You are currently viewing লেক নেট্রোনের অজানা কথা

লেক নেট্রোনের অজানা কথা

কেন লেক নেট্রোনে কোনো প্রাণি পড়লে তা পাথরের মূর্তিতে পরিনত হয়?

২০১১ সাল, ব্রিটিশ ফোটোগ্রাফার নিক ব্র্যান্ড ছবি তুলছিলেন পূর্ব আফ্রিকার কেনিয়ার সীমান্তের পাশে। এক সময় তিনি প্রবেশ করে তানজানিয়ার আরুশা অঞ্চলে। তিনি একটি হৃদ দেখতে পান যার নাম ন্যাট্রন হৃদ। এই হৃদটা অন্যান্য হৃদ থেকে সম্পুর্ন আলাদা। কিন্তু বিস্ময়ের এখানেই শেষ নই। কেননা, এর তীরের দিকে অনেক পশু পাখির মৃত দেহ এবং সেগুলো প্রাকৃতিক উপায়ে মমি করে রাখা। মিশরীয়রা যেমন করে মমী করতো।

লেক নেট্রোন এর অবস্থান আফ্রিকার তানজানিয়াতে। জায়গাটা খুবই দুর্গম প্রান্তে হওয়ায়, এতো কাল লেক নেট্রোনটা মানুষের অগোচরেই ছিল। ২০১১ সালে ব্রিটিশ ফটোগ্রাফার নিক ব্র্যান্ড পৃথিবির সামনে আনে লেক নেট্রোন এর রহস্য। যা সবাইকে হতবাক করে দেয়।

লেকটির তলদেশ তৈরি হয় ২৬ লক্ষ বছর আগে প্লাইসটোসিন যুগে।

লেকটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম কার্বনেট এবং সোডা। যার কারনে লেকটি অত্যাধিক ক্ষারীয় ( ক্ষারীয় মাত্রা গড়ে ১০.৫ পিএইচ)। যা কোনো শরির কে পুড়িয়ে ফেলতে সক্ষম। মানুষের বসবাস নেই বললেই চলে। তবে প্রচুর পাখি ও অন্যান্য প্রাণি দেখতে পাওয়া যায়। পাখি বা অন্যান্য প্রাণি কোনো ক্রমে পানিতে পড়ে গেলে, পানির অত্যাধিক ক্ষারীয়তার জন্য তাদের শরির পুড়ে যায়। এবং পানিতে থাকা সোডা সময়ের সাথে সাথে জমে শক্ত হয়ে যায়। যার ফলে ওই প্রাণিটি মমিতে পরিনত হয়। ঠিক যেমন পক্রিয়ায় মমি করা হতো মিশরীদের।

সোডিয়াম ও পটাশিয়াম কার্বনেটের জন্য লেকটিতে সায়ানোব্যাকটেরিয়া জম্মায়। যার ফলে লেকটির পানি দেখতে রক্তিম। তাছারাও লেকটিতে এক প্রকার তেলাপিয়া মাছও দেখা যায়।

বছরের অনেকটা সময়ে লেকটিতে প্রজননের জন্য ফ্লেমিঙ্গ পাখির দেখা পাওয়া যায়। যা সংখ্যার দিক দিয়ে কয়েক লাখের উপর। কিন্তু ঔ পাখিদের কোনো ক্ষতি হয় না। বিজ্ঞানীদের ধারনা, ফ্লেমিঙ্গ পাখিদের পায়ের কিছু অংশ তাদের প্রজননের সুবিধার জন্য এমন ভাবে বিবর্তন হয়েছে, যার জন্য লেকটির কঠিন ক্ষারকীয় পরিবেশে তারা স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারে।

২০১৩ সালে নিক ব্র্যান্ড লেক নেট্রোন সম্পর্কে Across the Ravaged Land নামে একটি বইও লেখেন।

লেখকঃ- মোঃ রাকিবুল ইসলাম

Rakibul

Silence is the language of god, all else is poor translation. ~Rumi