এদসোঁ আরাঁচ দু নাসিমেঁতু ( ২৩ অক্টোবর ১৯৪০―২৯ ডিসেম্বর ২০২২) যিনি পেলে নামে অধিক পরিচিত, একজন ব্রাজিলীয় পেশাদার ফুটবলার ছিলেন। পেলে আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলতেন। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলারদের একজন হিসেবে বিবেচিত ছিলেন। ভক্তরা তাকে ফুটবলের সম্রাট বলে থাকে। ব্রাজিলের হয়ে তিনি ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৬৬ ও ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তিনি ব্রাজিলের জাতীয় দলের সর্বকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা ও তিনবার বিশ্বকাপজয়ী। একমাত্র তিনি এবং ব্রাজিলেরই ফুটবলার কাফু তিনবার বিশ্বকাপ জিতেছেন। এছাড়া আর কেউ তিনবার বিশ্বকাপ জিততে পারেননি। ১৩৬৩টি খেলায় তার ১২৭৯টি গোল করেছেন, যার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ম্যাচও রয়েছে। এটি একটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড হিসাবে স্বীকৃত। এ যাবৎকালের বিশ্বের সর্বোচ্চ গোলদাতাও পেলে।
১
সাফল্য কোন দুর্ঘটনা নয়। এটি কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায়, শেখা, পড়াশোনা, ত্যাগ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে—আপনি যা করছেন বা যা শিখছেন, তার প্রতি ভালোবাসা।
২
ফুটবলার হিসেবে বিশ্বের প্রতিটি শিশু পেলে হতে চায়। তাদের শুধু একজন ফুটবলারের মতো নয়, কীভাবে একজন মানুষ হতে হয় তা দেখানোটাও আমার দায়িত্ব।
৩
সাইকেল কিক দেওয়া সহজ কাজ নয়। আমি ১,২৮৩টি গোল করেছি, আর তার মধ্যে মাত্র দুই-তিনটা ছিল সাইকেল কিকে করা।
৪
অনেক মানুষ ভাবেন, যখন কেউ অনেক গোল করে, তখন সে নিশ্চয়ই একজন দারুণ খেলোয়াড়। কারণ, গোল খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রকৃত অর্থে একজন বড় খেলোয়াড় সেই, যে মাঠে সব কিছুই করতে পারে। সে গোলের সুযোগ তৈরি করে, সতীর্থদের উৎসাহ দেয়, সামনে এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস জোগায়। যখন দল ভালো খেলতে পারছে না, তখন সে নেতার ভূমিকায় এগিয়ে আসে।
৫
আমার সবসময় একটা দর্শন ছিল, যা আমি পেয়েছিলাম আমার বাবার কাছ থেকে। তিনি বলতেন, ‘শোনো, ঈশ্বর তোমাকে ফুটবল খেলার এক বিশেষ প্রতিভা দিয়েছেন। এটা তাঁর দেওয়া উপহার। যদি তুমি নিজের স্বাস্থ্য ঠিক রাখো, সবসময় ফিট থাকো, তাহলে ঈশ্বরের দেওয়া এই উপহারকে কাজে লাগিয়ে তোমাকে কেউ থামাতে পারবে না। কিন্তু তোমাকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
৬
পৃথিবীতে সবকিছুই একটি খেলা। একটি ক্ষণস্থায়ী জিনিস। আমরা সবাই মৃত। আমরা সবাই একই রকম, তাই না?
৭
১৭ বছর বয়সে আমার ওপর পরিবারের দায়িত্ব ছিল, কারণ আমি তাদের দেখাশোনা করতাম। কিন্তু ফুটবলে তখনও আমি নবীন ছিলাম; আমার তেমন অভিজ্ঞতা ছিল না, আমি অধিনায়কও ছিলাম না — আমি কেবল দলের একজন খেলোয়াড় ছিলাম।
৮
আপনারা যদি মানুষদের শিক্ষা না দেন, তাহলে তাদের সহজেই প্রতারণা বা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৯
ব্রাজিল যখন হেরেছিল তখন মনে হয়েছিল কেউ মারা গেছেন, দেশটি মারা গেছে। (মারাকানায় ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের প্রসঙ্গে ২০১৪ সালে পেলের উক্তি।)
১০
সবকিছুই চর্চার ফল।
১১
পেনাল্টি থেকে গোল করা একটি কাপুরুষোচিত উপায়।
১২
আমি প্রথম যে বিশ্বকাপটা মনে রাখতে পারি, সেটা ছিল ১৯৫০ সালে, তখন আমার বয়স ছিল ৯ বা ১০ বছর। আমার বাবা ছিলেন একজন ফুটবলার। সেবার বড় একটা উৎসবের আয়োজন হয়েছিল। কিন্তু যখন ব্রাজিল উরুগুয়ের কাছে হেরে গেল, আমি দেখলাম আমার বাবা কাঁদছেন।
১৩
মানুষ বিতর্ক করে পেলে ও ম্যারাডোনার মধ্যে কে সেরা। সেরা আসলে ডি স্টেফানো, ফুটবলার হিসেবে অনেক পরিপূর্ণ!
১৪
আপনি পৃথিবীর যেখানেই যান না কেন, তিনটি নাম সবাই চেনে: যিশু খ্রিস্ট, পেলে এবং কোকা-কোলা।
১৫
ব্রাজিল ফুটবল খায়, ঘুমায় এবং ফুটবলেই বাঁচে। তারা ফুটবলকে জীবন হিসেবে নেয়!
১৬
পেলে মরে না। পেলে কখনোই মরবে না। পেলে চিরজীবি থেকে যাবে। কিন্তু এডসন একজন সাধারণ মানুষ, যে একদিন মারা যাবে। আর মানুষ তাকে ভুলে যাবে।
১৭
১৯৬২ সালে আমার চোট হয়তো কোনো হিংসার কারণে হয়নি; আমি শুধু বলটা কিক দিয়েছিলাম আর চোট লেগে যায়। আর সেটা ঠিকই ছিল, কারণ ব্রাজিল জয়ী হয়েছিল; আমি সেটা মেনে নিতে কোনো সমস্যা পাইনি। আমি তখনও একটি পদক পেয়েছিলাম কারণ আমি দু’টি ম্যাচ খেলেছিলাম।
১৮
আমাকে সবসময় ব্যক্তিগতভাবে কিছু খেলোয়াড় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়। কিন্তু জয়ের একমাত্র উপায় হলো দল হিসেবে খেলানো। ফুটবল এক বা দুই বা তিনজন তারকা খেলোয়াড়কে নিয়ে নয় — এটা পুরো দলের খেলা।
১৯
ফুটবল খেলার জন্যই আমার জন্ম। যেমন বিথোভেনের জন্ম সঙ্গীত লেখার জন্য ও মাইকেল এঞ্জেলোর জন্ম হয়েছিল ছবি আঁকার জন্য।
২০
খেলা হলো এমন একটি বিষয় যা তরুণদের জন্য অত্যন্ত প্রেরণাদায়ক।