সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি লেখক, নাট্যকার এবং ঔপন্যাসিক। আধুনিক বাংলা সাহিত্যে তিনি এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার লেখায় সমাজের ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কার তুলে ধরেছেন। তার সহজ লেখায় সহজ সরল জীবনবোধের ও প্রকাশ ঘটেছে। তার উল্লেখযোগ্য রচনা লালসালু (১৯৪৮), চাঁদের অমাবস্যা (১৯৬৪), কাঁদো নদী কাঁদো (১৯৬৮)।
১#
‘শস্যের চেয়ে টুপি বেশি, ধর্মের চেয়ে আগাছা।’
~ উপন্যাস, লালসালু
২#
❝ধান দিয়া কী হইব, মানুষের জান যদি না থাকে।❞
~ উপন্যাস, লালসালু
৩#
দু:স্বপ্নের সময়ই মানুষ সুস্বপ্নের স্বপ্ন দেখে।
৪#
ভাবিলাম দুঃখের কারণ যদি এক না হয়, তবে গভীর দুঃখগ্রস্থ দুটি লোকের মত অপিরিচিত আর কেউ নাই।পাশাপাশি বসিয়াও দুইজনের মধ্যে যেন আসমান-জমিনের প্রভেদ।
~ নাটক, বহিপীর
৫#
“পুরুষের ওসব দুর্বলতা থাকেই, দোষটা আসলে মেয়ে লোকটির। দুশ্চরিত্রা হলে এমন অপঘাত মৃত্যু অবধারিত”।
~ উপন্যাস, চাঁদের অমাবস্যা
৬#
হাতে বন্দুক থাকলে নিরীহ মানুষেরও দৃষ্টি পড়ে পশু- পক্ষীর দিকে।
~ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
৭#
কেউ কেউ আরো আশা নিয়ে আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ে। বিদেশে গিয়ে পোকায় খাওয়া মস্ত মস্ত কেতাব খতম করে। কিন্তু কেতাবে যে বিদ্যে লেখা তা কোন এক বিগত যুগে চড়ায় পড়ে আটকে গেছে। চড়া কেটে সে-বিদ্যেকে এত যুগ অতিক্রম করিয়ে বর্তমান স্রোতের সঙ্গে মিশিয়ে দেবে এমন লোক আবার নেই। অতএব কেতাবগুলোর বিচিত্র অক্ষরগুলো দূরান্ত কোনো এক অতীতকালের অরণ্যে আর্তনাদ করে।
৮#
অন্যের অপমান দেখার নেশা বড় নেশা।
৯#
“আদর্শ চরিত্র শুধু রুপকথায় বিরাজ করে, বাস্তব জগতে তার অস্তিত্ব নেই”।
~ উপন্যাস, চাঁদের অমাবস্যা
১০#
জীবন কি সত্যিই মৃত্যুর চেয়ে অধিকতর মূল্যবান?
~ উপন্যাস, চাঁদের অমাবস্যা
১১#
মহাপ্লাবন হোক, পৃথিবীব্যাপী অগ্নিকাণ্ড হোক, নিদারুণ ভয়ের নিরাশায় রক্ত হিমশীতল হোক, তবু নির্দিষ্ট সীমানা অতিক্রম করার সাহস কার হয়?
