You are currently viewing মাশরাফি বিন মর্তুজা এর উক্তি : ২৫ টি চমৎকার উক্তি

মাশরাফি বিন মর্তুজা এর উক্তি : ২৫ টি চমৎকার উক্তি

মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা (জন্ম ৫ অক্টোবর ১৯৮৩) হলেন একজন বাংলাদেশী প্রাক্তন ক্রিকেটার ও রাজনীতিবিদ, যিনি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক টেস্ট, ওয়ানডেতে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম বোলিং স্তম্ভ ও একদিনের আন্তর্জাতিকে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার ডাক নাম কৌশিক। তিনি একজন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তার বোলিংয়ের ধরণ ডানহাতি পেস বোলার। বাংলাদেশ জাতীয় দল ছাড়াও তিনি এশিয়ান একাদশের একদিনের আন্তর্জাতিক দলে খেলেছেন। ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় জয়ে মর্তুজা ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ৩৮ রানে ৪ উইকেট দখল করেন। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি খেলায় নিউজিল্যান্ডের সাথে বিজয়েও মাশরাফির ভূমিকা রয়েছে।

মাশরাফি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গতির বোলার এবং সমর্থকদের কাছে “নড়াইল এক্সপ্রেস” নামে পরিচিত। মাশরাফি একজন মারকুটে ব্যাটসম্যান। ভারতের বিপক্ষে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় তিনি পরপর চার বলে ছক্কা পেটান। সেই ওভার থেকে তিনি ২৬ রান সংগ্রহ করেন যা কোন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানের জন্য এক ওভারে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে ১১ বার চোটের কারণে দলের বাইরে যেতে হয়েছে মাশরাফিকে। চোটই তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল ২০১১ সালের দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ। চোটের কারণে অপারেশন টেবিলে তাকে যেতে হয়েছে সাতবার। এরপরও দেশকে ভালোবেসে খেলে গেছেন ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম নির্ভীক এই ক্রিকেটার।

এছাড়াও মাশরাফি নড়াইল-২ আসনের সাবেক সাংসদ ও প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় জাতীয় সংসদের হুইপ ছিলেন; ২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের পর রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান। ইএসপিএন কর্তৃক পরিচালিত “ওয়ার্ল্ড ফেইম ১০০” এ বিশ্বের সেরা ১০০ জন ক্রীড়াবিদের মধ্যে অন্যতম। অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে ১০০টি উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে তিনি ৫ম বোলার।

মুক্তিযোদ্ধারা যদি পায়ে গুলি নিয়ে যুদ্ধ করতে পারেন, তাহলে আমি কেন সামান্য সার্জারি নিয়ে বোলিং করতে পারবো না?

রান না করলে মরবি না। ব্যাটিং কর। এটা জীবন না, খেলা।

আজ কিছু কথা পরিষ্কার করে বলি। আমরা সবাইকে বিনোদন দেই। আমরা প্রকৃত অর্থে বীর নই। আমাদের সত্যিকার বীর হচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধারা। আমরা দেশের জন্য কোন কিছু বিসর্জন দিই নি, মুক্তিযোদ্ধারা দিয়েছেন। আমাকে ভূল বুঝবেননা—ক্রিকেট কিন্তু জীবনের সবকিছু নয়। আমরা শুধুমাত্র চেষ্টা করি আমাদের দেশের মানুষকে খুশী করতে।

আমার ২০০ উইকেট নিয়ে আমি যদি আরও ১০০ টি ম্যাচ খেলতে পারতাম তাহলে আমি আরও গুরুত্বপূর্ণ বোলার হতে পারতাম। সম্ভবত আমাকে নিয়ে সবাই অনেক গর্বিত হত যদি আমি ৩০০ অথবা ৩৫০ উইকেট শিকারী কোন বোলার হতাম। আমি বিশ্বাস করি আমার দীর্ঘ সময় ধরে খেলার সামর্থ আছে, কিন্তু যদিও আমি বাংলাদেশের হয়ে ১৪ বছর ধরে খেলছি, তবুও আমি তিন থেকে চার বছর হারিয়েছি ইনজুরির কারণে।

আমি জানি না আমি কতদিন এইদলের সাথে আমার খেলা চালিয়ে যেতে পারবো। তবে আমি আপনাকে নিশ্চয়তা দিতে পারি—যখন আমি বুঝতে পারবো আমার দক্ষতা এবং ইচ্ছাশক্তি কমে আসছে, তখন আমি নিজে থেকেই সরে যাবো।

