You are currently viewing মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর উক্তি : মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এর ২০ টি বিখ্যাত উক্তি

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর উক্তি : মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এর ২০ টি বিখ্যাত উক্তি

মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ (২৫ ডিসেম্বর ১৮৭৬ – ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮) ছিলেন একজন গুজরাটি বংশদ্ভুত আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯১৩ সাল থেকে শুরু করে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা পর্যন্ত নিখিল ভারত মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল হন এবং আমৃত্যু এই পদে বহাল থাকেন। পাকিস্তানে তাকে কায়েদে আজম (মহান নেতা) ও বাবায়ে কওম (জাতির পিতা) হিসেবে সম্মান করা হয়।

জিন্নাহ করাচিতে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী লিঙ্কনস ইন থেকে ব্যারিস্টার এট ল’ সনদ লাভ করেন। বিশ শতকের প্রথম দুই দশকে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে উঠেন। এসময় তিনি হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। ১৯১৬ সালে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে লখনৌ চুক্তির সময় তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এসময় জিন্নাহ মুসলিম লীগেরও সদস্য ছিলেন। হোম রুল আন্দোলন সংগঠনে জিন্নাহ অন্যতম প্রধান নেতা হয়ে উঠেন। মুসলিমদের রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য তিনি চৌদ্দ দফা সাংবিধানিক সংস্কার পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন। কংগ্রেস মহাত্মা গান্ধীর সত্যাগ্রহে অংশ নিলে ১৯২০ সালে তিনি কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন। রাজনৈতিক দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পক্ষে ছিলেন।

১৯৪০ সাল নাগাদ জিন্নাহ এই অবস্থানে আসেন যে ভারতীয় মুসলিমদের নিজস্ব রাষ্ট্র থাকতে হবে। একই বছরে লাহোর প্রস্তাব পাশ হয়। এতে আলাদা রাষ্ট্রের দাবি তোলা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কংগ্রেস নেতারা কারাগারে আটক হয়ে পড়লে মুসলিম লীগ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠে। যুদ্ধের পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলোর অধিকাংশ আসনেই মুসলিম লীগ জয়ী হয়। শেষপর্যন্ত কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ ঐক্যবদ্ধ ভারতের ক্ষমতার ভাগাভাগির জন্য একটি সাধারণ সিদ্ধান্তে পৌছতে ব্যর্থ হলে দেশ বিভাগের সিদ্ধান্ত হয়। পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল হিসেবে জিন্নাহ নতুন রাষ্ট্রের সরকার ও নীতি প্রণয়নের কাজ শুরু করেন। এছাড়া ভারত থেকে আসা লক্ষাধিক অভিবাসীর পুনর্বাসনের জন্যও তাকে কাজ করতে হয়। উদ্বাস্তু শিবির স্থাপনের কাজ তিনি ব্যক্তিগতভাবে তদারক করেন। স্বাধীনতার এক বছর পর ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বরে জিন্নাহ মৃত্যুবরণ করেন।

কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একশোবার ভাবুন, কিন্তু একবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর একজন মানুষ হয়ে তার পাশে দাঁড়ান।

পুরুষের সাথে নারীর অংশগ্রহণ ছাড়া কোন সংগ্রামই সফল হতে পারে না।

দেখ ডাক্তার, আমি জীবনে দুটি ভুল করেছি তাও পূর্ব পাকিস্তান সম্পর্কে। প্রথম ভুল করেছি লাহোর প্রস্তাবকে বিকৃত করে, যা দেশের একজন নেতা হিসেবে আমার পক্ষে আদৌ উচিত হয় নি। আমি দিব্য চক্ষে দেখতে পাচ্ছি পূর্ব পাকিস্তান, পশ্চিম পাকিস্তানের কর্তৃত্ব মানবে না। তারা নিশ্চয়ই স্বাধীন হয়ে যাবে। আর এর অন্যতম কারন হচ্ছে, ওদের ওপর বিমাতাসুলভ আচরণ। পাকিস্তান প্রকৃতপক্ষে ওদের ত্যাগের জন্যই এসেছে, কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা ওদের প্রতি অবিচার করছে।…আমার দ্বিতীয় ভুল, আমি ঢাকায় গিয়ে করেছি। গভর্ণর জেনারেল হিসেবে ভাষা সমস্যা নিয়ে কথা বলা আমার উচিত হয়নি। আসলে ভাষা প্রশ্নের মীমাংসা পার্লামেন্ট করতে পারত। কিন্তু আমি কয়েকজন পূর্ব পাকিস্তানী নেতার দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে ভাষার প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলাম। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানী ছাত্র ও জনগনের যে দৃঢ় মনোভাব লক্ষ্য করেছি তাতে আমি বিশ্বাস করি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র-ভাষা করার দাবী তাদের অযৌক্তিক নয়।
(জিন্নাহর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এলাহী বখশের সঙ্গে। “ইতিহাস কথা কয়” – মোহাম্মদ মোদাব্বের, প্রকাশক: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, প্রথম প্রকাশ: জুন ১৯৮১, পৃষ্ঠা: ২৪৫)

