You are currently viewing লীলাবতী উপন্যাসের উক্তি : হুমায়ূন আহমেদ এর লীলাবতী উপন্যাসের ১৫ টি অসাধারণ উক্তি

লীলাবতী উপন্যাসের উক্তি : হুমায়ূন আহমেদ এর লীলাবতী উপন্যাসের ১৫ টি অসাধারণ উক্তি

লীলাবতী হুমায়ূন আহমেদের লেখা একটি মননশীল ও গভীর জীবনবোধে পরিপূর্ণ উপন্যাস। এই বইটি মূলত মানুষের মনস্তত্ত্ব, সম্পর্কের জটিলতা ও অস্তিত্বের প্রশ্নকে ঘিরে নির্মিত। তবে হুমায়ূন আহমেদ যেভাবে সহজ ভাষায় জটিল সব গভীর কথা বলেন, বইটি তার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র লীলাবতী। লীলাবতী একজন সুন্দরী ও সংবেদনশীল মেয়ে, যাকে কেন্দ্র করেই গল্পটি গড়ে ওঠে। তার জীবনের সকল আনন্দ, দুঃখ, প্রেম, বেদনা এবং টানাপোড়েন এসে মিশেছে পুরো গপ্পজুড়ে

উপন্যাসটির প্রতিটি চরিত্র জীবন্ত, বাস্তব এবং পাঠকের সঙ্গে একধরনের সম্পর্ক তৈরি করে। প্রধান চরিত্র লীলাবতী হলেও এই চরিত্রকে ছাপিয়ে গেছে তার বাবা চরিত্রটি অর্থাৎ সিদ্দিকুর রহমান। দুটি চরিত্রই অনন্য— দুজনই রহস্যময়, কিন্তু অস্পষ্ট নয়। হুমায়ূন আহমেদের লেখনীতে এই চরিত্রগুলোর সংলাপ জীবন্ত এবং জীবনের ভাঙা-গড়ার গল্প পাঠককে টেনে রাখে। একই সাথে কিছুটা ভ্রম, অতিলৌকিক কিছু চিন্তা ও কথা পাওয়া যায় চরিত্রগুলোতে বিশেষ করে লীলাবতীর সৎ মায়ের কথায়।

লীলাবতী উপন্যাসের সবচেয়ে সুন্দর ও অসাধারণ সকল লাইন, সংলাপ ও উক্তি দিয়ে সাজানো হয়েছে এই লেখাটি। আশা করি পাঠকদের সবগুলো উক্তিই ভালো লাগবে।

এই পৃথিবীতে কারো স্বার্থের আড়ালে ভালোবাসা মিশে আছে, আবার কারো ভালোবাসার আড়ালে স্বার্থ মিশে আছে আজব পৃথিবী, আজব মানুষ, আজব তাদের অনুভূতি।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

মানুষ সব জানতে চায়, কিন্তু জানতে পারে না। আমরা অল্পই জানি কিন্তু ভাব করি অনেক জানি।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

প্রেমের বহিঃপ্রকাশ হল- চুমো খাওয়া। শুধু যে মানুষই চুমো খায় তা কিন্তু না। পশু-পাখি, বিড়াল, শিম্পাঞ্জি সহ আরো অনেকেই চুমো খায়। এতে মন হালকা হয়।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

মানুষ কখনো পুরোপুরি চলে যায় না। কিছু-না-কিছু সে রেখে যায়।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

মানুষ অন্য মানুষের মন কিছুটা বুঝতে পারে নিজের মন কিছুই বুঝতে পারে না।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

যে মেয়ে স্বামীর আদর বেশি পায়, সে বাপের আদর কম পায়। আবার যে মেয়ে বাপের আদর বেশি পায়, তার ভাগ্যে স্বামীর আদর নেই।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

আমরা সবাই অপেক্ষা করি। প্রকৃতি আমাদের তৈরিই করেছে অপেক্ষার জন্য।

বিষধর সাপের বিষ আর পুরুষ মানুষের তেজ – দু’টোই এক জিনিস। বিষধর সাপের বিষ শেষ হয়ে গেলে সাপের মৃত্যু হয়। পুরুষের তেজ শেষ হওয়া মানে পুরুষের মৃত্যু।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

পৃথিবীতে ২ ধরনের মানুষ আছে। এক ধরনের মানুষ রাগ প্রকাশ করতে পারে, খুশি প্রকাশ করতে পারে না। আরেক ধরনের মানুষ খুশি প্রকাশ করতে পারে, রাগ প্রকাশ করতে পারে না।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

মানুষ আলাদা আলাদা ভাগ্য নিয়ে আসে না, একজনের ভাগ্যের সাথে আরেকজনের ভাগ্য জড়ানো থাকে। একজনের ভাগ্যে ধ্বস নামলে পাশের জনের ভাগ্যেও নামে।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

১০

আনন্দ পেলে মানুষ তার আনন্দের খবর সবাইকে জানাতে চেষ্টা করে। মানুষ দুঃখ কিংবা কষ্ট পেলে তার খবর কিন্তু জানাতে চায় না। গোপন করে রাখে। মানুষ ছাড়া অন্য সব পশু-প্রাণিজগতের নিয়ম কিন্তু ভিন্ন। পশু বা পক্ষীজগতের নিয়ম হলো, দুঃখ-কষ্ট চিৎকার-চেঁচামেচি করে সবাইকে জানাও। আনন্দের খবর গোপন রাখো।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

১১

অতি বড়লোকদের অর্থ আছে রুচি নেই, তারা নিজের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন কিন্তু যাকে কাজ দেন তার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

১২

লীলার বয়স একুশ। তার মুখ লম্বাটে। গায়ের রঙ সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে তাকে খুব ফরসা লাগে। আবার কখনো মনে হয় শ্যামলা। সব মানুষের চেহারায় কিছু বিশেষত্ব থাকে। লীলার বিশেষত্ব হচ্ছে, তাকে দেখেই মনে হয় সে খুব কথা বলে। আসলে ব্যাপারটা উল্টা। লীলা খুবই কম কথা বলে। তবে অন্যরা যখন কথা বলে সে সারাক্ষণই মুখ টিপে হাসতে থাকে এবং এমন আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে থাকে যেন মনে হয় এ-ধরনের কথা সে আগে কখনো শোনে নি, ভবিষ্যতে শোনার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। যা শোনার_ এখুনি শুনে নিতে হবে।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

১৩

বিত্তমান মানুষেরা কল্পনা করতে পারেন না, তারা বাস্তব নিয়ে এতটা ব্যস্ত থাকেন যে কল্পনা করার সময় পান না। কল্পনা না করতে করতে কল্পনা করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

১৪

যেসব মেয়ের নাক খাড়া এবং যাদের চিবুক ঘামে তাদের নিয়ে এই সমস্যা। তাদের কথা অগ্রাহ্য করা যায় না।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

১৫

সখের কাছে কখনো বাজেট সমস্যা হয়না। সখের বাজেট সবসময় থাকে।
—হুমায়ূন আহমেদ (লীলাবতী)

Leave a Reply