হযরত ওমর ফারুক রাঃ এর উক্তি : ৩০ টি উক্তি ও উপদেশ বাণী

হযরত ওমর ফারুক রাঃ এর উক্তি : ৩০ টি উক্তি ও উপদেশ বাণী

উমর ইবনুল খাত্তাব ছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ও প্রধান সাহাবীদের অন্যতম। আবু বকরের মৃত্যুর পর তিনি দ্বিতীয় খলিফা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। উমর ইসলামী আইনের একজন অভিজ্ঞ আইনজ্ঞ ছিলেন। ন্যায়ের পক্ষাবলম্বন করার কারণে তাকে ফারুক উপাধি দেওয়া হয়। আমিরুল মুমিনীন উপাধিটি সর্বপ্রথম তার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। ইতিহাসে তাকে প্রথম উমর হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। নামের মিল থাকার কারণে পরবর্তী কালের উমাইয়া খলীফাহ্ উমর বিন আব্দিল আযীযকে দ্বিতীয় উমর হিসেবে সম্বোধন করা হয়। সাহাবীদের মর্যাদার ক্ষেত্রে সুন্নীদের কাছে আবূ বকরের পর উমরের অবস্থান। শিয়া সম্প্রদায় উমরের এই অবস্থান স্বীকার করে না। এছাড়াও তিনি ছিলেন ইসলামের নবী মুহাম্মাদের শ্বশুর। উমরের মেয়ে হাফছাহ বিন্‌ত উমর ছিলেন মুহাম্মাদের স্ত্রী।
উমরের শাসনামলে খিলাফাতের সীমানা অকল্পনীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। এসময় সাসানীয় সাম্রাজ্য ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের দুই তৃতীয়াংশ মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তার শাসনামলে জেরুজালেম মুসলিমদের হস্তগত হয়। তিনি পূর্বের নাসরানী রীতি বদলে ইয়াহূদীদেরকে জেরুসালেমে বসবাস ও উপাসনা করার সুযোগ দিয়েছিলেন। তার জীবনকর্মে উপর শিবলী নোমানীর রচিত আল ফারুক অন্যতম।

নিজেদের আত্মসমালোচনা করো, অন্য কেউ তোমার বিচার করার আগেই।

তোমাদের শাসক হিসেবে আমি হলাম সে ব্যক্তির মত, যেমন কিছু লোক একত্রে সফর করার সময় টাকা-পয়সাগুলো একজনের হাতে জমা দিয়ে বলে যে- তোমাকে আমাদের প্রয়োজনাদি মেটানোর দায়িত্ব দেওয়া হলো। দায়িত্বপ্রাপ্ত সে ব্যক্তির কি খরচের ব্যাপারে তারতম্য করার সু্যোগ আছে? তেমনি খিলাফতের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও কারও প্রতি তারতম্য করার অধিকার আমার নেই।

কেউ যদি অপবাদের সম্মুখীন হয়, তাহলে এমন কেউ যেন তাকে দোষ না দেয়, যার ব্যাপারে (পূর্ব থেকে) খারাপ ধারণা ছিল।

যে ব্যক্তি বেশি কথা বলে, সে বেশি ভুল করে; আর যে বেশি ভুল করে, তার লজ্জা কমে যায়।

দূরবর্তী নদীতীরে চর্মরোগগ্রস্ত একটি ছাগী যদি মালিশ করার মত একটু তেলের অভাবে কষ্ট পায়, তবে হাশরের দিন সে সম্পর্কেও রাষ্ট্রপ্রধানকে আল্লাহর কাছে জবাবদীহি করতে হবে।

সবচেয়ে বড় জ্ঞান হলো নিজেকে জানা।

যে তোমার কোনো জিনিসের ক্ষেত্রে আল্লাহর অবাধ্যতা করে, তোমার দেওয়া তার সবচেয়ে উত্তম শাস্তি হলো, ওই জিনিসের ক্ষেত্রে তার অবাধ্যতার সমপরিমাণ তুমি আল্লাহর আনুগত্য করবে।

সবচেয়ে বড় বিজয় হলো নিজের প্রবৃত্তির ওপর বিজয় লাভ করা।

কোন ব্যক্তি যদি ঋণ পরিশোধ করতে অপারগ হয়ে পড়ে, তবে সে ঋণ পরিশোধ করার দায়িত্ব সরকারী কোষাগারকে বহন করতে হবে।

১০

শাসকরা যখন বিগড়ে যায় তখন জনগনও বিগড়াতে শুরু করে। সর্বাপেক্ষা ইতর সে ব্যক্তি যার প্রভাবে তার অধীনস্থদের মধ্যে অনাচার বিস্তার লাভ করে।

১১

কোনো মুসলিম ভাই থেকে কোনো কথা বের হলে খারাপ ধারণা করো না, যদি তা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।

১২

যে তার রহস্যময় বিষয় গোপন রাখবে, সে কল্যাণ লাভ করবে।

১৩

যে আমার দোষ দেখে অনুগ্রহ করে তা আমাকে জানায়, তাঁর প্রতি আল্লাহর করুণা অশেষ ধারায় বর্ষিত হোক।

১৪

শাসক যদি ন্যায়পরায়ণ হয়, তবে তার অধীনস্থরাও ন্যায়পরায়ণ হয়।

১৫

তুমি সৎ এবং সত্যবাদী বন্ধুদের সঙ্গ গ্রহণ করো, তাদের সাথে বাস করে। কারণ, তারা সুখে তোমার শোভা বর্ধন করবে, দুঃখে তোমাকে সাজসরঞ্জাম দেবে।

১৬

যদি কেউ তোমাকে ভয় না পায় বা ভালো না বাসে, তবে বুঝে নাও তুমি একজন খারাপ শাসক।

১৭

সৎ ব্যক্তি কখনো প্রতারিত হয় না, তবে প্রতারকরা তাকে বোকা ভাবে।

১৮

সবসময় সত্য কথা বলো, যদিও তার কারণে মরে যেতে হয়।

১৯

অবাধ্যতা করে ফেললে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করো।

২০

তোমার চরিত্র ঠিক করো, কারণ মানুষের আসল সৌন্দর্য তার চরিত্রেই নিহিত।

২১

অনর্থক কাজে ব্যস্ত হয়ো না।

২২

শত্রুকে এড়িয়ে যাও।

২৩

আনুগত্য করার ক্ষেত্রে নমনীয় হও।

২৪

সংঘর্ষপূর্ণ শপথ করো না, অন্যথায় ধ্বংস হয়ে যাবে।

২৫

যে তোমার সামনে দোষ ধরে সেই প্রকৃত বন্ধু, আর যে সামনে প্রশংসা করে সেই শত্রু ।

২৬

যে জিনিসটি ঘটেনি তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না। কারণ, সেটা অস্তিত্বহীন বিষয়ে ব্যস্ততা।

২৭

যে বিনয়ী, আল্লাহ তাকে সম্মানিত করেন, আর যে অহংকারী, আল্লাহ তাকে অপদস্থ করেন।

২৮

পাপাচারী চেনার জন্য পাপাচারীদের সংস্পর্শে যেয়ো না।

২৯

এমন কারও প্রয়োজন পূরণ করতে যেয়ো না, যে প্রয়োজন পূরণ করতে চায় না।

৩০

আল্লাহকে ভয় করো, কারণ তাকওয়াই সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ।

Leave a Reply