You are currently viewing রামকৃষ্ণ পরমহংস এর উক্তি : রামকৃষ্ণ দেবের ৪০ টি বাণী

রামকৃষ্ণ পরমহংস এর উক্তি : রামকৃষ্ণ দেবের ৪০ টি বাণী

রামকৃষ্ণ পরমহংস (১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৩৬ – ১৬ আগস্ট ১৮৮৬) পূর্বাশ্রমের নাম গদাধর চট্টোপাধ্যায়। ঊনবিংশ শতকের এক প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি যোগসাধক, দার্শনিক ও ধর্মগুরু। প্রধান শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ তার প্রচারিত ধর্মীয় চিন্তাধারায় রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তারা উভয়েই বঙ্গীয় নবজাগরণের এবং ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর বাংলা তথা ভারতীয় নবজাগরণের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তাকে তার অনুসারীরা অবতার (ঐশ্বরিক অবতার) বলে মনে করেন।

ভগবান সর্বত্র আছেন এবং প্রত্যেক কণায় আছেন। কিন্তু তিনি একটি মানুষের মধ্যে সবচেয়ে অধিক থাকেন। তাই এইজন্যই ভগবানরুপী মানুষের সেবা করাই ভগবানের আসল সেবা।

পবিত্র গ্রন্থের মধ্যে অনেক ভালো কথাই পড়া যেতে পারে কিন্তু এইরকম হয়ত কোনো গ্রন্থই নেই যেটা পড়ে ধর্মকে গড়ে তোলা সম্ভব।

যদি আপনি কর্ম করেন, তাহলে নিজের কর্মের প্রতি ভক্তির ভাব থাকা অতি আবশ্যক। তখন সেই কর্ম একমাত্র সার্থক হতে পারে।

তুমি রাত্রে আকাশে অনেক তারা দেখতে পাও কিন্তু যখন সূর্য ওঠে তখন সেই তারাদের আর দেখা যায়না। ঠিক এইভাবেই, অজ্ঞানতার কারণে যদি তুমি ভগবানকে প্রাপ্ত করতে না পারো, তাহলে এর মানে এটা মোটেই নয় যে ভগবান নেই।

যখন ফুল ফোটে তখন মৌমাছিরা আপনা থেকেই চলে আসে। ঠিক তেমনই, যখনই আমরা প্রসিদ্ধ হয়ে যাই তখন সমস্ত মানুষ নিজে থেকেই আমাদের গুনগান করতে শুরু করে দেয়।

ভগবানের অনেক নাম আছে এবং তাঁকে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাপ্ত করা যেতে পারে। তুমি তাঁকে কি নাম ডাকো এবং কিভাবে তাঁর পুজো করো এটা কোনো বড় বিষয় নয়, গুরুত্বপূর্ণ এটাই যে তুমি তাঁকে নিজের ভিতর কতটা অনুভব করো।

একজন সাংসারিক মানুষ, যিনি কিনা সৎ ভাবে ঈশ্বরের প্রতি সমর্পিত নন, তার জীবনে কোনো আশা রাখাই উচিত নয়।

সংসারে চারিদিকে যাত্রা করে ফেলুন কিন্তু তাতেও আপনি কোথাও কোনো কিছুই পাবেন না। যেটা আপনি প্রাপ্ত করতে চান, সেটা তো আপনার মধ্যেই সর্বদা বিরাজমান।

যদি আমাদের ঈশ্বরের দেওয়া শক্তিকে সৎ এবং ভালো কাজে ব্যবহার করতে হয়, তাহলে ঈশ্বরের কৃপা পাওয়ার জন্য নিজেদের জীবনকে সমাজের ভালো কাজের জন্য ব্যয় করা উচিত।

১০

সংসারে চারিদিকে যাত্রা করে ফেলুন কিন্তু তাতেও আপনি কোথাও কোনো কিছুই পাবেন না। যেটা আপনি প্রাপ্ত করতে চান, সেটা তো আপনার মধ্যেই সর্বদা বিরাজমান।

১১

নৌকাকে সর্বদা জলের উপরেই থাকা উচিত কিন্তু জলকে নৌকার উপর থাকা উচিত নয়। ঠিক এইভাবেই, যার ভক্তি আছে তার এই দুনিয়াতেই থাকা উচিত কিন্তু যে ভক্তি করে তার মনের মধ্যে কখনো সাংসারিক মোহ-মায়া থাকা উচিত নয়।

১২

সত্যি কথা বলার সময় খুবই নম্র এবং একাগ্র হওয়া উচিত কারণ সত্যের মাধ্যমে ভগবানকে অনুভব করা যেতে পারে।

১৩

জীবনের বিশ্লেষণ করা ছেড়ে দেও, এটা জীবনকে আরো জটিল করে দেবে।

১৪

শুদ্ধ জ্ঞান এবং শুদ্ধ প্রেম একই জিনিস। জ্ঞান আর প্রেমের মাধ্যমেই লক্ষ্যকে পূরণ করা যেতে পারে, আর এখানে প্রেম নামক রাস্তাটি বেশি সহজ।

১৫

সফলতা অন্যের দ্বারা ঠিক করে দেওয়া উপায় মাত্র কিন্তু সন্তুষ্টি সম্পূর্ণ নিজের দ্বারা ঠিক করে দেওয়া উপায় মাত্র।

১৬

দুনিয়া বাস্তবে সত্য ও বিশ্বাসের একটি মিশ্রণ, বিশ্বাস তৈরী করে এমন জিনিসকে ত্যাগ করুন এবং সত্যকে গ্রহণ করুন।

