You are currently viewing ভূতের সাথে বিয়ে

ভূতের সাথে বিয়ে

পূর্ব কেনিয়ার কাম্বা সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে, বহু বছর ধরে ভূতের বিবাহের প্রচলন ছিল। এই প্রথার নিয়ম ছিল সম্প্রতি বা মাত্রই মৃত্যু হওয়া পুরুষ ব্যাক্তির সাথে মহিলাদের বিয়ে দেয়া, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাধ্য করা হতো বিয়ে করতে।

বহুকাল ধরে এই সম্প্রদায়ের মানুষজন এই ঐতিহ্যকে লালন করেছিল কারণ তারা বিশ্বাস করেছিল যে এটি ‘জীবনের শৃঙ্খল’ রক্ষা করার একটি উপায়।

জীবনের শৃঙ্খল কে এতোটা বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল যে যখনই কারো ছেলে মারা যেতো তখন তার অনুপস্থিতিতে (মৃতদেহ মাটি দেওয়া হয়ে যাওয়ার পর) বিবাহের আয়োজন করা হতো। এটি করার সময়, তার পরিবারের সদস্যরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতো যে এর মাধ্যমে তাদের মৃত ছেলের উত্তরাধিকার রক্ষা করা হচ্ছে। আর তাদের ছেলে আত্মা হিসেবে তাদেরই আশেপাশে বেঁচে আছেন।

স্থানীয় কাম্বা ভাষায়, এই উদ্ভট ধরণের বিবাহকে ‘কুঙ্গামিয়া ইসিতোয়া’ বলা হয়, যার অর্থ ‘মৃত ব্যক্তির নাম সংরক্ষণ করা’।

যেসব মেয়েদের এই ভূতুড়ে বিয়ে হতো তাদেরকে বিবাহিত নারী হিসেবে দেখা হতো, এদের বেশিরভাগই তাদের জীবনে নিজেদের স্বামীকে কখনো চোখের দেখা দেখতে পাওয়ার সুযোগ পায় নি।

এই ভূতের বিয়ে গুলো ধনী পরিবার গুলোর মধ্যে প্রচলন ছিলো সবচেয়ে বেশি। অর্থ বিত্তের ক্ষমতায় তারা মেয়ে ও তার পরিবার কে এই বিয়েতে রাজি করাতে সক্ষম হতো।

বিয়তে মেয়েকে রাজী করতে সেই পরিবার অনেক যৌতুক প্রদান করতো। বিয়ের পর তারা সাধারণ কণের মতোই স্বামীর বাড়ি যেতো এবং সেখানেই বসবাস করতো। তাদের কেউ পরবর্তীতে বিয়ের প্রস্তাব ও দিতো না যেহেতু তারা বিবাহিত।

নববধূর সন্তান জন্মদানের জন্য ছেলের পরিবার শুক্রাণুর জন্য একজন পুরুষ লোক ভাড়া করতো।

স্কুপার ওয়েবসাইটের একটি রিপোর্টের তথ্য মতেঃ-

“মেয়ের পরিবারকে যৌতুক প্রদানের মতোই স্বাভাবিক পদ্ধতিকে সম্মান করা হয় এবং একজন শুক্রাণু দাতাকে গোপনে মহিলার সাথে সন্তান ধারণের জন্য নিয়োগ করা হয়। এবং তারা মনে করে সেই নববধূর গর্ভে জন্মানো নবজাতক শিশুটি তাদের ছেলেরই উত্তরাধিকার।”

কেমন ছিল ভূতের বউয়ের জীবন?

প্রথাটি যথেষ্ট পুরনো এবং বর্তমানে এই ধরনের প্রথার প্রচলন আর নেই, তবে প্রমাণ রয়েছে যে কিছু মহিলা মৃত স্বামীদের বিয়ে করেছিলেন যাদের তারা কখনও দেখেনি। এই নারীদের বলা হয় ভূতের স্ত্রী।

আরো পড়ুন:  পৃথিবীর বিখ্যাত ৪ টি কাকতালীয় ঘটনা

বিয়ের পরে, এই মহিলারা তাদের মৃত স্বামীর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হওয়ার অধিকার রাখেন। এর কারণ ছিল ছেলেদের পরিবারের সদস্যরা মনে করতো, স্ত্রী হিসেবে সম্পত্তির অংশিদার হওয়া এবং সম্পত্তির অংশ দাবি করার পূর্ণ ক্ষমতা তাদের আছে।

কেনিয়ার কিছু লোক দাবি করেন এসব সংস্কৃতি বা প্রথা কখনোই প্রচলন সেখানে ছিলো না। আবার অনেক বিধবা নারী দাবী করেছেন তারা মৃত লোককে বিয়ে করেছেন।

Mehadi Bhuiyan

Mehadi Bhuiyan holds a BA in English Literature from the National University of Bangladesh. His academic interests include literature, history, and cultural studies, with a particular focus on modern and contemporary writing. He works as a freelance writer, researcher, and editor, specializing in literary analysis, historical narratives, and cultural topics.

Leave a Reply