আমি আপনাদের কাছে এ কথাটা পরিষ্কার করে জানিয়ে রাখতে চাই, নিখিল পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা উর্দু হতে হবে। কোনাে প্রাদেশিক ভাষা রাষ্ট্র ভাষা হতে পারে না। আর এ ব্যাপারে আপনাদেরকে যারা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে তারা অবশ্যই পাকিস্তানের জানে দুশমন। রাষ্ট্রের যদি একটি রাষ্ট্র ভাষা না করা যায়, তাহলে সে রাষ্ট্রটিকে একটি শক্তিশালী ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করা যাবে না। পৃথিবীর ইতিহাস এবং বড় বড় দেশগুলাের দিকে আপনাদের তাকাতে বলব। সেসব দেশসমূহে রাষ্ট্রভাষা কয়টি এবং অধিকাংশের বােধগম্য ভাষাটিকে কী রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে নির্বাচন করা হয়নি? সুতরাং, পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা উর্দুই হওয়া দরকার।

পৃথিবীতে এমন কোনো শক্তি নেই যে পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে পারবে।

কোন জাতি গৌরবের উচ্চতায় উঠতে পারবে না যদি না তোমাদের নারীরা তোমার পাশে না থাকে। আমরা কুপ্রথার শিকার। আমাদের নারীদের ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী করে রাখা মানবতাবিরোধী অপরাধ। আমাদের নারীদের যে শোচনীয় অবস্থার মধ্যে থাকতে হয় তার কোথাও কোনো অনুমোদন নেই।

যদি এখনও সিন্ধু থেকে তাদের (হিন্দু সংখ্যালঘুদের) প্রস্থান অব্যাহত থাকে, তবে এর কারণ এটা নয় যে তাদের এখানে রাখতে চাওয়া হয়নি, বরং এর কারণ তারা সীমান্তের ওপারের লোকদের কথা শুনতে বেশি প্রবণ যারা তাদের বের করে আনতে আগ্রহী।

এই পাকিস্তান রাষ্ট্রে আপনারা মসজিদ বা যেকোনো উপাসনালয়ে যাওয়ার ব্যাপারে স্বাধীন।

চরিত্র, সাহস, শিল্প ও অধ্যবসায় এই চারটি স্তম্ভ যার উপর মানব জীবনের সমগ্র স্থাপনা গড়ে তোলা যায় এবং ব্যর্থতা আমার কাছে অজানা একটি শব্দ।

১০

তারা মনে করে আমরা রাজনীতিতে ধর্মকে পরিচয় করাচ্ছি – এটি সত্যি যার জন্য আমরা গর্বিত’। ইসলাম আমাদের একটি সম্পূর্ণ বিধি দিয়েছে। এটি কেবল ধর্ম নয়, এতে আইন, দর্শন ও রাজনীতি রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একজন মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সবকিছু রয়েছে। আমরা যখন ইসলামের কথা বলি তখন আমরা এটাকে গ্রহণযোগ্য শব্দ হিসেবে গ্রহণ করি। আমরা কোন খারাপ কিছু বোঝাতে চাই নাম আমাদের ইসলামি নিয়মের ভিত্তি হল আমরা স্বাধীনতা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের পক্ষে।

১১

আপনি আপনার মর্জি মতো মন্দিরে যেতে পারেন, আপনি এই পাকিস্তান রাষ্ট্রে মর্জি মতো আপনার মসজিদ বা অন্য কোনো উপাসনালয়ে যেতে পারেন। আপনি যে কোনো ধর্ম বা বর্ণ বা ধর্মের অন্তর্গত হতে পারেন। রাষ্ট্রের কাজের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।

১২

সবচেয়ে ভালোটির আশা করো কিন্তু সবচেয়ে খারাপের জন্য প্রস্তুত থাকো।

১৩

আমি তাদের যুক্তি বুঝতে পারছি না যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ও দুষ্টুমি করে প্রচার করছে যে পাকিস্তানের সংবিধান ইসলামি শরিয়া ভিত্তিক হবে না। ইসলামি নীতি আজও জীবনের জন্য ততটাই প্রযোজ্য যতটা সেগুলো ১৩০০ বছর আগে ছিল।

১৪

আমি সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিশ্বাসী নই; আমি সিদ্ধান্ত নিই এবং সেটাকেই সঠিক করে তুলি।

১৫

ধর্মকে কখনো রাজনীতিতে প্রবেশ করতে দেওয়া উচিত নয়। ধর্ম শুধুমাত্র মানুষ আর স্রষ্টার মধ্যকার ব্যক্তিগত বিষয়।

১৬

আমি তোমাদের প্রতি অনুরোধ করছি চেষ্টা চালিয়ে যাও। কাজ, কাজ এবং শুধু কাজ— ধৈর্য, বিনয় ও আত্মতৃপ্তি নিয়ে নিজের জাতিকে সেবা করার জন্য।

১৭

চরিত্র, সাহস, কর্মশক্তি ও অধ্যবসায়—এই চারটি স্তম্ভের উপর মানবজীবনের সম্পূর্ণ অট্টালিকা গড়ে তোলা যায়, আর ‘ব্যর্থতা’ শব্দটি আমার কাছে অজানা।

১৮

সবচেয়ে ভালোর আশা রাখো, তবে সবচেয়ে খারাপের জন্য প্রস্তুত থেকো।

১৯

ব্যর্থতা শব্দটি আমার কাছে অজানা।

২০

যদি আমরা একমত হতে না পারি, তবে অন্তত ভিন্নমতকে মেনে নিতে একমত হই—কিন্তু চলুন বন্ধু হিসেবেই আলাদা হই।

Leave a Reply