আমি বলি, এই যারা ক্রিকেটে দেশপ্রেম দেশপ্রেম বলে চিৎকার করে, এরা সবাই যদি একদিন রাস্তায় কলার খোসা ফেলা বন্ধ করত, একটা দিন রাস্তায় থুতু না ফেলত বা একটা দিন ট্রাফিক আইন মানত, দেশ বদলে যেত। এই এনার্জি ক্রিকেটের পেছনে ব্যয় না করে নিজের কাজটা যদি সততার সঙ্গে একটা দিনও সবাই মানে, সেটাই হয় দেশপ্রেম দেখানো।

শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাটা ফুল দিয়ে যেন শেষ না হয়ে যায়, শ্রদ্ধাটা মনের ভেতরে রাখা জরুরি। ইংরেজি যা বলতে হয় সেটা প্রয়োজনের খাতিরেই বলতে হয়। এরমানে এই না যে বেশি ইংরেজি বলাটা আমার জন্য ক্রেডিট।

ক্রিকেটাররা নন, চিকিৎসক-শ্রমিক-কৃষকরাই হচ্ছেন প্রকৃত তারকা।

তামিম যখন ব্রোকেন ফিঙ্গার নিয়ে নেমেছিল তখনই আমি এশিয়া কাপ জিতে নিয়েছি।

১০

ব্যাটসম্যানরা শট খেলবেই কিন্তু আপনি যদি তাদেরকে স্ট্রাইক রোটেট করতে না দেন তাহলে সেটি তাদের মধ্যে একটি চাপ তৈরী করবে। যখন তারা স্ট্রইক রোটেট করতে পারবে না তখন তারা বাধ্য হবে রিস্কি শট খেলতে। তাই আমি সবসময় চেষ্টা করি ব্যাটসম্যানদের একধাপ উপরে চিন্তা করতে।

১১

পা দুটো বেইমানি করলেও ঘাড়ের রগ বাঁকা করে চ্যালেঞ্জ করবো নিজেকেই। শুধু একটা বল করতে চাই বাংলাদেশের হয়ে।

১২

আমি ক্রিকেটার, একটা জীবন কি বাঁচাতে পারি? একজন ডাক্তার পারেন। কই, দেশের সবচেয়ে ভালো ডাক্তারের নামে কেউ তো একটা হাততালি দেয় না! তাদের নিয়ে মিথ তৈরি করুন, তারা আরও পাঁচজনের জীবন বাঁচাবেন। তারাই তারকা। তারকা হলেন লেবাররা, দেশ গড়ে ফেলছেন। ক্রিকেট দিয়ে আমরা কি বানাতে পারছি? একটা ইটও কি ক্রিকেট দিয়ে বানানো যায়? একটা ধান জন্মায় ক্রিকেট মাঠে? যারা ইট দিয়ে দালান বানায়, কারখানায় ওটা-ওটা বানায় বা ক্ষেতে ধান জন্মায়, তারকা হলেন তারা।

১৩

আমরা নয় থেকে আটে এসেছি এবং পরে আট থেকে সাতে উঠেছি এবং আমরা আরও উপরে উঠতে পারি। অন্ততপক্ষে আমাদের উচিৎ এই স্থানটি ঠিকভাবে ধরে রেখে সঠিক সময়ে আরও এগিয়ে যাওয়া। ক্রিকেট উত্থান পতনের খেলা, কিন্তু মূল জিনিষটি হচ্ছে ধৈর্যের সাথে আপনার নিজের জায়গাটি ধরে রাখা।

১৪

আমি মাশরাফিও যদি পারফর্ম না করি, তাহলে সরে যেতে হবে। দেশের হয়ে খেলতে নামলে, দেশের পতাকাকে প্রতিনিধিত্ব করলে জবাবদিহিতা থাকতেই হবে। ১৬ কোটি মানুষ খেলা দেখছে, ১৬ কোটি মানুষেরই জাজমেন্ট আছে। সেটাকে মূল্য দিতে হবেই।

১৫

বাংলাদেশের হয়ে টানা ১০০ ম্যাচ জিতলেও, তার পরের ম্যাচের জন্য জেতার তাগিদ একই থাকবে। তৃতীয় ম্যাচে তাই ছাড় দেয়ার প্রশ্নই উঠে না।

১৬

খেলা কখনও একটা দেশের প্রধান আলোচনায় পরিণত হতে পারে না। দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আছে যা সমাধান বাকি। সেখানে ক্রিকেট নিয়ে পুরো জাতি, রাষ্ট্র এভাবে এনগেজ হতে পারে না। আজকে আমাদের সবচেয়ে বড় তারকা বানানো হচ্ছে, বীর বলা হচ্ছে, মিথ তৈরি হচ্ছে। এগুলো হলো বাস্তবতা থেকে পালানোর ব্যাপার।

