দুনিয়ার মানুষের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হলে বুকের মধ্যে মরুভূমিই দরকার – মনে রাখবেন মরুভূমির পথে কাদা থাকে না, পিছলে পড়ার সম্ভাবনা অনেক কম।

লেখাটা হলো মানুষের সম্পূর্ণ ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন।

যে মানুষ সারাক্ষণ স্বপ্ন দেখে এবং নিজের কাজের মধ্যে ডূবে থাকে তাকে শ্রদ্ধা করা যায় কিন্তু তার সঙ্গে ঘরসংসার করা চলে না।

আজকের সভ্যতায় পুরুষকে মাপা হয় ব্যাংকের ফিগার দিয়ে, আর নারীদের মাপা হয় দেহের ফিগার দিয়ে।

আমি বললাম, “আমার অবাঙালি বন্ধুরা বলেন,
একমাত্র বাঙালির পক্ষেই এই সন্দেশ সৃষ্টি করা সম্ভব, রবীন্দ্রনাথ,রসগােল্লা ও সন্দেশ এই তিনটিই হলাে একালে বিশ্বের দরবারে বাঙালির বিনম্র উপহার।

ওরা বলে- এসপ্ল্যানেড। আমরা বলি- চৌরঙ্গী। সেই চৌরঙ্গীরই কার্জন পার্ক। সারা দিন ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত শরীরটা যখন আর নড়তে চাইছিল না, তখনই ওইখানেই আশ্রয় মিলল। ইতিহাসের মহামান্য কার্জন সাহেব বাংলাদেশের অনেক অভিশাপ কুড়িয়েছিলেন। সুজলা-সুফলা এই দেশটাকে কেটে দুভাগ করার বুদ্ধি যেদিন তাঁর মাথায় এসেছিল, আমাদের দুর্ভাগ্যের ইতিহাস নাকি সেই দিন থেকেই শুরু হয়েছিল।

শাজাহানের প্রতিটি ইটের মধ্যে এক একটা উপন্যাস লুকিয়ে আছে।

মেয়েদের জন্য বাঙালি সংসারের দরজাগুলো একমুখো। একবার বেরিয়ে এলে সেই পথ ধরে আর ফেরা যায় না।

১০

বিগত একশ বছরের দৈনন্দিন ইতিহাস দেখুন আপনার সমাজের। যে-মেয়ে বেঁকে বসেছে সে অধঃপতিত হয়েছে। ‘খারাপ’ মেয়ের শিরোপা মিলেছে তার। মেয়েমানুষ ‘খারাপ’ হলে সারানোর চেষ্টা করা হয় না এই সমাজে, একেবারে ফেলে দেওয়া হয় তাকে।
আপনি বনসাই সম্বন্ধে লিখেছেন? বড় গাছকে চেপেচুপে কায়দা করে ছোট করা – ‘মিনিয়েচারাইজেশন’। আমাদের প্রত্যেকটা মেয়ে এক একটি বনসাই- বিরাট বটবৃক্ষ হয়ে নিজেকে বিকশিত করে পৃথিবীকে সমৃদ্ধ করতে পারত, কিন্তু তার বদলে ছোট্ট একটি ট্রেতে অতি ক্ষুদ্রাকারে পরিণত হয়ে বিশেষ কোনো এক অপদার্থ বাঙালি নবাব বাহাদুরের দৈনন্দিন কামনা-বাসনার পরিতৃপ্তি ঘটাচ্ছে।

১১

মেয়েদের স্বামী, আর ছেলেদের চাকরি। অরিজিন্যাল বেকার আর চাকরি খোয়ানো বেকার—যেন কুমারি মেয়ে আর বিধবা মেয়ে। দুজনেরই স্বামী নেই। কিন্তু তফাৎটা যে কি, সে একমাত্র বিধবাই বোঝে।

১২

মা আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। নিজের যন্ত্রণার কথা অথবা আজ সকালের প্রাণসংশয় নিয়ে একটা কথাও তুললেন না। তার বদলে জানতে চাইলেন, “খেয়েছিস?”
মা ছাড়া এ-কথা পৃথিবীতে কে আর এইভাবে জিজ্ঞেস করবে?

Leave a Reply