বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাসের মধ্যে একটি ‘কোথাও কেউ নেই’ উপন্যাসটি। কোথাও কেউ নেই উপন্যাসটি ১৯৯০ সালে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিলো। ১৯৯২ সালে উপ্যাসটির কাহিনী অবলম্বনে ধারাবাহিকভাবে নাটক বিটিভিতে প্রকাশিত হতে থাকে। এই নাটকের মাধ্যমে বাংলা টিভি নাটক ও সাহিত্যে বাকের ভাই ও মুনা চরিত্রটি অমরত্ব লাভ করেছে। হুমায়ূন আহমেদ এর কোথাও কেউ নেই উপন্যাসের সবচেয়ে অসাধারণ সুন্দর লাইন ও সংলাপ গুলো এই লেখায় তুলে ধরেছি।
১
ভালবাসার মানুষের সাথে বিয়ে না হওয়াটাই বোধ হয় ভাল। বিয়ে হলে মানুষটা থাকে ভালবাসা থাকে না। আর যদি বিয়ে না হয় তাহলে হয়ত বা ভালবাসাটা থাকে, শুধু মানুষটাই থাকে না। মানুষ এবং ভালবাসা এই দুয়ের মধ্যে ভালবাসাই হয়ত বেশি প্রিয়।
২
যার হাসি সুন্দর তার কান্না নাকি কুশ্রী।
৩
মেয়েটি আপনার কে হয়?
- কেউ হয় না, পাড়ার মেয়ে।
- Do you love her?
জবাব দিন, চুপ করে থাকবেন না।
আপনি কি মেয়েটাকে ভালোবাসেন? - আমি স্যার.. রাস্তার ছেলে।
আমার ভালোবাসায় কিচ্ছু যায় আসেনা।
৪
কিছু কিছু ঘটনা মানুষ দ্রুত ভুলে যেতে চেষ্টা করে। সেই চেষ্টা সচেতনভাবেই করা হয় এবং সে কারণেই সে লজ্জিত বোধ করে। মৃত্যু এমন একটি ঘটনা। অতি প্রিয়জনের মৃত্যুও আমরা ভুলে যাবার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করি। আমাদের চলা-ফেরা, আচার-আচরণে মনে হয় না সেই প্রিয়জন কোনকালে আমাদের মধ্যে ছিল। কেন এ রকম করা হয়? আমাদের নিজেদের ব্যবহারে আমরা নিজেরাই অবশ্য লজ্জিত হই, যার জন্য প্রিয়জনটির একটি বড় ছবি যত্ন করে দেয়ালে টাঙানো হয় এবং একদিন কেউ খুব রাগারাগি করে- ফ্রেমে মাকড়শার জাল, কেউ দেখছেনা, ব্যাপারটা কি?
৫
দুঃখ কষ্ট সংসারে থাকেই। দুঃখ কষ্ট নিয়েই বাঁচতে হয়। জন্ম নিলেই মৃত্যু লেখা হয়ে যায়।
৬
আমরা সব সময় ভুল মানুষকে ভালোবাসি।
৭
মামি: আমি একটা মানুষ! এ বাড়িতে আমি কোন মানুষ না রে। আমি হলাম চেয়ার টেবিলের মত, এক কোনায় পড়ে আছি।
৮
একটি বিবাহিত মেয়ের জীবন মানেই কি একের পর এক গ্লানিময় ক্লান্তির দীর্ঘ রজনী?
৯
আচ্ছা বাকের ভাই! পৃথিবীতে অনেক গানই তো আছে। কিন্তু “হাওয়ামে উড়তা যায়ে” এই গানটার মধ্যে কি পেলেন বলুন তো?
-পৃথিবীতে অনেক পুরুষমানুষ আছে। কিন্তু তোমার পছন্দের মানুষতো একটাই। ঠিক না?
১০
বাকের ভাই আপনি একজন চমৎকার মানুষ। আমার হয়তো আপনাকেই ভালোবাসা উচিত ছিল, কিন্তু আমরা সবসময় ভুল মানুষকে ভালবাসি।
১১
পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ সম্ভবত কষ্ট পাবার জন্যই জন্মায়। টাকা পয়সার কষ্ট নয় – মানসিক কষ্ট।
১২
পৃথিবীতে অনেক রহস্য আছে। সেই সব রহস্যের একটা হচ্ছে মানবিক সম্পর্ক। এর কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই। হঠাৎ যেকোনো একজন মানুষের জন্যে হৃদয় মমতায় উদ্বেলিত হতে পারে।
১৩
বিভিন্ন পরিবেশে মানুষের বিভিন্ন পরিচয় পাওয়া যায়।
১৪
মানুষের জন্মই হইল অপাত্রে ভালোবাসা দান করার জন্য। যাদের কে ভালোবাসার কোন যোগ্যতা নাই তাদেরকেই মানুষ ভালোবাসে।
১৫
যাকে রাখতে চেয়েছি সে থাকেনি, যে থাকতে চেয়েছে তাকে রাখিনি, অবশেষে কোথাও কেউ নেই!
১৫
কত দ্রুত একজন মানুষ বদলায়। কত ভাবেই না বদলায়।
১৬
বেশির ভাগ মানুষই হলো বোকা – এরা গুছিয়ে একটা চিঠি পর্যন্ত লিখতে পারে না।
১৭
জানেন বাকের ভাই এ পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ শুধু কষ্ট পাওয়ার জন্যই জন্মায়। আমাকে দেখুন, আমি কখনো কারো কোন ক্ষতি করিনি।অথচ দেখুন আমি কষ্ট পাচ্ছি। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আমার বাকি জিবনটা কষ্টেই কেটে যাবে।
আপনি কাঁদছেন নাকি বাকের ভাই?
না মুনা,আমার চোখে কি জেনো পড়েছে।
আপনি একজন চমৎকার মানুষ, মাঝে মাঝে মনে হয় আমার বুঝি আপনাকে ভালোবাসা উচিত ছিলো। আমরা সব সময় ভুল মানুষকে ভালোবাসি বাকের ভাই ……!
১৮
পৃথিবীতে অসংখ্য খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু একজনও খারাপ বাবা নেই।
১৯
মানুষ জন্মায় এমন মানুষদের ভালোবাসতে, যারা সেই ভালোবাসার যোগ্য নয়। প্রকৃত অর্থে, ভালোবাসা সবচেয়ে বেশি অপাত্রেই বিলিয়ে দেওয়া হয়।
২০
কিছু কিছু ঘটনা মানুষ দ্রুত ভুলে যেতে চেষ্টা করে। সেই চেষ্টা সচেতনভাবেই করা হয় এবং সে কারণেই সে লজ্জিত বোধ করে। মৃত্যু এমন একটি ঘটনা। অতি প্রিয়জনের মৃত্যুও আমরা ভুলে যাবার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করি। আমাদের চলা-ফেরা, আচার-আচরণে মনে হয় না সেই প্রিয়জন কোনকালে আমাদের মধ্যে ছিল। কেন এ রকম করা হয়? আমাদের নিজেদের ব্যবহারে আমরা নিজেরাই অবশ্য লজ্জিত হই, যার জন্য প্রিয়জনটির একটি বড় ছবি যত্ন করে দেয়ালে টাঙানো হয় এবং একদিন কেউ খুব রাগারাগি করে- ফ্রেমে মাকড়শার জাল, কেউ দেখছেনা, ব্যাপারটা কি?