~ নাটক, তরঙ্গভঙ্গ
১২#
ভাগ্যকে ঘষে সাফ করার উপায় নেই।
১৩#
“মানুষের জীবনটা অতি ভঙ্গুর, একটুতেও মটকায়”।
~ উপন্যাস, চাঁদের অমাবস্যা
১৪#
সমাজ যাকেই ক্ষমা করুক না কেন, বিরুদ্ধ ইচ্ছার দ্বারা চালিত, দো-মনা খুশির বশের মানুষের আয়োজন ভঙ্গ করা নারীকে ক্ষমা করে না। এ সমাজে কোনো মেয়ে আত্নহত্যা করবে বলে একবার ঘোষণা করে সে মনের ভয়ে আবার বিপরীত কথা বলতে পারে না। সামাজই আত্নহত্যার মাল-মশলা জুগিয়ে দেবে, সর্বোতভাবে সাহায্য করবে যাতে তার নিয়ত হাসিল হয়, কিন্তু ফাঁকি দিয়ে তাকে আবার বাচঁতে দিবে না। মেয়ে লোকের মস্করা সহ্য করবে অতটা দূর্বল নয় সমাজ।
~ উপন্যাস , লালসালু
১৫#
“একটি কারনেই মানুষ মানুষের অন্তিম ব্যবস্থা না করে পারে না। সে কারন প্রেম, ভালবাসা”।
~ উপন্যাস, চাঁদের অমাবস্যা
১৬#
উঠানের শেষে তুলসী গাছটা আবার শুকিয়ে উঠেছে। তার পাতায় খয়েরি রং। সেদিন পুলিশ আসার পর থেকে। কেউ তার গোড়ায় পানি দেয়নি। সেদিন থেকে গৃহকর্তীর ছলছল চোখের কথাও আর কারও মনে পড়েনি। কেন পড়েনি সে কথা তুলসী গাছের জানবার কথা নয়, মানুষেরই জানবার কথা।
~ ছোটগল্প, তুলসী
১৭#
যে-সমস্যা সর্বব্যাপী তার বিষয়ে উদাসীনতাই হয়তো বুদ্ধিসঙ্গত।
~ উপন্যাস, কাঁদো নদী কাঁদো
১৮#
মান-ইজ্জত কীভাবে যায় সে-বিষয়ে প্রত্যেক মানুষ তার নিজস্ব মতামত পোষণ করে থাকে। তহবিল তছরুপ করেছে— এমন অভিযোগে যে-মানুষ বিন্দুমাত্র বিচলিত হয় না, সে আবার অধার্মিকতার অভিযোগে গভীরভাবে আহত হয়। যে-মানুষ চরিত্রহীনতার অপবাদে অবিচল থাকে, সেই আবার মিথ্যাবাদের অভিযোগে ক্রোধে অপমানে আত্মহারা হয়ে পড়ে।
~ উপন্যাস, কাঁদো নদী কাঁদো
১৯#
“যে বৃক্ষটি শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে, সত্য রুপ ধারন করেছিল, মুল নেই বলে সে বৃক্ষটি নিমেষেই ধরাশায়ী হয়”।
~ উপন্যাস, চাঁদের অমাবস্যা
২০#
মানুষের রসনা বড় ভয়ানক বস্তু; সে-রসনা বিষাক্ত সাপের রসনার চেয়েও ভয়ঙ্কর হতে পারে। প্রক্ষিপ্ত সে-রসনা তার বিষে পরিবারকে-পরিবার ধ্বংস করে দিতে পারে, নিমেষে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে সমগ্র পৃথিবীতে।
~ উপন্যাস, লালসালু
২১#
আমৃত্যু শোকাকুল অনুতাপ।
~ উপন্যাস, চাঁদের অমাবস্যা
২২#
“সত্যই সত্যকে আকর্ষন করে”।
~ উপন্যাস, চাঁদের অমাবস্যা
২৩#
বিবি পৃথিবী টা আশ্চর্য জিনিস মাঝে মাঝে মিথ্যা না বললেও নয়’।
২৪#
মন্দ ভাগ্যের কথা মানা যায়, কিন্তু সহ্য করা যায় না।
~ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
২৫#
মানুষ বড়ই অদ্ভুত। নিজেই নিজের বন্দি হয়ে থাকে। অথচ মুক্তির জন্য ব্যাকুল।
~ ছোটগল্প, তুলসী

Mehadi Bhuiyan holds a BA in English Literature from the National University of Bangladesh. His academic interests include literature, history, and cultural studies, with a particular focus on modern and contemporary writing. He works as a freelance writer, researcher, and editor, specializing in literary analysis, historical narratives, and cultural topics.