দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা (৩০ অক্টোবর ১৯৬০ – ২৫ নভেম্বর ২০২০; দিয়েগো মারাদোনা নামে সুপরিচিত) একজন আর্জেন্টিনীয় পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় এবং ম্যানেজার ছিলেন। ভক্তদের কাছে এল পিবে দে অরো (সোনালী বালক) ডাকনামে পরিচিত মারাদোনা তার খেলোয়াড়ি জীবনের অধিকাংশ সময় আর্জেন্তিনোস জুনিয়র্স এবং নাপোলির হয়ে একজন মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। তিনি মূলত একজন আক্রমণাত্মক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে দ্বিতীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। বহু ফুটবল খেলোয়াড় এবং বিশেষজ্ঞ তাকে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে গণ্য করেন। মারাদোনাকে ক্রীড়া জগতের সবচেয়ে বিতর্কিত এবং গণমাধ্যমে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গের অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৯১ সালে ইতালিতে মাদক পরীক্ষায় কোকেইনের জন্য ধরা পড়ায় তাকে ১৫ মাসের জন্য ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৯৪ ফিফা বিশ্বকাপে ইফিড্রিন পরীক্ষায় ইতিবাচক ফলাফলের জন্য তাকে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়া হয়। ২০০৫ সালে তিনি তার কোকেইন নেশা ত্যাগ করেন। তার কড়া রীতির জন্য সাংবাদিক-ক্রীড়া বিশেষজ্ঞ এবং তার মধ্যে বেশ কিছু সময় মতভেদের সৃষ্টি হয়েছে।
১
আমি ম্যারাডোনা। যে গোল করে, ভুলও করে। আমি এগুলো সবই বয়ে বেড়াতে পারি। সবার সঙ্গে লড়াই করার মতো বিশাল এক কাঁধ রয়েছে আমার।
২
বল দেখা, এর পেছনে ছোটার মাধ্যমে আমি হয়ে উঠি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ।
৩
আমি ভুল করেছি এবং সেগুলোর জন্য মাসুলও গুনেছি। কিন্তু বল এখনও খাঁটি।
৪
হ্যান্ড অব গড গোলটি দেয়ার পর¬ বললেন– আমি চাইছিলাম সতীর্থরা আমাকে জড়িয়ে ধরুক; কিন্তু কেউ আসছিল না…। আমি তাদের বললাম, এসো আমাকে জড়িয়ে ধর। না হলে রেফারি এটি বাতিল করে দেবে।
৫
আমি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা সব কিছুই ঘৃণা করি। আমি এগুলোকে আমার সব শক্তি দিয়ে ঘৃণা করি।
৬
আমি জানতাম ১৯৭৮ বিশ্বকাপ খেলতে পারবো না। আমি অনেক কেঁদেছিলাম। এরজন্য কোনদিনও সেজারে লুইস মেনোত্তিকে (আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী কোচ) ক্ষমা করতে পারবো না, তবে আমি তাকে ঘৃণাও করি না। নিজেকে আমি নতুন করে প্রস্তুত করেছি, আর জাপানের বিপক্ষেই সেটা করে দেখিয়েছি।
৭
পেলে এবং আমার মধ্যে কে সেরা তা নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকবে না। সবাই আমার কথাই বলবে।
৮
আর্জেন্টিনার মানুষ এখনও মনে রেখেছে ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ‘ঈশ্বরের হাত’-এর গোল। আর আজ, সেই ঈশ্বরের হাতেই আমাদের দেশে এসেছেন একজন আর্জেন্টাইন পোপ—এক অনন্য আশীর্বাদরূপে।
৯
ক্ষমা চেয়ে ইতিহাস পাল্টে দিতে পারলে আমি অবশ্যই তা করতাম। কিন্তু গোলটি এখনও একটি গোলই। আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হলো এবং আমি হয়ে গেলাম বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়।
১০
গোল করার পর মেসি স্বাভাবিক উদযাপন করে। আর ক্রিশ্চিয়ানো গোল করে এমন ভাব করে যেন সে শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপন শ্যুটিং করছে।
১১
আমার মা মনে করেন আমিই সেরা আর মা মনে করেন বলেই আমি সেরা হয়ে গড়ে উঠেছি।
১২
আমার সঙ্গে অনেকেই একমত হবেন যে আজকের ফুটবলে অনেক কিছুই অস্পষ্ট, আর যারা ফুটবল ভালোবাসে, তারা এমন দ্বিধাজনক পরিস্থিতির যোগ্য নয়। যতদিন ফুটবল থাকবে এমন লোকদের হাতে, যারা নিজেরাই ফুটবলকে ঠিকমতো বোঝেন না, ততদিন এই অস্থিরতা চলতেই থাকবে।
১৩
একজন খেলোয়াড় হিসেবে পেলে সেরা, তবে তিনি জানেন না কীভাবে ফুটবল থেকে সুবিধা নিতে হয়। আমার মনে হয় আমরা একসঙ্গে অনেককিছু করতে পারতাম। কিন্তু আমরা আসলেই আলাদা। সমস্যা হচ্ছে চামড়া, আমরা অনেক ঝগড়া করি। আসল সমস্যা হচ্ছে তিনি আমাকে অনেক ভয় পান যে, আমি তার সব অর্জন কেড়ে নেবো। আসলে আমি তা কোনদিনও চাইনি। নাম্বার ওয়ান, সেরাদের সেরা, মানুষদের এসব বলতে দিন এবং হৃদয় থেকে তারা বিষয়টা অনুভব করুক।
১৪
আমি কালো কিংবা সাদা হতে পারি; কিন্তু জীবনে কখনও ধূসর হব না।
১৫
ঈশ্বরই আমাকে ভালো খেলতে সাহায্য করেন। তাই মাঠে নামার সময় আমি সবসময় ক্রুশের চিহ্ন আঁকি। যদি না আঁকি, তবে মনে হয় যেন তাঁকে বিশ্বাসঘাতকতা করছি।
১৬
ঈশ্বরের হাত। হে হে… এমনকি ফটোগ্রাফাররাও বুঝতে পারেনি কি হয়ে গেল। আর পিটার শিলটন যখন লাফ দিলো, তখন তার চোখ ছিল বন্ধ, খুব রেগে ছিল, আমাকে প্রীতি ম্যাচে আমন্ত্রণ জায়াননি পর্যন্ত। আমি দুটি গোলকেই ভালোবাসি। আমার মনে হয়েছে ইংল্যান্ডের কাছ থেকে ফকল্যান্ডকে কেড়ে নিয়েছি।
১৭
পেলের উচিত জাদুঘরে চলে যাওয়া।
১৮
বিশ্বজুড়ে ফুটবল মাঠে শত শত বেকহ্যাম ছড়িয়ে আছে, যারা ঠিক তার মতোই খেলছে।
১৯
আপনি আমার সম্পর্কে অনেক কথা বলতে পারেন। কিন্তু আমি ঝুঁকি নিই না, এ কথা কখনও বলতে পারবেন না।
২০
লোকো গাত্তি (সাবেক গোলরক্ষক), বেচারা। ও আমায় বলেছিল আমি নাকি মোটা! আমি জানতাম না যে রাগ আমার শক্তি। হোর্হে সিজারপিয়ের আমায় বলল, জোড়া গোল করতে। কিন্তু আমি না চার গোল করবো এবং সেটা করেছি!