ধর্ম নিয়ে ভাসানীর উক্তি : মাওলানা ভাসানীর ৮ টি ধর্ম সম্পর্কিত উক্তি

ধর্ম নিয়ে ভাসানীর উক্তি : মাওলানা ভাসানীর ৮ টি ধর্ম সম্পর্কিত উক্তি

আবদুল হামিদ খান ভাসানী সাধারণ মানুষদের কাছে মাওলানা ভাসানী নামেই সমধিক পরিচিত, তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম তৃণমূল রাজনীতিবিদ ও গণআন্দোলনের নেতা। মাওলানা ভাসানী জীবদ্দশায় ১৯৪৭-এ সৃষ্ট পাকিস্তান ও ১৯৭১-এ প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছে “মজলুম জননেতা” হিসাবে সমধিক পরিচিত।

১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী প্রধান নেতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায়ও তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময়ই তিনি চীনের মাওপন্থী কম্যুনিস্ট তথা বামধারার রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তাছাড়াও উপমহাদেশে কম্যুনিস্ট ধারার রাজনীতির প্রসারে তার বিশেষ অবদান ছিল। এজন্য তার অনুসারীরা তাকে “লাল মওলানা” নামেও ডাকতেন। তিনি কৃষকদের জন্য পূর্ব পাকিস্তান কৃষক পার্টি করার জন্য সারাদেশব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

নীল নদের পানি যেমন নীল নয়, তেমনি জামায়াতে ইসলাম মানেই ইসলাম নয়।

ইসলাম সকল মানুষকে,সে মুসলমান হউক বা না হউক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা দান করিয়াছে।

যেসব মুসলমান হিন্দুদের বিধর্মী মনে করে, তাদের ক্ষতি করতে চায়, আমি তাদের বলি তোমরা কারা? খুব বেশি হইলে চার-পাঁচ পুরুষ আগে তোমরা কারা ছিলা? তোমাদের বাপ-দাদার বাপ-দাদারা ছিলেন হয় হিন্দু নয় নমঃশূদ্র। এ দেশের হিন্দু আর মুসলমানের একই রক্ত। কতজন আরব ইরান-আফগানিস্তান হইতে আসিয়াছে? পাঁচ পুরুষ আগে যারা ছিলো তোমাদের পূর্বপুরুষ আজ তাদের গায়ে হাত তুলতে তোমাদের বুক কাঁপে না? তোমরা কি মানুষ না পশু?

ধর্মের সঙ্গে ভাষার কোন সম্পর্ক নাই। ধর্ম এক জিনিস আর ভাষা আর একটি জিনিস। একটির সঙ্গে অন্যটিকে যারা মেশায় তারা অসৎ ও মতলববাজ। উর্দুর সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক কী? আরব দেশের মানুষ উর্দুতে কথা বলে নাকি? ইরানের মানুষ কি উর্দু জানে? উর্দু কি দুনিয়ার সব মুসলমানের ভাষা? বাংলাকে যারা পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা চায় তারা পাকিস্তানের দুশমন নয়। যারা চায় না তারাই পাকিস্তানের দুশমন। পাকিস্তানের যদি ক্ষতি হয় তাহলে বাংলা-বিরোধীদের দ্বারাই হবে।

শুনো, ধর্ম আর দেশ মিলাইতে যায়ো না। পরে ফুলের নাম কী দিবা, ফাতেমা-চূড়া?

হিন্দুর ক্ষুধা, মুসলমানের ক্ষুধা, বৌদ্ধের ক্ষুধা, খ্রিষ্টানের ক্ষুধা একই রকম। শোষক ও জালেমের কোনো ধর্ম নেই। মজলুমের কোনো ধর্ম নেই। জালেম হিন্দু হোক আর মুসলমান হোক, দেশি হোক আর বিদেশি হোক, কালো চামড়ার হোক আর সাদা চামড়ার হোক-সব সমান।

ধর্মীয় শিক্ষার নামে জীবনের সাথে সম্পর্করহিত তথাকথিত মাদ্রাসা শিক্ষা প্রবর্তন করিয়া সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় সুকৌশলে আমাদের ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মানো হইয়াছে।

আমি দেখিতে পাইতেছি নানা মতবাদ নানা পন্থা মানুষকে নতুন নতুন শ্রেণীতে বিভক্ত করিয়া ফেলিয়াছে। শ্রেণীহীন সমাজের কথা ভাবিতে গিয়া মানুষ আত্মকেন্দ্রিক ও হিংস্র হইয়া পড়িয়াছে। আমার বিশ্বাস একমাত্র রবুবিয়াতের দর্শনই জাতি,ধর্ম মতবাদ নির্বিশেষে শান্তি দিতে পারে। সবার লক্ষ্য যদি স্রষ্টা হয়, সকল সমস্যার সমাধানকল্পে যদি স্রষ্টার নিয়ম প্রবর্তিত হয় তবে হানাহানির অবকাশ কোথায়? স্রষ্টার নিকট তো সবাই সমান। তিনি একই বিধানে সকলের নিকট দাতা,দয়াময়,প্রেরণাদানকারী এক কথায় সকল চেতনার উৎস।

Leave a Reply