১৭

কার্যকলাপ আপনাকে ব্যস্ত রাখে কিন্তু উৎপাদনশীলতা আপনাকে মুক্ত করে।

১৮

সাংসারিক বিষয়ের উপর জ্ঞান, মানুষকে জেদী বানিয়ে তোলে। জ্ঞানের অভিমান হলো একটি বন্ধন।

১৯

নিজের অতীতের মোকাবিলা, বিনা আফসোসে করো নিজের বর্তমানকে আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে সামলাও আর নিজের ভবিষ্যতের প্রস্তুতি, বিনা ভয়ে নেও।

২০

শুদ্ধ জ্ঞান এবং শুদ্ধ প্রেম একই জিনিস। জ্ঞান আর প্রেমের মাধ্যমেই লক্ষ্যকে পূরণ করা যেতে পারে, আর এখানে প্রেম নামক রাস্তাটি বেশি সহজ।

২১

যদি আপনি বাইরে দেখে চলেন, তাহলে আপনি কিছুই জানবেন না আপনি কোথায়। নিজের ভিতরে দেখুন।

২২

ওইসব মানুষের ব্যর্থই জন্ম হয়, যারা খুবই কঠিনতার পর পাওয়া মনুষ্য জীবনকে এইভাবেই নষ্ট করে দেয় এবং নিজের পুরো জীবনে ভগবানের উপস্থিতি অনুভবেরই চেষ্টা করেনা।

২৩

দুশ্চিন্তা করা আপনার একটি অভ্যাস হয়ে গেছে, এই কারণেই আপনি খুশি নন।

২৪

যেইভাবে ধুলোপুর্ণ আয়নার উপর সূর্যের আলোর প্রতিবিম্ব পরেনা, ঠিক সেইভাবেই মলিন মনে ঈশ্বরের প্রকাশের প্রতিবিম্বও পরা সম্ভব নয়।

২৫

জ্ঞানের অর্থ হলো, কাম ও লোভের থেকে মুক্তি।

২৬

যেই ব্যক্তি আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জন করে ফেলেছেন, তার উপর কাম এবং লোভের বিষ কখনই চড়েনা।

২৭

অভিজ্ঞতা একটি কঠিন শিক্ষক, সে প্রথমে পরীক্ষা নেয় এবং পরে পাঠ দেয়।

২৮

জল এবং সেটার মধ্যে উৎপন্ন বুদবুদ এক জিনিস। একই প্রকার জীবাত্মা ও পরমাত্মা এক জিনিস, শুধু তাদের মধ্যে কেবল এটাই পার্থক্য যে, একজন পরিমিত আর অপর অনন্ত, একজন স্বতন্ত্র নয় আর অপর স্বাধীন ও স্বতন্ত্র দুটিই।

২৯

যখন হাওয়া চলতে থাকবে তখন পাখা চালানো বন্ধ করে দেওয়া উচিত কিন্তু যখন ঈশ্বরের কৃপা দৃষ্টি বজায় থাকবে তখন প্রার্থনা আর তপস্যা কখনই বন্ধ করা উচিত নয়।

৩০

একমাত্র ভগবানই বিশ্বের পথপ্রদর্শক এবং গুরু।

৩১

নিজের বিচারগুলির উপর সৎ থাকো ও বুদ্ধিমান হও, নিজের বিচারবুদ্ধি অনুযায়ী কাজ করো, তাহলেই তুমি নিশ্চিত সফল হবে। একটি সৎ ও সরল মনের মাধ্যমে প্রার্থনা করো, তোমার প্রার্থনা নিশ্চই শোনা হবে।

৩২

বিনা কোনো স্বার্থ ছাড়া কাজ যেই মানুষ করেন, সে বাস্তবে নিজের ভালোই করে চলেছে।

৩৩

যদি তুমি সত্যিকারেই পাগল হতে চাও, তাহলে সাংসারিক বস্তুর জন্য পাগল হয়ো না, বরং ভগবানের ভালোবাসায় পাগল হও।

৩৪

ধর্ম সম্পর্কে কথা বলা খুব সহজ, কিন্তু সেটা অনুশীলনে আনা ততটাই কঠিন।

৩৫

ঈশ্বরের প্রতি বিশুদ্ধ ভালোবাসাই হলো, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। আর অন্য সবকিছুই মিথ্যা এবং কাল্পনিক।

৩৬

ভগবানের ভক্তি বা প্রেম ছাড়া, কোনো কাজকে সম্পূর্ণ করা সম্ভব নয়।

৩৭

বিনা সত্য কথা বলে কখনই ভগবানকে পাওয়া যাবেনা, কারণ ভগবান সত্য।

৩৮

যত মত তত পথ।

৩৮

ঈশ্বর সব মানুষের মধ্যেই আছে, কিন্তু সব মানুষের মধ্যে ঈশ্বরের প্রভাব থাকবে, সেটার প্রয়োজনীয়তা নেই। এইজন্যই আমরা মানুষ নিজের দুঃখে পীড়িত আছি।

৩৯

যেই ব্যক্তির মধ্যে এই তিনটি জিনিস আছে, সে কখনই ঈশ্বর প্রাপ্তি করতে পারবেনা অথবা ঈশ্বরের দর্শন সে পাবেনা। এই তিনটি জিনিস হলো- লজ্জা, ঘৃনা এবং ভয়।

৪০

যতদিন জীবন আছে আর তুমি জীবিত আছো, শিখে যাও।

Leave a Reply