আচার্য স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায় সিআইই, এএনআই, এফআরএএসবি, এফআইএস, এফসিএস (যিনি পি সি রায় নামেও পরিচিত; ২ আগস্ট ১৮৬১ – ১৬ জুন ১৯৪৪) ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি রসায়নবিদ, শিক্ষক, দার্শনিক ও কবি। তিনি বেঙ্গল কেমিক্যালসের প্রতিষ্ঠাতা এবং মার্কারি নাইট্রেটের আবিষ্কারক। দেশি শিল্পায়ন উদ্যোক্তাও ছিলেন । তিনি ভারতের প্রথম শিল্প প্রতিষ্ঠানের স্থপয়িতা। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে তিনি বেঙ্গল কেমিক্যাল প্রতিষ্ঠা করেন।তার জন্ম অবিভক্ত বাংলার খুলনা জেলায় (বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্গত)। তিনি বৈজ্ঞানিক জগদীশ চন্দ্র বসুর সহকর্মী ছিলেন।
১
আমি ক্লাসে এত করিয়া ছাত্রদের পড়াইলাম, যে পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপরে পড়িয়া চন্দ্রগ্রহণ হয়। তাহারা তা পড়িল, লিখিল, নম্বর পাইল, পাস করিল। কিন্ত মজার ব্যাপার হইল যখন আবার সত্যি সত্যি চন্দ্রগ্রহণ হইল তখন চন্দ্রকে রাহু গ্রাস করিয়াছে বলিয়া তাহারা ঢোল, করতাল, শঙ্খ লইয়া রাস্তায় বাহির হইয়া পড়িল। ইহা এক আশ্চর্য ভারতবর্ষ।
২
ব্যবসা করো, শিল্প ধরো, চাকরির মায়া ছাড়ো।
৩
যে জাতি নিজের ইতিহাস জানে না, সে জাতির কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
৪
সকলের অপেক্ষা দুঃখের বিষয় এই যে, আমরা সংঘবদ্ধ হইয়া কোন কার্য করিতে পারি না। দেশের যাহা কিছু অভাব-অভিযোগ, দুর্দ্দশা, তাহার বিমোচনের জন্য আমরা হাঁ করিয়া গভর্ণমেন্টের দিকে তাকাইয়া থাকি। হয় গভর্ণমেন্ট, না হয় বিধাতাপুরুষ আমাদের সমস্ত অভাব কুলাইয়া দিবেন। আমরা নিজে কিছু করিব না; হাত-পা গুটাইয়া বসিয়া থাকিব।
৫
বিজ্ঞানচর্চা শুধু নিজের উন্নতির জন্য নয়, সমাজের কল্যাণের জন্য হওয়া উচিত।
৬
নিজে না জেনে অন্যকে শেখানো মানে অন্ধের হস্তীদর্শন।
৭
আজ কেন এই হিন্দু মুসলমানের বিবাদ, ব্রাহ্মণ অব্রাহ্মণের রেষারেষি দ্বেষাদ্বেষি—তাই বলছি সময় থাকিতে এখনও ঘর সামলাও। ঘর শক্রতে রাবণ নষ্ট। আমরা স্বার্থত্যাগ করবো না, নিজেদের অন্যায় আবদার অধিকার ছাড়বোনা, কি করে বড় হ’ব, জাতি গড়ে তুলবো? জাপানে যা একদিন সম্ভব হয়েছে, ভারতে কি তা হবে না? অস্পৃশ্যতা পাপ হিন্দু ভারতবর্ষ ব্যতীত কোথাও পাবেন না।
৮
শ্রমের মর্যাদা দাও, তাহলেই জাতি উন্নতির পথে এগোবে।
৯
বাংলার সম্পদ ক্রমাগত শোষিত হইতেছে; উহা বিদেশীরাই করুক,আর অ-বাঙালীরাই করুক—ফল সমানই।
১০
জ্ঞান যার আছে, সে বিনয়ী হয়; অহংকার কখনো জ্ঞানের লক্ষণ নয়।
১১
একটা সমগ্র জাতি শুধুমাত্র কেরানী বা মসীজীবী হয়ে টিকে থাকতে পারে না।
১২
জ্ঞান যাহাতে লাভ হয়, তাহাই শিক্ষা।
১৩
আমি ব্রাহ্মণ, কিন্তু আগে আমি মানুষ
১৪
বিশ্বাস আর অন্ধভক্তি দিয়ে আর যাই হোক, বিজ্ঞানচর্চা বাঁচিয়ে রাখা যায় না।
১৫
আমার নিজের অভিজ্ঞতা হইতেই জানি যে, যাহারা কাজের লোক, তাহাদের সময়ের অভাব হয় না। যাহারা অলস, যাহাদের কাজে শৃঙ্খলা নাই, তাহারাই কেবল দৈনন্দিন কাজে বা কোনও জরুরি কাজের জন্য সময়ের অভাবের কথা বলে।
১৬
স্বদেশি শিল্পের উন্নতি না হইলে আমাদের দীনতা দূর হইবে না।
১৭
লক্ষ্য স্থির করো। ঝুঁকি নেও। কেবল মুখস্থ বিদ্যার জন্য নয়, পড়ো কারিগরি শিক্ষা অর্জনের জন্য।
১৮
বাধা বিপত্তি তোমার অগ্রগতির জ্বালানি ছাড়া আর কিছুই না। তাই আত্মত্মবিশ্বাস না হারিয়ে এগিয়ে চলো। সাফল্য আসবেই।
১৯
বিজ্ঞান চর্চা মানে শুধু পরীক্ষা-নিরীক্ষা নয়, সত্য অনুসন্ধানের সাধনা।
২০
বাংলার সম্পদ ক্রমাগত শোষিত হইতেছে; উহা বিদেশীরাই করুক,আর অ-বাঙালীরাই করুক—ফল সমানই।