দেবদাস শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি প্রণয়ধর্মী বাংলা উপন্যাস। দেবদাস শরৎচন্দ্রের প্রথমদিককার উপন্যাস। রচনার সমাপ্তিকাল সেপ্টেম্বর ১৯০০, কিন্তু প্রকাশনার বছর ১৯১৭। উপন্যাসটি নিয়ে শরৎচন্দ্রের দ্বিধা ছিল বলে দীর্ঘ ১৭ বছর প্রকাশ করা থেকে বিরত ছিলেন। উপন্যাসটি তিনি রচনা করেছিলেন মাতাল হয়ে এবং বন্ধু প্রমথনাথ ভট্টাচার্যকে ১৯১৩-তে লেখা এক চিঠিতে শরৎচন্দ্র লিখেছেন, ‘ওই বইটা [দেবদাস] একেবারে মাতাল হইয়া বোতল খাইয়া লেখা।
সুপ্রিয় পাঠক এই ব্লগে দেবদাস উপন্যাসের বিখ্যাত কিছু সংলাপ ও উক্তি দিয়ে ব্লগ পোস্টটি সাজানো হয়েছে।
১#
কোন বড়লোকের কাছে কোনো ছোট মানুষ হতে পারে না।
২#
প্রার্থনা করিও, আর যাহাই হোক, যেন তাহার মতো এমন করিয়া কাহারও মৃত্যু না ঘটে। মরণে ক্ষতি নাই, কিন্তু সে সময়ে যেন একটি স্নেহ-করস্পর্শ তাহার ললাটে পৌঁছে—যেন একটিও করুণার্দ্র স্নেহময় মুখ দেখিতে দেখিতে এ জীবনের অন্ত হয়। মরিবার সময় যেন কাহারও এক ফোঁটা চোখের জল দেখিয়া সে মরিতে পারে।
৩#
যেন একটিও করুণাদ্র’ স্নেহময় মুখ দেখিতে দেখিতে এ জীবনের অন্ত হয়। মরিবার সময় যেন কাহারো এক ফোটা চোখের জল দেখিয়া সে মরিতে পারে।
৪#
জোর করিয়া প্রতিজ্ঞা করানোটা কি ভালো… না তাতে বিশেষ ভালো আছে? আজকের প্রতিজ্ঞা কাল হয়তো থাকবে না।
৫#
দেবদাস নিজের পাতলা জামার খানিকটা ছিঁড়িয়া লইয়া জলে ভিজাইয়া পার্বতীর কপালের উপর বাঁধিতে বাঁধিতে কহিল, ভয় কি পারু!!এ আঘাত শীঘ্র সেরে যাবে-শুধু দাগ থাকিবে।
৬#
যে যথার্থ ভালোবাসে সে সহ্য করিতে পারে। শুধু অন্তরে ভালোবেসেও যে কত সুখ, কত তৃপ্তি,-যে টের পায় সে নিরর্থক সংসারের মাঝে দুঃখ-অশান্তি আনতে চায় না।।
৭#
লোকে থিয়েটার করে; মুখে চুনকালি মাখে, চোর হয়, ভিক্ষা করে, রাজা হয়, রানী হয়, ভালোবাসে, কত ভালোবাসার কথা বলে, কতো কাঁদে, ঠিক যেন সব সত্য।
৮#
সমস্ত ভাবনারে একটা ধরন আছে। যাহার আশা আছে, সে এক রকম করিয়া ভাবে, আর যাহার আশা নেই, সে অন্য রকম করিয়া ভাবে।
৯#
শিক্ষা, বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞান, উন্নতি যা কিছু সব সুখের জন্য। যেমন করেই দেখো না কেন, নিজের সুখ বাড়ানো ছাড়া এ সকল আর কিছুই নয়।।
১০#
মানুষ দুঃসময়ের মাঝে যখন;- আশা-নিরাশার কুল-কিনারা দেখিতে পায় না, তখন দুর্বল মন বড় ভয়ে ভয়ে আসার দিকটায় চাপিয়া ধরিয়া থাকে। যেটা হইলে তাহার মঙ্গল সেইটাই আশা করে। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সেই দিক পানেই নিত্যান্ত উৎসুক নয়নে চাহিয়া থাকে।।
১১#
সহিষ্ণুতার প্রতিমূর্তি; লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, অপমান, অত্যাচার, উপদ্রব, স্ত্রীলোকে যে কত সইতে পারে।
১২#
ভালোবাসা এক, আর রূপের মোহ আর এক; এ দু’য়ে বড়ো গোল বাধে! আর পুরুষেই বেশি গোল বাধায়া।
১৩#
চঞ্চল আর অস্থির চিত্ত বলে স্ত্রীলোকের যত অখ্যাতি, ততখানি অখ্যাতির যোগ্য তারা নহে।
১৪#
সতর্ক এবং অভিজ্ঞ লোেকদিগের স্বভাব এই যে, তাহারা চক্ষুর নিমেষে কোন দ্রব্যের দোষ গুণ সম্বন্ধে দৃঢ় মতামত প্রকাশ করে না।
১৫#
সবটুকুর বিচার না করিয়া ‘সবটুকুর ধারণা করিয়া লয় না; দুটো দিক দেখিয়া চারিদিকের কথা কহে না।
১৬#
কিন্তু আরেক রকমের লোক আছে, যাহারা ঠিক ইহার উল্টা। কোন জিনিস বেশিক্ষণ ধরিয়া চিন্তা করিবার ধৈর্য ইহাদের নাই, কোন কিছু হাতে পড়িবা মাত্র স্থির করিয়া লহে ভালো কি মন্দ।।
১৭#
তালাইয়া দেখিবার পরিশ্রম টুকু ইহারা বিশ্বাসের জোরে চালাইয়া লয়।
১৮#
মাঝরাতে পার্বতী দেবদাসের শোবার ঘরে এলে দেবদাস ভিতু হয়ে বলে; ভূতের ভয় না করুক কিন্তু মানুষের ভয়তো করে! নির্বিকার পারু জবাব দেয় দেবদা নদীতে কত জল, এত জলেও কি আমার কলঙ্ক চাপা পড়বে না!
১৯#
সত্যি কি পারু আমাকে একেবারেই ভুলে গেছিস! কবে তোর উপর রাগ করেছিলাম? কবে মাফ করিনি?

Mehadi Bhuiyan holds a BA in English Literature from the National University of Bangladesh. His academic interests include literature, history, and cultural studies, with a particular focus on modern and contemporary writing. He works as a freelance writer, researcher, and editor, specializing in literary analysis, historical narratives, and cultural topics.