১৭

দেশের তুলনায় ক্রিকেট অতি ক্ষুদ্র একটা ব্যাপার। একটা দেশের অনেক ছোট ছোট মাধ্যমের একটা হতে পারে খেলাধুলা; তার একটা অংশ ক্রিকেট। ক্রিকেট কখনও দেশপ্রেমের প্রতীক হতে পারে না। সোজা কথায়-খেলাধুলা হলো বিনোদন

১৮

মুস্তাফিজের সঙ্গে বিশ্বের কোনো বোলারের সঙ্গে তুলনা হয় না। কারণ আমি সব সময় বলেছি ও যেন অন্য গ্রহের কেউ। ওর সঙ্গে কারও তুলনা করার সুযোগ নেই।

১৯

কিছু হলেই আমরা বলি, এই ১১ জন ১৬ কোটি মানুষের প্রতিনিধি। আন্দাজে! তিন কোটি লোকও হয়ত খেলা দেখেন না। দেখলেও তাদের জীবন-মরণ খেলায় না। মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন রাজনীতিবিদেরা, তাদের স্বপ্ন ভবিষ্যত অন্য জায়গায়। এই ১১ জন মানুষের ওপর দেশের মানুষের ক্ষুধা, বেঁচে থাকা নির্ভর করে না। দেশের মানুষকে তাকিয়ে থকতে হবে একজন বিজ্ঞানী, একজন শিক্ষাবিদের দিকে।

২০

সবাই হয়তোবা নাসির কে অকেশনাল বোলার মনে করে। আমি সবসময়ই বলি আমার টিমে ‘অন অব দ্যা বেস্ট অফ স্পিনার’ হলো নাসির, বিশেষ করে ওয়ানডে ইন্টারন্যাশনাল এর জন্য। আমার হাতে একটাই অস্ত্র হলো নাসির। আমি সবসময়ই চেয়েছি নাসিরকে দিয়ে ১০ ওভার বোলিং করাতে।

২১

আহ! একটা নাভিশ্বাস ওঠা জীবন। তৃতীয় ম্যাচ শেষে আমি হঠাৎ করে অনুভব করি ঈদ চলে এসেছে এবং আমি আমার চমৎকার নিজের শহরটিতে ঈদ করতে যাচ্ছি। আমাদের প্রত্যেকেরই নিজের একটি স্বস্তির জায়গা আছে। কিছুলোক হয়তো বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে, কিন্তু আমার ক্ষেত্রে জায়গাটি আমার নিজের বাড়ি। এটি আমাকে নতুন করে পুরোনো শক্তিতে উজ্জিবিত করে।

২২

আমি কখনোই আমার জীবনে কোন কিছুর জন্য পরিকল্পনা করিনি—পরীক্ষার জন্যও না, অথবা কোন অনুষ্ঠানের কাপড় কেনার জন্যও না। আমি সবসময় শেষ মুহুর্তে যেটি সঠিক বলে মনে হয়েছে সেটি করেছি। তাই যখন আমি দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পেলাম তখন আমি সবসময় যেটি করতাম সেটিই করেছি। আমি সাফল্য, ব্যার্থতা, ভবিষ্যৎ অথবা অতিতের জন্য কখনোই চিন্তা করিনি। এগুলো নিয়ে আমি কখনোই ভাবিনি।

২৩

আমরা এই সংস্কৃতিটা গড়ে তুলতে চাই। কাউকে দলে নেওয়া হলে তাকে পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া উচিত। আর আমরা তাকেই বেশি সুযোগ দেব, যে ভালো টিমম্যান।

২৪

আমি আগেই বলেছিলাম—আমরা যদি বিশ্বকাপে ভালো করতে পারি তাহলে এটি আমাদের পরবর্তী সিরিজগুলো খেলতে সাহায্য করবে, কিন্তু আমি নিজেও ভাবিনি এটি আমাদের এতদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।

২৫

যখনই আমরা হেরেছি, সব দোষ চাপানো হয়েছে আমার ঘাড়ে – আমার ব্যক্তিগত জীবন, আমার আচরণ, আমার নেতৃত্বের ধরণ এসবকেই দায়ী করা হয়েছে। মনে হয় যেন আমি একাই সবাইকে পিছন থেকে টেনে ধরে রেখেছিলাম।

Leave a Reply